পদ্মাবতী সিনেমা নিয়ে যা সব ঘটনা ঘটছে তা অত্যন্ত দুঃখজনক৷ ভারতের গণতান্ত্রিক অধিকারকে কিছু কিছু আত্ম অহংকারী, নির্র্বেধ উঠতি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ক্যাডাররা এমনভাবে ব্যবহার করছে যা কহতব্য নয়৷ সম্প্রতি পদ্মাবতীকে নিয়ে যে সব ঘটনা ঘটে চলেছে সেটা বড়ই দুর্ভাগ্যের বিষয়৷ এটা যে ঐতিহাসিক ঘটনা তাও নয় ৷ এটা একটা কাল্পনিক কাহিনী৷ তাছাড়া পর্র্দয় যারা সরাসরি যুক্ত অনেক ভেবে চিন্তে তাদের কাজ করতে হয় নিছক ব্যবসার খাতিরে৷ সেন্সরবোর্ড যে সিনেমা রিলিজ করে তা খুঁটিয়ে দেখে তবেই দর্শকদের সামনে আনতে অনুমতি দেন৷ সিনেমা জগৎ স্বেচ্ছাচার চলতে পারে না৷ তবু অনেক সময় কিছু কিছু ছবি জন মনে অসন্তোষ সৃষ্টি করে ৷ কিন্তু এক্ষেত্রে যেন সেই ‘‘গাছে উঠতে না উঠতে এক কাঁদি’’! সিনেমাটা প্রকাশ হলো না তার আগেই নানা ধরণের হুমকি, চোখ উপড়ে ফেলা, নাক কাটা, মাথা কাটার দাম ঘোষণা---এসব কেমন ধরণের গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের লোকজন ও নেতাদের উক্তি ও আচরণ! সারা দেশে সভ্যতা,ভদ্রতা, সংযম বলে কি কিছুই নেই? এর পেছনে যে শাসকদলের পরোক্ষ ইনধন আছে তা পরিষ্কার৷ দেশটাকে যে এরা ঝরঝরে করে দিচ্ছে তা পরিষ্কারভাবে বোঝা যাচ্ছে ৷ তাদের এই আচরণকে ধিক্কার জানাই৷
বলতে বাধ্য হচ্ছি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী তো কোন অন্যায় কথা বলেন নি৷ তাঁর নাক কেটে নেওয়ার মতো চরম জঘন্য উক্তি একজন হরিয়ানার বিজেপি নেতা কি করে বলতে পারেন? হ্যাঁ, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী বলেন যে, এই ছবিটি এরাজ্যে দেখানো হলে তার কোন আপত্তি নেই৷ তাই ওই বিজেপি নেতার তাঁর ওপর এত ক্ষোভ যার জন্যে তিনি উক্তি করেন ‘‘পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর নাক কেটে নেবেন লক্ষ্মণের মতো’’!
শুধু তাই নয় পদ্মাবতী ছবিতে নাকি একটা গান আছে যাঁরা এই গানে অংশগ্রহণ করেছেন তাঁদের মাথা কেটে এনে দিলে তাকে ১০ কোটি টাকা পুরস্কার দেওয়া হবে বলে ঘোষণা করেন৷ অত্যন্ত দুঃখের বিষয় শিল্পীদের জীবনের কী কোন মূল্য নেই! এদের এই কার্যকলাপের জন্য কঠোর শাস্তি বিধানের প্রয়োজন ৷ কী করছে শাসকগোষ্ঠী? যে দলের লোকেরা অশালীন মন্তব্য করছে সেই দলের নেতাগণকে তো কোন প্রতিবাদ করতে দেখা যাচ্ছে না! শুধু মাত্র কেউ কেউ বলছেন এটা তাঁদের ব্যষ্টিগত মন্তব্য৷ এসব কী গণতান্ত্রিক অধিকার হতে পারে৷ তাঁরা কী ধরণের নেতা? এর উত্তর কে দেবে?
তবে আনন্দের কথা , ভারতের উপরাষ্ট্রপতি বেঙ্কাইয়া নাইডু এর তীব্র প্রতিবাদ করেছেন৷ কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের কথা হল বর্ত্তমান ভারতে অধিকাংশ রাজনৈতিক দলের সমর্থক ও নেতারা এই ধরণের অশালীন মন্তব্য করে নিজেদের প্রচারের আলোয় আনতে অভ্যস্ত৷ এটা নিয়ন্ত্রণ করা জরুরী৷ পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি দলের নেতারা তো এর কোনো প্রতিবাদ করল না! সর্বভারতীয় বিজেপি নেতারাও তো নীরব! গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ এতে ধূলায় মিশেই যাচ্ছে!