সেনার খাতায় মৃত, অথচ ২৪ বছর পর খোঁজ মিলল জীবিত সেই সেনাকর্মীর

সংবাদদাতা
পি.এন.এ.
সময়

সাত বছর কোনও খোঁজ না পাওয়ায় ভারতীয় সেনাবাহিনীর নিয়ম অনুযায়ী একটি পুতুল দাহ করে তাঁর অন্ত্যেষ্টি সম্পন্ন করা হয়েছিল৷ এেিদক কলকাতার কাছাকাছি ব্যারাকপুরে সেনা এলাকার আশেপাশেই দেখা যেত এক ভবঘুরে বৃদ্ধের৷ মুখ ভর্তি দাড়ি-গোঁফ, মুখে হিন্দি বুলি৷ অল্পেই রেগে যায়, তবে কেউ খাবার দিলে  তাঁর উদ্দেশ্যে সেনাকর্মীদের মতো  করে স্যালুট জানাতে ভুলতেন না, আর এটাই তাঁর পরিচয় পাওয়ার প্রথম ধাপ হয়ে দাঁড়ায়৷ আর সেই কায়দায় তাঁকে দীর্ঘ ২৪ বছর পরে পরিবারের কাছে ফেরাতে সাহায্য করল৷

একটি রেডিয়ো সংগঠনের সম্পাদক অম্বরীশ নাগ বিশ্বাস বলেন, ‘‘এই বৃদ্ধকে খাবার দেওয়ার সময়ে আমি তাঁর সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করতাম৷ এক দিন দেউড়িয়া জেলার কথা বললেন উনি৷ ইন্টারনেটে খুঁজে দেখলাম, জেলার নামটা ঠিক৷ পরে জানতে পারি, মেয়ের নাম অনিতা, উনি ডাকতেন সীতা৷ তবে সব চেয়ে বড় ক্লু ছিল, সেনাদের মতো ওঁর স্যালুট করার কায়দা৷’’ ওই সংঘটন জানাচ্ছে , বৃদ্ধের স্যালুট করার তথ্য আর জেলার নাম তাঁদের উত্তরপ্রদেশের সদস্যদের পাঠানোর পরে বৃদ্ধের পরিচয় উদ্ধার হয়৷

দীর্ঘ ২৪ বছর পরে বাবার খোঁজ পেয়ে আবেগপ্রবণ তাঁর ছেলে রাজকুমার চৌরাসিয়া৷ তিনি জানান, ১৯৯৯ সালে রাধে অসমের তেজপুরে সেনাবাহিনীর এমইএস বিভাগে কর্মরত ছিলেন৷ বাড়ি ছিল উত্তরপ্রদেশের গোরক্ষপুরের পাশে দেউড়িয়া জেলায়৷ রাজকুমার তখন ১৫ বছরের কিশোর৷ তিনি বলেন, ‘‘তখন তো টেলিফোনের ব্যবহার ততটা ছিল না৷ বাবা ছুটিতে আসার আগে চিঠি পাঠাতেন৷ ওই বছর জানুয়ারিতে বাবা আসবেন বলে চিঠি এল৷ কিন্তু বাবা এলেন না৷ আমরা ভাবলাম, হয়তো ছুটি বাতিল হয়ে গিয়েছে৷ পরে দফতর থেকে চিঠি এল যে, বাবা ছুটি নিয়ে তারপরে আর কাজে যোগ দেননি৷ কোথাও বাবার খোঁজ মেলেনি৷ সাত বছর কাটার পরে সেনাবাহিনীর নিয়ম মেনে একটা পুতুলকে বাবা ভেবে তাঁর পারলৌকিক কাজও করেছি৷’’ বর্তমানে বিহারে কৃষি দফতরের কর্মী রাজকুমার৷ তিনি জানান, তাঁর মা জীবিত থাকলে খুব  খুশি হতেন৷ স্বামীর দেহ না দেখলেও বছর ১৭ আগে মাকে মেনে নিতে হয়েছিল যে, তিনি জীবিত নেই৷ রাজকুমার বলেন, ‘‘বাবা জীবিত থাকলেও মা শেষ জীবনে তাঁর মৃত্যুশোক বয়ে বেড়িয়েছেন৷