মেদিনীপুর ঃ প্রাউটিষ্ট ইয়ূনিবার্সলের উদ্যোগে গত ১৬ই ডিসেম্বর থেকে ২০শে ডিসেম্বর মেদিনীপুরে ৫দিন ব্যাপী যুগান্তকারী নোতুন সামাজিক অর্থনৈতিক দর্শন ‘প্রাউট’-এর ওপর এক প্রশিক্ষণ শিবিরের আয়োজন করা হয়৷ এই প্রশিক্ষণ শিবিরে পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা, অসম, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা, বিহার প্রভৃতি রাজ্য থেকে দুই শতাধিক প্রাউটিষ্ট যোগদান করেছিলেন
এই প্রাউট প্রশিক্ষণ শিবিরে আচার্য ধ্যানেশানন্দ অবধূত ‘বেকার সমস্যা ও প্রাউটের মাধ্যমে তার সমাধানে’র ওপর ক্লাস নেন৷ আচার্য কল্যাণেশ্বরানন্দ অবধূতের আলোচ্য বিষয় ছিল--- প্রাউট বিশ্বৈকতাবাদের প্রতিষ্ঠা চায়, আর বাঙালীস্তানের মাধ্যমে বিশ্বৈকতাবাদের প্রতিষ্ঠা সম্ভব৷ আচার্য মন্ত্রেশ্বরানন্দজী ‘প্রাউটের পঞ্চ মূল সিদ্ধান্তে’র ওপর বক্তব্য রাখেন৷
এছাড়া আচার্য রবীশানন্দ অবধূত (প্রাউটিষ্ট ইয়ূনিবার্সলের সেক্রেটারী জেনারেল), আচার্য সত্যস্বরূপানন্দ অবধূত (চিফ সেক্রেটারী), অবধূতিকা আনন্দগতিময়া আচার্যা প্রমুখও প্রাউটের বিভিন্ন দিকের ওপর আলোচনা করেন৷
১৯শে ডিসেম্বর মেদিনীপুর শহরে প্রাউটিষ্টের এক বর্র্ণঢ্য শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয় সঙ্গে সঙ্গে প্রাউটের ওপর হাজার হাজার প্রচারপত্র বিলি করা হয়৷ মিছিলটি কেরানীটোলা থেকে বের হয়ে সারা শহর পরিক্রমা করে মিছিলটি মেদিনীপুর কলেজের সামনে এসে পৌঁছে , এখানে প্রাউটের ওপর পথসভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়৷ এই পথসভায় বক্তাদের মধ্যে ছিলেন আচার্য প্রসূনানন্দ অবধূত , আচার্য বিশ্বমিত্রানন্দ অবধূত, অবধূতিকা আনন্দ গতিময়া আচার্যা, ছাত্রনেতা রাজু মান্না প্রমুখ৷
আচার্য প্রসুনানন্দ অবধূত বলেন, আজকের দুনিয়ার সবচেয়ে সম্পদ মুষ্টিমেয় পঁুজিপতিদের গোষ্ঠীর হাতে ক্রমবর্ধমান হারে পুঞ্জীভূত হচ্ছে ও বিশ্বের বাকি জনসাধারণের জাতে সম্পদের পরিমাণ ও ক্রমে হ্রাস পাচ্ছে৷ এরফলে বিশ্বের সর্বত্রই দারিদ্র্য ও বেকার সমস্যা বেড়েই চলেছে৷ আর পঁুজিপতিরা তাদের বিপুল অর্থশক্তির জোরে সমাজের সর্বস্তরের ওপর তাদের নিয়ন্ত্রণ কায়েম করে অক্টোপাসের মত সারা সমাজকে শোষণ করছে৷
মানব সমাজের এই ভয়াবহ সমস্যার সমাধানের ধণতান্ত্রিক ব্যবস্থার দ্বারা যেমন সম্ভব নয়, মার্কসবাদের পক্ষেও তা সম্ভব নয়৷ একমাত্র প্রাউট দর্শনেই এর সমাধান রয়েছে৷ তাই তিনি এই প্রাউটের আদর্শকে হাতিয়ার করে সর্বাত্মক শোষণমুক্ত সমাজ গড়ার কাজে সবাইকে আহ্বান জানান৷
অবধূতিকা আনন্দগতিময়া আচার্যা পুরুষের সঙ্গে নারীদের সমান তালে পা ফেলে আদর্শ শোষণমুক্ত সমাজ রচনার আন্দোলনে সামিল হতে আহ্বান জানান৷
আনন্দ বক্তারা ও প্রাউটের মাধ্যমে কৃষিসমস্যা দারিদ্র্য সমস্যা, বেকার সমস্যা প্রভৃতি সমস্যার সমাধান কীভাবে সম্ভব তা মানুষের কাছে তুলে ধরেন৷
পথসভা শেষে এক প্রাউটিষ্ট ইয়ূনিবার্সলের সাংস্কৃতিক প্রকোষ্ঠ ‘আনন্দম্’-এর উদ্যোগে এক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়৷ যার বিশেষ আকর্ষন ছিল প্রভাত সঙ্গীতের ওপর আধারিত ও আচার্য তন্ময়ানন্দ অবধূত কর্তৃক প্রযোজিত ‘মুক্ত ভূমির মেয়ে’ নাটক পরিবেশন৷ আদর্শ সমাজে পুরুষদের সঙ্গে নারীদেরও যে সমধিকার ও অতি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে এই বলিষ্ঠ ভাবটিই নাটকটির মধ্যে ফুটে উঠেছে৷
সমগ্র অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন আচার্য কৃষ্ণস্বরূপানন্দ অবধূত৷