বাঙালী ছাত্র-সমাজের সচিব তপোময় বিশ্বাস বলেন--- আজ মনিপুর নিয়ে গোটা দেশ তোলপাড় হচ্ছে৷ প্রতিবাদের গর্জন দেশের বাইরেথেকেও শোণা যাচ্ছে৷ কিন্তু এই বর্বরতার শেষ কোথায়? ঘটনার পর ঘটনা ঘটেই চলেছে৷ কখনও কখনও অপরাধীর শাস্তিও হচ্ছে৷ কিন্তু অপরাধ বন্ধ হচ্ছে না৷ এই ধরণের অপরাধ বন্ধ করতে হলে শুধু অপরাধীকে শাস্তি দিলেই হবে না, অপরাধের উৎস খুঁজে বার করতে হবে৷
দেশে আইন আদালত থাকবে, পুলিশ প্রশাসন থাকবে, অপরাধীব বিচার ও শাস্তি হবে কিন্তু তাতেই দেশ অপরাধ মুক্ত হবে না৷ তাই যদি হতো ধনঞ্জয় ভট্টাচার্যের ফাঁসির পর রাজ্যে আর ওই ধরণের অপরাধ ঘটার কথা নয়, কিন্তু তবুও ঘটছে৷ ঘটনা ঘটলে গণ-মাধ্যম থেকে শুরু করে বুদ্ধিজীবী রাজনৈতিক দল সকলেই চিৎকার করতে থাকে৷ কিছুদিন পর সব চুপ আর একটা ঘটনার অপেক্ষায়৷
শ্রী বিশ্বাস বলেন ভারতবর্ষের স্বাধীনতা সংগ্রামে যেমন আনন্দমঠ, নীলদর্পণ, পথের দাবীর অবদান আছে তেমনি আজকের যুব সমাজকে বিপথগামী করার পিছনে আছে অশ্লীল যৌন আবেদন মার্র্ক চলচিত্র, নাচ, গান, সাহিত্য প্রভৃতি৷ ধনতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থায় গণতন্ত্রের আড়ালে এই ফ্যাসিষ্ট কালচার দেশকে গ্রাস করেছে৷ শিল্প সাহিত্যের অঙ্গন থেকে খেলার মাঠ সর্বত্রই এই বিকৃত মানসিকতার ফ্যাসিষ্ট কালচার ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে৷ ছাত্র-যুবসমাজকে খুব সহজেই এর দ্বারা বশীভূত করা যায়৷ তাদের মন থেকে শুভ ভাবনা বিলুপ্ত হয়ে যায়, তারা রাজনৈতিক দলগুলোর হাতের পুতুল হয়ে যায়৷ এইভাবে যুবসমাজকে বিপথে চালিত করে দেশকে লুটে খাচ্ছে দেশীয় পুঁজিপতিরা৷ রাজনৈতিক দলগুলো ওদের উচ্ছিষ্ট পেয়েই চুপ থাকে৷ আজ দল বেঁধে মনিপুর গেছেন খুব ভালো কথা৷ ঘটনা ঘটেছে প্রতিবাদ তো করতেই হবে৷ কিন্তু এই ধরণের প্রতিকী প্রতিবাদে সমাজ কি দুষণমুক্ত হবে৷ সমাজ কি পাপমুক্ত হবে?
শ্রী বিশ্বাস বলেন সমাজের এই নক্কারজনক পরিস্থিতির জন্য নগর সভ্যতাও দায়ী৷ এর অর্থ এই নয় যে নগরকে ধবংস করে দিতে হবে৷ সমাজ থেকে অপরাধ নির্মূল করতে হলে প্রথমেই অপরাধের উৎস এই সব অশ্লীল চলচিত্র, নাচ, গান বন্ধ করতে হবে৷ পুঁজিবাদী অর্থনৈতিক কাঠামোর খোল নলচে পাল্টে প্রাউটের বিকেন্দ্রিত অর্থনৈতিক পরিকল্পনার বাস্তবায়ন ঘটিয়ে মানুষের হাতে ক্রয়ক্ষমতা দিতে হবে যাতে মানুষ সুস্থ ভাবে সমাজে খেয়ে পরে বেঁচে থাকতে পারে৷ পাশাপাশি শৈশব থেকেই শিশুদের আধ্যাত্মিক অনুশীলনের পাঠ দিতে হবে৷ শিল্প সাহিত্য সম্পর্কে মনে রাখতে হবে---শিল্পের খাতিরে শিল্প নয়,সেবার ও কল্যাণের জন্য শিল্প৷ সমাজকে অপরাধ মুক্ত করে সামাজিক সুচিতা বজায় রাখতে হলে শিল্প,সাহিত্য, কলা জগতের ভূমিকা অপরিহার্য৷