পারথ্ মানে পেস বোলারদের কাছে স্বর্গ৷ আর ব্যাটসম্যানদের কাছে চরম পরীক্ষা৷ এত প্রাণবন্ত পিচ বিশ্বের আর কোথাও নেই৷ এখানে একটা সময়ে বল করতেন ডেনিস লিলি ও জেফ থমসন আর গ্যালারি থেকে উৎসাহী জনতা তাঁদের তাতিয়ে তুলত যাতে ডেনিস ললি-থম আরও বেশি করে ব্যাটসম্যানের মাথা লক্ষ করে বাউন্সার মারেন৷
ভারতীয় দলের অন্দর মহলে অবশ্য পারথের নতুন মাঠ নিয়ে মাথা খারাপ করার ব্যস্ততা নেই৷ প্রাণবন্ত পিচের উদাহরণ তাঁদের কাছেই রয়েছে৷ জোহানেসবার্গে শুধু প্রাণবন্ত নয়, বিপজ্জনক পিচ বানিয়ে ৩-০ হোয়াইট ওয়াশের লক্ষ্যে নেমেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা৷ পিচ ব্যুমেরাং হয়ে আফ্রিকানদেরই বিপাকে ফেলে ও তাদের হারের গ্লানি নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয়৷ মনে হচ্ছে, পারথে পিচে বল গড়ানোর আগে কোহালিদের শিবিরে সবচেয়ে বেশি উচ্চারিত হবে জোহানেশবার্গের উদাহরণ৷
প্রাণবন্ত পিচে, যেখানে বল বাড়তি গতি পাবে, বাউন্স পাবে, সিম করবে, সেখানে রোহিত শর্র্মকে টেস্টে খেলানোর পরামর্শ খুব বেশি বিশেষজ্ঞ হয়তো দেবেন না৷
কিন্তু ভারতীয় দল তবু একটি টেষ্টের ভিত্তিতেই রোহিতের উপর থেকে আস্থা সরিয়ে ফেলতে নারাজ৷ অ্যাডিলেড টেস্টে দ্বিতীয় ইনিংসে ১ রানের বেশি করতে পারেন নি রোহিত৷ তাঁর আউট হওয়ার ভঙ্গি দেখে অনেকেই ফের প্রশ্ণ তুলতে শুরু করেন, টেস্ট ক্রিকেট আদৌ রোহিতের জন্য কি না? কিন্তু প্রথম ইনিংসে কঠিন সময়ে দল যখন ৪১-৪ হয়ে গিয়েছিল, তখন যে তিনি ৩৭ রানের ইনিংস খেলে যান, তার কদর করা হচ্ছে৷ টিমের মধ্যে বলাবলি হয়েছে, এ এরকম রুদ্ধশ্বাস ম্যাচ ৩১ রানে জেতার মধ্যে রোহিতের প্রথম ইনিংসের ৩৭ মোটেও খারাপ নয়৷ তাই ইংল্যাণ্ডে রান করা হনুমা বিহারীর সম্ভবত এখনই ফেরা হচ্ছে না৷ তবে এটাও ঠিক যে, রোহিতের জন্য এই অস্ট্রেলিয়া সিরিজই এসপার-ওসপার সিরিজ হতে যাচ্ছে৷ যদি তিনি এখানে ভাল কিছু করেন, তবে টেস্টের ভাবনায় থেকে যাবেন৷ না হলে শিখর ধওয়নের মতো শুধু সাদা বলের ক্রিকেটার হয়ে থাকতে হবে৷ অস্ট্রেলিয়ার কোচ জাস্টিন ল্যাঙ্গারের মনে কোনও সংশয় নেই যে, পারথে গতি আর বাউন্স বেশি থাকবে৷ শেফিল্ড একটি ম্যাচ দেখতে নতুন স্টেডিয়ামে গিয়েছিলেন ল্যাঙ্গার৷ তাঁর অভিজ্ঞতা? ‘‘ওয়াকার মতোই বল উড়ছিল৷ আমার মনে কোন সন্দেহ নেই যে, অতিরিক্ত পেস আর বাউন্স থাকবে৷’’ নিজের পেস বিভাগকে লেলিয়ে দিয়ে ভারতীয় ব্যাটিংকে থামানোর হুঙ্কারও কার্যত দিয়ে রাখলেন তিনি৷ তবে নতুন এই স্টেডিয়ামেও অ্যাডিলেডের মতোই ‘ড্রপ-ইন’ পিচে খেলা হবে৷ অর্র্থৎ , বাইরে বানিয়ে নিয়ে এসে ব্যবহার করা হবে৷ অর্র্থৎ, বাইরে বানিয়ে নিয়ে এসে ব্যবহার করা হবে৷ অস্ট্রেলিয়া জুড়ে এখন এই ‘ড্রপ-ইন’ পিচের রমরমা৷ তবে প্রত্যেকটা শহরের পিচের আলাদা চরিত্র ধরে রাখার চেষ্টা হচ্ছে৷ সেই চেষ্টা পারথে কতটা সফল হবে, তা ১৪ তারিখের টেস্টই বলে দেবে৷ ভারত যেমন ২-০ করার লক্ষ্য নিয়ে নামবে, অস্ট্রেলিয়ার যেমন ফিরে আসার চ্যালেঞ্জ, তেমনই ডেনিস লিলির পারথের গতির গৌরব ধরে রাখার অগ্ণিপরীক্ষা৷