ফাঁসির  মঞ্চে হাসিমুখে

লেখক
আচার্য মুক্তানন্দ অবধূত

সবাই চকিত চকোর  বিস্ময়ে

চেয়ে রয় তোমা পানে

 বজ্রদীপ্ত  স্ফুলিঙ্গ বিদ্যুল্লেখা সম

এ বালক---কোথা হতে  আগমন !

পরাধীন  দেশে  বহিছে

শোষণের  তুফান---এমনি  দুঃসময়ে৷

ব্রিটিশ স্বার্র্থন্বেষী বহিঃশত্রু

কু-বুদ্ধি ব্যবসায়ী মনোভাব  আপ্লুত

অবাধ লুন্ঠনের ফন্দিবাজী গুপ্ত রেখে

প্রবেশিল  মোদের  স্বদেশে

নিরীহ  সরলপ্রাণ ধার্মিক ব্যষ্টিরে

ঘেরিল তারা  রক্তচক্ষু  জালে৷

হে ক্ষুদিরাম --- তুমি  নও  ক্ষুদ্র  মানব

দানবের ত্রাস তুমি

অল্পবয়সে  তব অঙ্গে ফুটন্ত শোণিত ধারা

ব্রিটিশের  রক্তচক্ষু- শাসনে

শোষণের  পরাকাষ্ঠায়

নিস্পেষিত  শত শত  স্বদেশী জনতা৷

ব্রিটিশ- দাসত্বের শৃঙ্খলে আবদ্ধ

নিরীহ  জাতির মুক্তিদানে

সংগ্রামে  লড়েছ জীবন-মরণ পণে,

কেহ রোধিতে  পারে না

তোমার  বীর বিপ্লবী জীবন,

ত্যাগ-তিতিক্ষা-সংগ্রামের প্রতিভূ

ধন্য তোমার জীবন

 দৃপ্ত কন্ঠে  ঘোষিছে বার্তা

স্বদেশের  স্বাধীনতা কথা৷

দেশমাতৃকার  সেবায় নিবেদিত

  মরণকে  করেছ বরণ

ক্ষুদ্র স্বার্থকে  তিলাঞ্জলি  দিয়ে৷

আপোষহীন সংগ্রামে  স্বাধীনতা লাভে

প্রয়োজন রাখনি আপন আবাস-নিবাস,

উৎখাত করেছ  কু-শাসন

আপন দেশের  মাটি হতে৷

দাসত্বের  শৃঙ্খল মোচনে

দৃঢ়  সংকল্পে রেখেছ বিরাট  অবদান৷

ভুলছি না , ভুলবো না তোমায়

 বারে বারে মোরা  স্মরণ করি

মেদিনীপুরের দামাল ছেলে

 এগারই  আগষ্ট  স্মরণীয়  দিনে

 ইতিহাস পটে চিহ্ণিত

তোমার  অম্লানকীর্ত্তি,

দেশের সেবায় প্রাণ নিবেদন

স্মরণ  করিছে  দেশবাসী৷

বঙ্গবাসীর  তনয়  তুমি

ফাঁসির  মঞ্চে হাসিমুখে

গেয়েছো স্বাধীনতার  গান৷

তোমার আত্মত্যাগের স্ফুলিঙ্গ স্পর্শে

বাঙালী জাতি জেগেছে আজ

গাহিছে জয়গান

উড়িছে বিজয় নিশান৷