গত ২১শে দক্ষিণ ২৪পরগণা জেলার সাগর ব্লকে এক বিশেষ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছিল৷ এই সভায় আনন্দমার্গ প্রচারক সংঘের পক্ষ থেকে আমন্ত্রিত ছিলেন আনন্দমার্গের সন্ন্যাসী আচার্য প্রসূনানন্দ অবধূত, আচার্য চিরাগতানন্দ অবধূত, আচার্য বোধিসত্ত্বানন্দ অবধূত ও ব্যারাকপুর ডায়োসিস সেক্রেটারী আচার্য সৌমসুন্দরানন্দ অবধূত৷
উক্ত আলোচনা সভায় আলোচ্য বিষয় ছিল ‘‘ভাগবত ধর্ম--- কৃষ্ণতত্ত্ব গীতাসার৷’’ মুখ্য বক্তা ছিলেন আচার্য প্রসূনানন্দ অবধূত৷ তাঁর বক্তব্যের মুখ্য বিষয় ছিল ভাগবত ধর্ম ও শ্রীকৃষ্ণের চরিত্রের দ্বৈত ভূমিকা--- ব্রজের কৃষ্ণ ও পার্থসারথি কৃষ্ণ৷ যা শ্রীশ্রী আনন্দমূর্ত্তিজী তাঁর নমামী কৃষ্ণসুন্দরম গ্রন্থে কৃষ্ণের এই দুই ভূমিকার কথা প্রাঞ্জল ভাষায় ব্যাখ্যা করেছেন৷
আচার্য প্রসূনানন্দ অবধূতের মনোজ্ঞ আলোচনায় তথাকথিত ধর্মমতগুলির সঙ্গে প্রকৃত মানবধর্ম তথা ভাগবত ধর্মের পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়৷ তিনি ভাগবত ধর্ম বলতে গিয়ে বলেন---ভাগবত ধর্মের সারকথা বিস্তার, রস, সেবা৷ প্রকৃত মানবধর্মে মানুষে মানুষে ভেদ বিদ্বেষের শিক্ষা দেয় না৷ তিনি এই প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে নব্যমানবতাবাদের কথাও বলেন৷ অর্থাৎ মানুষ শুধু মানুষের কথাই চিনতা করবে না৷ পশু, পাখী, তরু-লতা সবাইকে নিয়ে মানব সমাজ৷ সেই সমাজের বড় ভাই হিসেবে সবার অস্তিত্ব সুরক্ষার ব্যবস্থা করা মানুষের কর্তব্য৷
প্রসঙ্গক্রমে তিনি পূর্ণাঙ্গ আনন্দমার্গ দর্শনের সামাজিক ও অর্থনৈতিক দিক নিয়ে আলোচনা করেন৷ বর্তমান পুঁজিবাদ নির্ভর কেন্দ্রীত অর্থনীতির পক্ষে মানুষের সার্বিক কল্যাণ করা সম্ভব নয়৷ পুঁজিবাদের লক্ষ্যই মুনাফা অর্জন৷ তিনি ‘প্রাউট’ তথা প্রগতিশীল উপযোগতত্ত্বের বিকেন্দ্রীত অর্থনীতি বাস্তবায়নেরে ওপর জোর দেন৷ যার মূল কথা অর্থনৈতিক ক্ষমতা স্থানীয় মানুষের হাতে তুলে দিতে হবে৷