নেতাজীর মৃত্যুর দিবস পালন--- নিন্দায় মুখর বাঙালী ছাত্রযুব সমাজ

সংবাদদাতা
নিজস্ব সংবাদদাতা
সময়

নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু সম্পর্কে উদাসীনতার নজির পূর্বতন কেন্দ্রীয় সরকার কংগ্রেস ও বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকার বিজেপির আমলে বারংবার পরিলক্ষিত হয়েছে৷ স্বাধীনতার পর থেকে চালু হওয়া বিভিন্ন তদন্ত কমিটি ও কমিশনের রিপোর্ট যেখানে ১৯৪৫ সালের ১৮ই আগষ্ট তাইহোকুর বিমান দুর্ঘটনায় নেতাজীর মৃত্যু হয়েছে কিংবা উল্লিখিত দিনে আদৌ বিমান দুর্ঘটনা হয়েছিল কিনা তা নিশ্চিত করেনি৷ সেখানে দেখা যাচ্ছে কংগ্রেস, বিজেপির মত জাতীয় স্তরের দলের নেতা-মন্ত্রীরা ১৮ই আগষ্টকেই নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর মৃত্যু দিবস হিসেবে স্মরণ করেন৷ এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছে বাঙালী ছাত্র সমাজ৷

সংঘটনের কেন্দ্রীয় সচিব তপোময় বিশ্বাস এক বিবৃতিতে বলেন, দেখলাম গতকাল মোদী সরকারের রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব, বিজেপি নেতা রমেশ পোখরিয়াল নিশঙ্ক থেকে শুরু করে বিভিন্ন নেতা, কংগ্রেস দল তারা ১৮ অগাষ্টকে নেতাজীর মৃত্যুবার্ষিকী হিসেবে নেতাজী কে স্মরণ করছেন৷ তথ্য-প্রমাণ ছাড়া প্রতিবছরই তারা এই ১৮ই অগাষ্টকে নেতাজীর মৃত্যু দিবস হিসেবে স্মরণ করে আসছেন, যা একেবারেই অনভিপ্রেত৷ নেতাজী রহস্য নিয়ে বিভিন্ন তদন্ত কমিটি বসেছে, কমিশন গঠিত হয়েছে কিন্তু কেউই নির্দিষ্ট করতে পারেনি যে ১৯৪৫ সালের ১৮ই অগাষ্ট তাইহোকুর বিমান দুর্ঘটনায় নেতাজীর মৃত্যু হয়েছে, এমনকি সেদিন বিমান দুর্ঘটনা হয়েছিল কিনা সেই নিয়েও সন্দেহের যথেষ্ট অবকাশ আছে৷ সেখানে দাঁড়িয়ে মনগড়া ভাবে ১৮ই আগষ্ট নেতাজীর মৃত্যুদিবস পালন করে দেশবাসী কে ভুল বার্র্ত দেওয়া ‘বাঙালী ছাত্র সমাজ’ মানবে না৷

তপোময় বিশ্বাস আরো বলেন, স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস থেকে এটা পরিষ্কার আর.এস.এস তথা বিজেপি নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুকে আদর্শগত বা আপোষহীন মনোভাবের কারণেই হোক কোন দিনই সম্মান করেনি ও করবেও না৷ মনে আছে এই বছর ২৩শে জানুয়ারি নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মদিবসে প্রধানমন্ত্রী মোদীজির সামনে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালে নেতাজীর স্মরণে ‘জয় শ্রী রাম’ ধবনি৷ প্রধানমন্ত্রী নীরব ছিলেন, ১টি শব্দও ব্যয় করেননি৷ রাজনীতি-ধর্মমত-দলের ঊর্ধে যে নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর আদর্শ তাঁর জন্মদিবস উদযাপনে দেশের সর্র্বেচ্চ ক্ষমতাসীনের উল্লাসিত ধর্মীয় স্লোগানের পরেও প্রধানমন্ত্রীর নীরবতা সেটির সমর্থনকেই স্পষ্ট করে দেয়৷ এখান থেকে পরিষ্কার হয়েছে নেতাজীকে বিজেপি-আর এস এস কোনদিনও ন্যুনতম শ্রদ্ধা-সম্মান করেনি৷ নেতাজীর টুপি পরে কিংবা টুইট করা এসব নিছক ছেলেভুলানো কাণ্ড কলাপ ছাড়া কিছুই নয়৷ প্রমাণ ছাড়া, পরিকল্পিত মনগড়া ১৮ অগাষ্ট দিনটিকে নেতাজীর মৃত্যু দিবস হিসেবে চিহ্ণিত করার অপচেষ্টার বিরুদ্ধে বাঙলার সর্বস্তরের মানুষ তথা সমগ্র দেশবাসীকে সরব হয়ে ওই অপচেষ্টা রুখতে আহ্বান জানিয়েছেন তিনি৷

এছাড়াও দাবী করেন---১) নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু সংক্রান্ত গোপন ফাইলগুলো জন সম্মুখে প্রকাশ করতে হবে৷ ২) নেতাজীর জন্মদিবসকে দেশপ্রেম দিবস ও জাতীয় ছুটির দিন ঘোষণা করতে হবে৷ (৩) নেতাজী রচিত ‘তরুণের স্বপ্ণ’ পুস্তককে পাঠ্যসূচির অন্তর্ভুক্ত করতে হবে৷ (৪) বাঙালী রেজিমেন্ট ঘটন করতে হবে৷