জিডিপি নির্ভর আর্থিক বৃদ্ধি নিয়ে সরকার যতই ঢাক পেটাক সম্প্রতি একটি আন্তর্জাতিক সমীক্ষার প্রতিবেদনে প্রকাশ পায় শিশু অপুষ্টিতে ভারত বিশ্বে শীর্ষস্থানে আছে৷ ভারতের প্রায় ১৯ শতাংশ শিশু পুষ্টিকর খাদ্য থেকে বঞ্চিত৷ এই ধরণের প্রতিবেদন তৈরী হয় চারটি মানদণ্ডের ওপর ---অপুষ্টি, ৫ বছরের কম বয়সি শিশুদের উচ্চতার তুলনায় ওজন কম, বয়সের তুলনায় উচ্চতা কম ও শিশু মৃত্যুর হার৷ প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে প্রায় ১৭ শতাংশ দেশবাসী অপুষ্টির শিকার৷ সরকার অবশ্য পদ্ধতিগত ত্রুটির কথা বলে এই প্রতিবেদন অস্বীকার করেছে৷ বিশ্ব ক্ষুধা সূচকে ১২৫টি দেশের মধ্যে নেপাল, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তানকে পিছনে ফেলে ভারতের স্থান ১১১তম৷ ২০২২ সালে১৪২টি দেশের মধ্যে ভারতের স্থান ছিল ১০৭তম৷
প্রবীন প্রাউটিষ্ট নেতা শ্রী প্রভাত খাঁ বলেন---প্রাউট দর্শনের প্রবক্তা বহু আগেই অপুষ্টির বিরুদ্ধে যুদ্ধের ডাক দিয়ে গেছেন৷ কিন্তু দেশের কোন সরকারই সে ডাকে সাড়া দেয়নি৷ তাই অপুষ্টি আজ ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করেছে৷ লক্ষ লক্ষ শিশু অপুষ্টিজনিত নানাব্যাধিতে ভুগছে৷ সরকার রাজ্যসভায় স্বীকার করেছে দেশে প্রায় সাড়ে ১৪ লক্ষ শিশু অপুষ্টির শিকার৷
শ্রীখাঁ বলেন প্রাউট প্রবক্তার মতে অপুষ্টির মূল কারণ বিশ্বে আর্থিক ব্যবস্থায় ধনসম্পদের অসন্তুলন৷ প্রাউট এর চিরস্থায়ী সমাধান৷ তবে এজন্যে খাদ্যাভাব সমস্যার আশু সমাধান জরুরি ভিত্তিতে করতে হবে৷
পৃথিবী ব্যাপী এই অপুষ্টি তথা সম্পদের অসন্তুলন ও ত্রুটিপূর্ণ বণ্টনের একমাত্র সমাধান হ’ল বহুমুখী উন্নয়ন পরিকল্পনা রূপায়িত করা৷ এই অসন্তুলন ও ত্রুটিপূর্ণ বণ্টনের একমাত্র সমাধান হ’ল বহুমুখী উন্নয়ন পরিকল্পনা রূপায়িত করা৷ এই পরিকল্পনা রচিত হবে একটি দেশে দারিদ্র্যের মাত্রা, যথাশীঘ্র মানুষের জীবনযাত্রার মান বাড়ানোর লক্ষ্য আর সারা পৃথিবীতে সুসংহত বিকাশ –এ সবের ভিত্তিতে৷ পৃথিবীতে স্থায়ী–স্থায়ী ত্রাণকার্য আর শিক্ষা ব্যবস্থার মানোন্নয়ন এই পরিকল্পনার অন্তর্ভুক্ত হবে৷
শ্রী খাঁ বলেন প্রাউটের অর্থনৈতিক পরিকল্পনায় মূল লক্ষ্য থাকবে ধনসম্পদের অসন্তুলন কমিয়ে আনা, প্রতিটি মানুষের হাতে ক্রয় ক্ষমতা দেওয়া, ১০০ শতাংশ কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা৷ অর্থনৈতিক পরিকল্পনার পাশাপাশি সার্বিক জনসেবামূলক পরিকল্পনাও নিতে হবে৷ এই সেবার কাজ একেবারে গ্রামস্তর পর্যন্ত নিয়ে যেতে হবে৷ সর্বপ্রকার দলীয় ও সাম্প্রদায়ীক ইত্যাদি সংকীর্ণতার উর্দ্ধে উঠে অধিক থেকে অধিকতর মানুষের কাছে সেবা পৌঁছে দিতে হবে৷ এই গুরু দায়িত্ব প্রাউটিষ্টদেরই নিতে হবে৷ কারণ অর্থনৈতিক বৈষম্য, অপুষ্টির চিরস্থায়ী সমাধান প্রাউটের বাস্তবায়নেই সম্ভব৷