রাজনীতির রং বদল নয়---অর্থনীতির ভোল বদল চাই মানবতার আর্থিক  মুক্তির পথ প্রাউট

সংবাদদাতা
নিজস্ব সংবাদদাতা
সময়

রাজ্যে বিধানসভা ভোট সামনে৷ পরিবর্তনের আবাজ তুলে কেন্দ্রের শাসকদল রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল ভোটযুদ্ধের রণ দামামা বাজিয়ে দিয়েছে৷ প্রবীন প্রাউটিষ্ট নেতা শ্রী প্রভাত খাঁ ক্ষোভের সঙ্গে বলেন--- আর কত পরিবর্তন দেখবো৷ দেশতো উচ্ছন্নে গেল! দেশের হতদরিদ্র অবহেলিত মানুষগুলোর ভাগ্যের কোন পরিবর্তন তো হচ্ছে না৷ প্রতিশ্রুতির বস্তা নিয়ে রাজ্যে একঝাঁক পরিযায়ী নেতার আগমন হয়েছে৷ প্রভাত খাঁ প্রশ্ণ করেন --- ভোটের পর এই নেতারা রাজ্যে থাকবেন তো? রাজ্যে নির্বাচন নিয়ে এক প্রশ্ণের উত্তরে তিনি বলেন দিল্লীতে তো পরিবর্তন হলো৷ জনগণ কি পেল! সুইস ব্যাঙ্কের কালোটাকা ফিরিয়ে আনবেন বলেছিলেন৷ কোথায় সেই টাকা৷ খোঁজ নিয়ে দেখুন সুইস ব্যাঙ্কে কালোটাকার পরিমান বেড়ে গেছে৷ তিনি বলেন পরিবর্তন ‘আত্মনির্ভর’ এগুলো ভোট প্রচারের চমক ছাড়া কিছু নয়, ভোটের আগে রাজনৈতিক নেতারা এই ধরণের চমক দিয়ে থাকেন৷ ভোটের পর এসব কথা আর মনে রাখেন না৷  যেমন সুইস ব্যাঙ্কের কালো টাকা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী আর ‘রা’ কাড়েন না৷ প্রভাত খাঁর কথায় আত্মনির্ভর ভারতও আর পাঁচটা কথার মত পলিটিক্যাল স্টান্ট৷ নেতারা ভোটের আগে এই ধরনের স্টান্টবাজি করে থাকেন৷ এতে ক্ষমতার হাতবদল হতে পারে, রাজনীতির রং বদল হতে পারে, কিন্তু জনতার ভাগ্যবদল হবে না৷ তারা সেই তিমিরেই পড়ে থাকবে৷

বিশিষ্ট প্রাউটিষ্ট কর্মী ‘আমরা বাঙালী’ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শ্রী জয়ন্ত দাশ বলেন--- আত্মনির্ভর বলে চিৎকার যিনি করছেন তিনি আত্মনির্ভর কথার অর্থ ভালোই বোঝেন৷ তার দ্বারা সেটা করা সম্ভব নয় সেটাও জানেন৷ ছাপান্ন ইঞ্চি ছাতি ফুলিয়ে ক্ষমতার মসনদে চড়া যায়৷ কিন্তু দেশ আত্মনির্ভর করার পথ ভিন্ন৷ দেশের বর্তমান শাসক বিরোধী কোন রাজনৈতিক দলের হিম্মত নেই সেই পথে চলার৷ যে সরকার দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত সম্পত্তি পুঁজিপতিদের হাতে তুলে দিচ্ছে সেই সরকারই তো পুঁজিপতি নির্ভর৷ তারা আবার দেশকে আত্মনির্ভর করবে কেমন করে?

বিশিষ্ট প্রাউট তাত্ত্বিক এইচ.এন.মাহাত বলেন-শুধু রাজনীতির রং বদল করলেই দেশ আত্মনির্ভর হবে না৷ অর্থনীতির ভোলবদল করতে হবে৷ বর্তমান পুঁজিবাদ নির্ভর সমাজ অর্থনৈতিক কাঠামোয় পুঁজিপতিদের সম্পদ দিন দিন বাড়তে থাকবে, দেশের সাধারণ মানুষের গড় আয় কমতে থাকবে৷ সরকার বস্তাপচা অর্থনীতির তত্ত্ব কথা শুনিয়ে জনগণকে অলীক উন্নয়নের গল্প শোণাবে, কিন্তু বাস্তব পরিণতি হলো ধনকুবেরদের সঙ্গে সাধারণ মানুষের আর্থিক বৈষম্য আকাশ-পাতাল হবে৷ তিনি বলেন দেশকে, বাঙলাকে আত্মনির্ভর করতে হলে বর্তমান পুঁজিবাদ নির্ভর আর্থিক কাঠামো ভেঙে চুরমার করে প্রগতিশীল উপযোগতত্ত্বের বিকেন্দ্রিতপথে নূতন করে আর্থিক সংরচনা গড়ে তুলতে  হবে৷ কৃষি ও শিল্পের সমন্বয়ে ব্লকে ব্লকে স্থানীয় মানুষদের নিয়ে ব্লকভিত্তিক অর্থনৈতিক পরিকল্পনা গড়ে তুলতে হবে৷ এর ফলে প্রতিটি বেকারের কর্মসংস্থান হবে, মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বাড়বে, জীবনধারণের  জন্যে দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় প্রতিটি দ্রব্য সুলভে পাওয়া যাবে, তবেই দেশ আত্মনির্ভর হয়ে গড়ে উঠবে৷ পুঁজিবাদের সেবক বর্তমান শাসকদলের হিম্মত নেই দেশকে সেইভাবে আত্মনির্ভর করে গড়ে তোলার৷

শ্রী মাহাত বলেন প্রাউটিষ্টরা এখন মানুষকে সমাজ অর্থনীতি বিষয়ে সচেতন করতে ব্লকে ব্লকে ব্যাপক প্রচার করছে৷ মানুষ সচেতন না হলে রাজনৈতিক নেতাদের বাগাড়ম্বরে ভুলে বিপথে চলতেই থাকবে৷

শ্রী মাহাত দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন--- প্রাউটের বিকেন্দ্রিত অর্থনৈতিক পরিকল্পনার বাস্তবায়নের মাধ্যমে প্রাউটিষ্টরাই একদিন শোষণমুক্ত আত্মনির্ভর মানবসমাজ গড়ে তুলবে৷