পৃথিবীর উষ্ণতা বৃদ্ধির চরম বিপদের সঙ্কেত দিল রাষ্ট্রপুঞ্জের আবহাওয়া রিপোর্ট

সংবাদদাতা
পি.এন.এ.
সময়

 এই রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২০২৩ সাল উষ্ণায়নের পুরনো সব রেকর্ডকে ছাপিয়ে গিয়েছে৷ স্বাভাবিক ভাবেই যার প্রভাব পড়েছে সমুদ্রের জলের তাপমাত্রা বৃদ্ধি ও হিমবাহের ব্যাপক পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে৷ তবে তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ার এমন পরিবর্তন হঠাৎ করে ঘটেনি৷ বরং গত এক দশক ধরেই পৃথিবীর আবহাওয়া যে এদিকে মোড় নিচ্ছে, রিপোর্ট সে কথাও স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে৷ রাষ্ট্রপুঞ্জের আবহাওয়া সংক্রান্ত বার্ষিক রিপোর্টে সবচেয়ে উষ্ণ দশক হিসেবে চিহ্ণিত করা হয়েছে ২০১৪ থেকে ২০২৩-এর সময়সীমাকে৷ বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা যে রিপোর্ট দিয়েছে, তাতে ভূপৃষ্ঠের তাপমাত্রা গত বছরে গড়ে প্রায় ১.৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়ে যাওয়া খুবই উদ্বেগের একটি বিষয়৷ কারণ, ২০১৫ সালে প্যারিসে জলবায়ু সম্মেলনে মিলিত হওয়া দেশগুলি তাপমাত্রা বৃদ্ধির বিপদের যে মাত্রা স্থির করেছিল, এটি তাকে প্রায় ছুঁয়ে ফেলেছে৷ বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার প্রধান আন্দ্রিয়া সাওলো একে দুনিয়ার জন্য ‘রেড অ্যালার্ট’ হিসেবে চিহ্ণিত করেছেন৷ তাঁর সতর্কবাণী, তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে জলবায়ু পরিবর্তনের দিকটি আরও ব্যাপক হয়ে উঠবে৷ সাওলোর মতে, ২০২৩ সালটি সমুদ্রের জলের তাপমাত্রার অভূতপূর্ব পরিবর্তনের সাক্ষী থেকেছে৷ হিমবাহ গলে যাওয়ার মাত্রায় ব্যাপক বৃদ্ধি হয়েছে৷ রিপোর্ট বলছে, হিমবাহগুলির পরিবর্তন নিয়ে ১৯৫০ সাল থেকে তথ্য সংগ্রহের কাজ চলছে৷ কিন্তু এবার হিমবাহের গলে যাওয়ার মাত্রা এতটাই বেড়ে গিয়েছে যা অতীতে কখনও ঘটেনি৷ উষ্ণায়নের এই ধাক্কায় গত বছরটিতে সমুদ্রের জলের উচ্চতার সর্র্বেচ্চ বৃদ্ধি হয়েছে৷ সমুদ্রের জলস্তর নিয়ে স্যাটেলাইট পরিসংখ্যান নেওয়ার কাজ শুরু হয়েছিল ১৯৯৩ সাল থেকে৷ রেকর্ড বলছে, সেই সময় থেকে এতটা বৃদ্ধি আর কখনও ঘটেনি৷ গত এক দশকে জলস্তর বৃদ্ধির এই মাত্রা স্যাটেলাইট তথ্য নেওয়ার শুরুর দশকগুলির তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি হয়ে গিয়েছে বলে জানানো হয়েছে৷ রিপোর্ট আরও জানিয়েছে, ২০২৩-এর গোটা বছরটির কোনও না কোনও সময়ে সমুদ্রগুলির ৯০ শতাংশ এলাকায় গরম হাওয়া বয়ে গিয়েছে৷ আর সাগরের জল গরম হয়ে সেখানকার বাস্তুতন্ত্রে বিরাট ক্ষতিকর প্রভাব ফেলছে৷ উষ্ণায়নের এই প্রভাব দুনিয়া জুড়ে মানুষের জীবনে যে ব্যাপক প্রভাব ফেলতে চলেছে৷ উষ্ণায়নের এই প্রভাব দুনিয়া জুড়ে মানুষের জীবনে যে ব্যাপক প্রভাব ফেলতে চলেছে, রাষ্ট্রপুঞ্জের রিপোর্টে সেই উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে৷ বিশেষ করে বন্যা ও খরা, চরম তাপমাত্রার প্রভাবে মানুষের বাস্তুচ্যুত হওয়ার আশঙ্কা কিংবা খাদ্য সঙ্কটের সম্ভাবনা সামনে এসেছে৷ রিপোর্ট বলছে, খাদ্যে নিরাপত্তা নেই, এমন মানুষের সংখ্যা কোভিড পর্বের আগের তুলনায় দ্বিগুণ হয়েছে ইতিমধ্যেই৷