১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারী উর্দু সাম্রজ্যবাদের বিরুদ্ধে বাঙলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে সুপ্রতিষ্ঠিত করার জন্যে বর্তমান বাংলাদেশে (পূর্ববাংলা) ৫ তরুণ (রফিক, বরকত, আব্দুল জববর, সালাউদ্দিন ও শফিউর রহমান) প্রাণ দিয়েছিলেন৷ তাঁদের আত্মত্যাগ বিফলে যায়নি৷ বিশ্বের দরবারে আজ ২১শে ফেব্রুয়ারী আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা হিসেবেও স্বীকৃতি পেয়েছে শুধু তাই নয় বাঙলা ভাষা শ্রেষ্ঠ সুমধুর ভাষা হিসেবেও স্বীকৃতি পেয়েছে৷ কিন্তু দুঃখের বিষয়ে পশ্চিম বাঙলার সরকার সেই উর্দুকেই পশ্চিমবাংলার দ্বিতীয় রাজভাষা হিসেবে ঘোষণা করেছেন৷ এখানেই থেমে নাই হিন্দি ভাষা প্রচার-প্রসারের জন্যে ও হিন্দিভাষা-ভাষী মানুষদের খুশী করতে পশ্চিমবাঙলায় হিন্দি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করতে চলেছেন৷ এটা শুধু বোটের স্বার্থেই করা হয়েছে, এ বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই৷ পশ্চিমবঙ্গ সরকারের এই ভাষানীতির ‘আমরা বাঙালী’ দল তীব্র বিরোধিতা করছে৷
আমরা দেখছি, পশ্চিমবাংলার প্রতিবেশী রাজ্যগুলিতে (ঝাড়খণ্ড, অসম , বিহার ও উড়িষ্যা) বাঙালীর অধ্যুষিত এলাকার স্কুলে ও কলেজে বাঙলা পঠন-পাঠন বন্ধ হয়ে গেছে৷ অথচ মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় এর কোন প্রতিবাদ করেননি৷ শুধু ‘আমরা বাঙালী’ দলের পক্ষ থেকে এই সমস্ত রাজ্যগুলিতে গিয়ে প্রতিবাদ করা হয়েছে ও রাজ্য সরকারের উদ্দেশ্যে স্মারক লিপি প্রদান করেছে৷ এখানে উল্লেখযোগ্য গুজরাট হাইকোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলায় (নং-২৮৯৫/২০০৯) পরিস্কারভাবে জানিয়ে দিয়েছেন যে, (রায়দানের তারিখ-১৩.০১.২০১০) হিন্দি ভারতের রাষ্ট্রভাষা নয়৷ ভারতে রাষ্ট্রভাষা বা রাজভাষা বলে সংবিধানে উল্লেখ নেই৷
তাই আজ সমস্ত বাংলা ভাষা-ভাষী মানুষদের কাছে আবেদন করছি, আসুন, হিন্দি সাম্রাজ্যবাদীদের ও ভোট সর্বস্র দালালদের মুখোশ খুলে দিই ও তাদের ঘৃণ্য চক্রান্তকে ব্যর্থ করি৷ আর শপথ নিই কোনো অবস্থাতেই হিন্দি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করতে দেব না৷ তাই আজ বাঙলার সমস্ত ছাত্র যুবক সকলকেই ঐক্যবদ্ধ হয়ে এর বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে আহ্বান করছি৷