সমাজ কে পাপমুক্ত করতে হলে অপরাধের উৎস বন্ধ করতে হবে---দাবী আমরা বাঙালীর

সংবাদদাতা
পি.এন.এ.
সময়

প্রবীন প্রাউটিষ্ট নেতা আমরা বাঙালী সংঘটনের প্রাক্তন সচিব শ্রী বকুলচন্দ্র রায় আর জি করের মর্মান্তিক ঘটনা প্রসঙ্গে বলেন--- যে বা যারা এই জঘন্য কাজের সঙ্গে যুক্ত তাদের কঠোর সাজা হোক৷ রাষ্ট্রের পুলিশ প্রশাসনকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় কোন আপোস করা চলবে না৷ তাদের নিরপেক্ষ ও কঠোর হতে হবে৷ বিচার ব্যবস্থার প্রতি যাতে মানুষ আস্থা না হারায় সে দিকটাও দেখতে হবে৷

শ্রী রায় বলেন--- তবে পুলিশ-প্রশাসন-বিচার ব্যবস্থা অপরাধীর শাস্তি দিতে পারে কিন্তু সমাজকে অপরাধ মুক্ত করতে পারে না৷ বিশেষ করে পুঁজিবাদ নির্ভর কেন্দ্রীত অর্থনৈতিক কাঠামোয় পুঁজিবাদী শোষক শ্রেণী ছাত্র-যুব সমাজকে সব সময় নানা সামাজিক অপকর্মের দিকে ঠেলে দিতে চায় তাদের শোষণের পথ কন্টকমুক্ত রাখতে৷ ছাত্র-যুব সমাজ যাতে শোষণের পথে বাধা হয়ে না দাঁড়ায়৷ ধর্ষণ একটি সামাজিক ব্যাধি, সমাজ থেকে এই ধরণের ব্যাধি নির্মুল করতে হলে শুধুমাত্র পুলিশ প্রশাসন ও বিচার ব্যবস্থার ওপর নির্ভর করলে চলবে না৷

শ্রী রায় আরও বলেন সমাজের সুচিতা বজায় রাখতে ও সমাজকে পাপমুক্ত করতে শিল্প সাহিত্য জগতের একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে৷ দুঃখের বিষয় আজকের শিল্প সাহিত্য সংস্কৃতি জগতের কুশিলবরা তাদের ভূমিকা যথাযথ পালন করছেন না৷ আমাদের মনে রাখতে হবে ভারতবর্ষের স্বাধীনতা সংগ্রামে দেশবন্ধু-সুভাষচন্দ্র, সূর্য সেন, বাঘা-যতীন, বিনয়-বাদল-দীনেশ সহ হাজার হাজার বাঙলার তরুণ-তরুণীর যেমন অবদান আছে, তেমনি অবদান আছে সেদিনের কবি সাহিত্যিক, শিল্পীদের---তাদের লেখনী শক্তি ছাত্র যুব সমাজকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করেছিল৷ আজ বিপরীতধর্মী শিল্প সাহিত্য ছাত্র-যুব সমাজকে অধঃপথে নিয়ে যাচ্ছে৷

শ্রী রায়ের কথায়--- প্রত্যেক মানুষের কতকগুলি সহজাত বৃত্তি আছে৷ যার কিছু বৃত্তি মানুষকে বিকাশের পথে নিয়ে যায় আবার কিছু বৃত্তি তাকে অবণতির দিকে নিয়ে যায়৷ কাম-সেইরকম একটি সহজাত বৃত্তি যা মানুষকে অবণতির দিকে নিয়ে যায়৷ কবি সাহিত্যিক শিল্পীদের ভূমিকা হবে তাদের লেখনীর মাধ্যমে যে সব বৃত্তি বিকাশের পথে নিয়ে যায় তাকে উৎসাহিত করা ও যে সব বৃত্তি অবণতির দিকে নিয়ে যায় তাকে নিরুৎ সাহিত করা৷ কিন্তু আজকের এক শ্রেণীর সাংস্কৃতিক জগতের কুশিলবরা বিপরীতটা করছে৷ সমাজে ব্যাপক নগ্ণ চিত্র, হীনরুচির নিম্নমানের যৌনতা মার্র্ক চলচ্চিত্র সঙ্গীত, অশ্লীল সাহিত্য মানুষকে নৈতিক অধঃপথের দিকে নিয়ে যাচ্ছে৷

তাই শুধুমাত্র প্রতিবাদ আন্দোলনের মাধ্যমে ধর্ষনের মত পাপ কাজ প্রতিহত করা যাবে না, এ বিষয়ে প্রাউটের পথ নির্দেশনা হলো---‘‘নূতন সাহিত্য-শিল্প-দর্শন-সঙ্গীত রচনা করতে হবে, উদ্ভাবন করতে হবে উন্নতর বাদ্যযন্ত্রের অর্থাৎ সমাজে শিল্প,সাহিত্য, সংস্কৃতির জগতে এক নূতন আলোড়ন তুলতে হবে৷’’ তবেই ছাত্রযুব সমাজের আত্মিক বিকাশ ঘটবে ও সমাজ পাপমুক্ত হবে৷