সাম্প্রদায়িক বিভাজনের বিল আইনে পরিণত প্রতিবাদের রোষে উত্তাল দেশ

সংবাদদাতা
নিজস্ব সংবাদদাতা
সময়

সংসদের উভয় কক্ষে সি.এ.বি.-বিল পাশ হওয়ার পর রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষরে তা আইনে পরিণত হয়৷ সংবিধানের মৌলিক ধারাকে অবজ্ঞা করে ধর্মীয় সাম্প্রদায়িক বিভাজনের এই আইন দেশের বৃহৎ অংশের মানুষ মেনে নিতে পারছে না৷ তাই দেশ জুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে প্রতিবাদের রোষ৷ পুড়েছে ট্রেন, বাস, পথ অবরোধে নাকাল হয়েছে হাজার হাজার মানুষ৷

বিক্ষোভের উত্তাপ ছড়িয়ে পড়ে রাজধানী দিল্লি থেকে প্রায় প্রতিটি রাজ্যে৷ তবে উত্তাপ বেশী ছিল অসম, ত্রিপুরায়৷ অসমে পুলিশের গুলিতে সাত জনের মৃত্যু হয়েছে৷ রেল অবরোধ, পথ অবরোধ, অবস্থান বিক্ষোভ চলছেই, এর মধ্যে বিক্ষোভকারীরা একটি তেলের ট্যাঙ্কারে আগুন ধরালে ট্যাঙ্কারের চালক অগ্ণিদগ্দ হয়ে মারা যান৷ দোকান, বাজার, স্কুল, অফিস, আদালত সবই বন্ধ থাকে৷ ইণ্টারনেট পরিষেবাও বন্ধ থাকে৷ জনজীবন স্তব্ধ হয়ে যায় অসমে৷ দেশে অবশিষ্টাংশের সঙ্গে প্রায় বিচ্ছিন্ন উত্তর-পূর্বাঞ্চল৷ দিল্লির জামিয়া মিলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিবাদে সামিল ছাত্রদের ওপর বর্বরোচিতভাবে লাঠি চালায় পুলিশ, বহু ছাত্র আহত হয়৷ তার জেরে ছাত্র বিক্ষোভ শুরু হয় রাজ্যে রাজ্যে৷

প্রতিবাদের রোষ পশ্চিমবঙ্গেও ঃ

পশ্চিমবঙ্গেও প্রতিবাদের রোষ আছড়ে পড়ে৷ ট্রেনে, বাসে আগুন লাগান হয়৷ বহু মানুষই দুর্ভোগে পড়ে৷

ট্রেন বন্ধ থাকায় বহু যাত্রী ষ্টেশনে পড়ে থাকতে বাধ্য হয়৷ উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জায়গায় টায়ার জ্বালিয়ে ৩১ নং জাতীয় সরক অবরোধ করা হয়৷ প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কুশপুতুল পোড়ানো হয়৷ উত্তরবঙ্গের সঙ্গে অসমের যোগাযোগ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন৷ শিলিগুড়ি, কোচবিহার, আলিপুরদুয়ারের সরকপথও বন্ধ আছে৷ কোন বাস, ট্রাক যাতায়াতকরছে না৷ অসম, ত্রিপুরাগামী কয়েকশো ট্রাক রাস্তায় আটকে আছে৷ সি.এ.বি. বিরোধী আন্দোলনে সামিল হয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীও৷ তবে তিনি জনগণকে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করার আহ্বান জানিয়েছেন৷ ১৬, ১৭, ১৮ই ডিসেম্বর কলকাতা, হাওড়া, সি.এ.এ. বিরোধী মিছিলে অংশগ্রহণ করলেন মুখ্যমন্ত্রী৷

সি.এ.বি. আইনে পরিণত হওয়ার পর দেশের প্রায় সব বড় বড় শহরে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ছে৷ দিল্লি, লক্ষ্নৌ, আমেদাবাদ, হায়দ্রাবাদ, পটনা সহ দেশের প্রতিটি  বড় বড় শহর বিক্ষোভের আগুনে জ্বলছে৷ দিল্লিতে মেট্রো রেল বন্ধ করতে হয়েছে৷ লক্ষ্নৌতে বিক্ষোভকারিদের দ্বারা বাসে, বেশ কিছু মোটর সাইকেলে এমনকি পুলিশ ফাঁড়িতেও আগুন লাগানোর ঘটনা ঘটেছে৷ পুলিশের অসহায় অবস্থা বিক্ষোভকারীদের আরও উৎসাহিত করেছে৷ সাধারণ মানুষ নাগরিকহীনতার আশঙ্কায় আতঙ্কিত৷ সুশীল সমাজও প্রতিবাদে পথে নেমেছে৷ দিল্লি সহ বেশ কিছু জায়গায় পুলিশের আচরণও বর্বরোচিত৷ দিল্লির জামিয়া মিলিয়া ঘটনায় দেশ জুড়ে নিন্দার ঝড় উঠেছে৷ সুশীল সমাজও পথে নামতে বাধ্য হয়েছে৷ দেশের বহু স্থানে ইণ্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখতে হয়েছে৷