সম্প্রতি গ্রামীন রাজনীতিতে পঞ্চায়েত দখলের নির্বাচনে যে রক্তক্ষরণ দেখা গেল, যা এখনও চলছে তা গণতন্ত্রের পক্ষে বড়ই লজ্জার কলঙ্কের৷ কিন্তু বেহায়া নির্লজ্জ নেতা কর্মীদের এত রক্ত ক্ষরণেও কোন অনুতাপ নেই অনুশোচনা নেই, তারা এতটাই স্বার্থের সংঘাতে মত্ত যে স্নেহ, প্রেম-প্রীতি, ভালোবাসা, মানবিক মূল্যবোধ সব হারিয়ে উদর সর্বস্ব জীবে পরিণত হয়েছে৷ অর্থনৈতিক শোষণ বৈষম্য,সামাজিক বিভাজন, শিক্ষা সংস্কৃতির অঙ্গনেও চরম বিশৃঙ্খল অবস্থা--- সর্বস্তরেই দুর্নীতিগ্রস্ত লোকের প্রাদুর্ভাবে সমাজকে বিষাক্ত করে তুলেছে৷ এ-এক দুঃসহনীয় পরিস্থিতি তৈরী হয়েছে৷
এক সময় রাজনৈতিক নেতাদের সর্বত্যাগী দেশপ্রেমিক বলে মানুষ শ্রদ্ধা করতো৷ আজ সভ্য সমাজের মানুষ রাজনীতি থেকে দূরে থাকে৷ কারণ রাজনীতি আজ দুর্নীতিগ্রস্ত কপটাচারীদের জীবিকার পথ৷ তাই আজ রাজনীতির রন্ধ্রে রন্ধ্রে দুর্নীতি ভ্রষ্টাচারে ভরে গেছে৷
প্রাউটের মতে সমাজকে এই দুঃসহ পরিস্থিতির হাত থেকে উদ্ধার করতে হলে জীবনের সর্বক্ষেত্রে প্রয়োজন পুনর্জাগরণ৷ প্রবীন প্রাউট তাত্ত্বিক শ্রীপ্রভাত খাঁ বলেন--- পুঁজিবাদ নির্ভর কেন্দ্রীত অর্থনৈতিক কাঠামো ও দুর্নীতিগ্রস্ত রাজনৈতিক নেতারা সমাজকে এই দুরাবস্তার মধ্যে ঠেলে দিয়েছে৷ সৎ শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষ রাজনীতি থেকে দুরে সরে গেছে৷ শোষক পুঁজিপতি ও দুর্নীতিগ্রস্ত নেতাদের তাঁবেদারে পরিণত হয়েছে সংস্কৃতি জগতের একশ্রেণীর কুশিলব৷ অথচ এই শিল্প সাহিত্য জগতের মানুষরাই সমাজকে সঠিক পথে নির্দেশনা দিতে পারে৷ দুর্নীতিগ্রস্ত নেতারা কখনই সমাজকে সঠিক পথ নিয়ে যেতে পারে না, কল্যাণের পথে নিয়ে যেতে পারে না৷ তাই নীতিবাদী মানুষের হাতে শাসন ক্ষমতা থাকতে হবে৷
শ্রী খাঁ বলেন---সমাজকে এই বিষাক্ত পরিবেশ থেকে মুক্ত করতে অর্থনৈতিক কাঠামোর খোল-নলচে পাল্টে বিকেন্দ্রিত অর্থনৈতিক পরিকল্পনার বাস্তবায়ন করে মানুষকে নূ্যনতম ক্রয়ক্ষমতার নিশ্চিততা দিতে হবে যাতে প্রতিটি মানুষ জীবন ধারণের নূ্যনতম প্রয়োজনপূর্ত্তির সুযোগ পায়৷ তাই প্রাউটিষ্টদের অবিলম্বে পনর্জাগরণ আন্দোলনে নামা উচিত৷ মানুষকে সামাজিক অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিকভাবে সচেতন করে তুলতেই হবে৷ নতুবা সমাজ এই বিষাক্ত পরিবেশ থেকে মুক্ত হবে না৷