বৎসর, নব বৎসর, তুমি কল্যাণ এনো চারিদিকে,
নূতন ভোরের হাতছানিতে নূতন ঊষার নবালোকে৷৷
বৃক্ষ–লতারা সবুজে ভরুক, বন্য পশুরা নিরাপদ হোক,
পাখীরা কণ্ঠে অমিয় ভরিয়া উড়িয়া বেড়াক দিকে দিকে৷৷
মানুষে মানুষে ভেদ দূর হোক, বুদ্ধির অপচয় রোধ হোক,
শক্তির সর্বনাশা প্রতাপ সংযত হোক সব দিকে৷৷
–প্রভাতসঙ্গীত
জড়বাদের প্রাদুর্ভাব,ধর্মান্ধদের উন্মাদনা,ফ্যাসিষ্ট শোষকের ক্রর দৃষ্টি সমাজ রাজনীতিকে করেছে কলুষিত, অর্থনীতিতে এনেছে আকাশ পাতাল বৈষম্য৷ স্বার্থদীপ্ত বুদ্ধিভ্রষ্ট রাজনীতি,পথভ্রষ্ট যুবসমাজ সমাজের সুচিতা প্রতিনিয়ত কালিমালিপ্ত করছে৷ এই ভাবেই হারিয়ে যাচ্ছে দিন মাস বছর৷ আমাদের জীবন থেকে আরও একটা বছর চলে গেল৷ নববর্ষের প্রথম প্রত্যুষে নূতন করে জাগরণ আসুক বাঙালীর জীবনে৷ সব সংকোচ ---স্বার্থের সংকোচ, হীন সংস্কারের সংকোচ, ঘৃণাবিদ্বেষের সংকোচ দূর করে, বিদীর্ণ করে বিকশিত হোক নবচেতনা৷ এই দানবীয় নিষ্ঠুরতা, সংকীর্ণ স্বার্থপরতা ও জড়তাকে দলিত করে দৃঢ়পথে, অসংকুচিত চিত্তে মনুষ্যত্বলাভের দুঃসাধ্য সাধনায় রত হতে হবে বাঙালীকে৷ সামনে আরও কঠিন দুঃসময় বাঙালীর জন্য অপেক্ষা করছে৷ গণতন্ত্রের বেদীতে স্বৈরাচারী শাসকের দানবীয় হুঙ্কার গ্রাস করতে চায়, বহু ভাষা কৃষ্টি,সাংস্কৃতিক অভিব্যক্তির মহামিলনে বৈচিত্র্যময় ভারতবর্ষকে একের অজুহাতে৷ সবকিছুকে এক করতে গিয়ে বৈচিত্র্যের বৈশিষ্ট্যকে বিনাশ করতে চায় দানবীয় শাসক৷ এই সংকটময় সময়ে নববর্ষের প্রথম প্রত্যুষে আমাদের প্রার্থনা হোক---‘‘যত বিঘ্ন দূর করো, যত ভগ্ণ সরিয়ে দাও, যা কিছু ক্ষয় হবার দিকে যাচ্ছে সব লয় করে দাও---হে পরিপূর্ণ আনন্দ, পরিপূর্ণ নূতনের জন্যে আমাদের প্রস্তুত করো৷’’