২৭শে অক্টোবর, কলকাতা ঃ গত ২৭শে অক্টোবর রবিবার বিশ্ববন্দিত মহান দার্শনিক ও সঙ্গীতগুরু শ্রীপ্রভাতরঞ্জন সরকার রচিত ও সুরোরোপিত প্রভাত সঙ্গীতের ৩৭ বৎসর পূর্ত্তি উপলক্ষ্যে আনন্দমার্গের সাংস্কৃতিক প্রকোষ্ঠ ‘রাওয়া’ (রেণেশাঁ আর্টিষ্টস্ এ্যাণ্ড রাইটার্স এ্যাশোসিয়েশন) একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে৷ কলকাতাস্থিত আনন্দমার্গের কেন্দ্রীয় আশ্রম প্রাঙ্গনে সুদৃশ্য মঞ্চে এই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানটি পরিবেশিত হয়৷
শান্তিনিকেতনের বিশিষ্ট নৃত্যশিল্পী মিঠু বাগদীর নির্দেশনায় ও ‘সবুজকলি’ নৃত্যগোষ্ঠীর পরিবেশনায় সমবেত নৃত্যের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সূচনা করা হয়৷
বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাধ্যক্ষ ডাঃ প্রহ্লাদ রায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির আসন অলঙ্কৃত করেন৷ আনন্দমার্গের কেন্দ্রীয় প্রকাশন সচিব আচার্য মন্ত্রেশ্বরানন্দ অবধূত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন৷
প্রধান অতিথি ডঃ প্রহ্লাদ রায় তাঁর ভাষণে বলেন, প্রাচীন কাল থেকে বহু মনীষী ও ধর্মগুরু মানবতাবাদের কথা বলেছেন৷ কিন্তু একমাত্র শ্রীপ্রভাতরঞ্জন সরকারের নব্যমানবতাবাদের আদর্শের মধ্যে মানবতাবাদ সমস্ত জাতি, বর্ণ, ধর্মমত, দেশ, কাল অতিক্রম করে সর্বসত্তায় পরিব্যাপ্ত হতে পেরেছে৷ তাঁর রচিত প্রভাত সঙ্গীতে তাঁরই প্রকাশ৷ তিনি সমগ্র মানব জাতির সর্বাত্মক কল্যাণ চেয়েছেন৷
আচার্য মন্ত্রেশ্বরানন্দ অবধূত বলেন ---প্রভাত সঙ্গীত সোনালী জীবনের গান৷ প্রভাত সঙ্গীতের স্রষ্টা প্রভাত সঙ্গীতের মাধ্যমে আজকের আশাহত মানুষকে আশার বাণী শুনিয়ে গেছেন৷ জীবন ও সমাজের সর্বক্ষেত্রে সর্বাত্মক অগ্রগতির আদর্শ তিনি দিয়েছেন৷ তাঁর রচিত প্রভাত সঙ্গীতে জীবনের প্রতিটি দিকের ওপর গান রয়েছে৷
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে দূরদর্শন শিল্পী তানিয়া দাম বেশ কয়েকটি প্রভাত সঙ্গীত পরিবেশন করে দর্শকদের মুগ্ধ করেছেন৷ এছাড়া প্রখ্যাত লোক সঙ্গীত শিল্পী সনজিত মণ্ডলও প্রভাত সঙ্গীত পরিবেশন করে দর্শকদের বিপুল প্রশংসা অর্জন করেন৷
এছাড়া মেঘা দাস যিনি এ বছর প্রভাত সঙ্গীত প্রতিযোগিতায় (ঘ) বিভাগে (শান্তিনিকেতন কেন্দ্র) সঙ্গীতে ‘রাওয়া রত্ন’ হয়েছেন, তিনি সংস্কৃত ভাষায় একটি প্রভাত সঙ্গীত পরিবেশন করেন৷ একক নৃত্যে যিনি এ বছর প্রভাত সঙ্গীত প্রতিযোগিতায় নৃত্য বিভাগে (ঘ) ‘রাওয়া রত্ন’ হয়েছেন তিনিও প্রভাত সঙ্গীত অবলম্বনে নৃত্য পরিবেশন করেন৷ সমবেত সঙ্গীত অনুষ্ঠানে যারা এবছর প্রভাত সঙ্গীত প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়েছে, সেই ‘জয়জয়ন্তী সঙ্গীতালয়ের’ শিল্পীমণ্ডলী ‘কেউ যদি তোরা ভয় পাস....’---এই প্রভাত সঙ্গীতটি পরিবেশন করেছেন৷ নরেন্দ্রপুর আনন্দমার্গ শিশুসদনের শিশুশিল্পীরাও এই আনন্দযজ্ঞে সামিল হয়ে একটি সমবেত নৃত্য পরিবেশন করে দর্শক কর্তৃক প্রশংসিত হয়েছে৷
সবশেষে একটি মনোজ্ঞ নৃত্যালেখ্য ‘দীপাবলি’ দর্শকমনে দাগ কেটেছে৷ প্রভাত সঙ্গীত অবলম্বনে এই নৃত্যালেখ্যটির গ্রন্থনায় ছিলেন আচার্য হরাত্মানন্দ অবধূত ও নির্দেশনায় আচার্য তন্ময়ানন্দ অবধূত৷ পরিবেশনায় নৃত্যশৈলীর শিল্পীগোষ্ঠী৷ কি বোর্ডে ছিলেন জ্যোতিরঞ্জন মজুমদার, প্যাডে শঙ্করলাল মজুমদার ও সঞ্জয় অধিকারী৷