শোষণের অবসানে পৃথক কৃষি আইন নয় - বিকেন্দ্রিত অর্থব্যবস্থা চালু করতে হবে

সংবাদদাতা
নিজস্ব সংবাদদাতা
সময়

প্রাউটিষ্ট ইয়ূনিবার্র্সলের কেন্দ্রীয় সংঘটন সচিব আচার্য প্রসূনানন্দ অবধূত এক সাক্ষাৎকারে জানান--- এই মুহূর্তে দেশের মানুষের কাছে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো--- আর্থিক শোষণের অবসান ও আর্থিক উন্নয়নের মাধ্যমে জনসাধারণের জীবনযাত্রার মনোন্নয়ন৷ কিন্তু সত্যটা এই যে নূতন কৃষি আইনের দ্বারা  এর কোনটাই সম্ভব নয়৷ আর্থিক উন্নয়ন করতে হলে কৃষি ও শিল্পের সমন্বয়ে সুচিন্তিত পরিকল্পনা করতে হবে৷ একমাত্র প্রাউটিষ্টদের হাতেই সেই পরিকল্পনা আছে৷

তিনি অত্যন্ত জোর দিয়ে বলেন---পুঁজিবাদ নির্ভর কেন্দ্রিত অর্থনীতির পক্ষে আর্থিক শোষণের অবসান ও আর্থিক সমস্যার স্থায়ী সমাধান কোনটাই সম্ভব নয়৷ কৃষি বিল আইনে পরিণত হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাস---এই আইন কর্ষককে আত্মনির্ভর করবে৷ কিন্তু আইনে তো কর্ষকের ভাগ্য পুঁজিপতিদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে৷ পুঁজিপতির হাত ধরে আত্মনির্ভর হওয়া এক অলীক স্বপ্ন৷ কেন্দ্রিত আর্থিক ব্যবস্থায় যেখানে দেশের সিংহভাগ সম্পদ মুষ্টিমেয় কয়েকজন পুঁজিপতি কুক্ষিগত করে রাখে, সেখানে সাধারণ মানুষ, শ্রমিক কর্ষকের পক্ষে আত্মনির্ভর হওয়া আর ছঁুচের ছিদ্রপথে হাতির গলে যাওয়া একই ব্যাপার৷

আচার্য প্রসূনানন্দ বর্তমান রাজনীতির কথা বলতে গিয়ে বলেন---নূতন কৃষি আইনের পক্ষে বিপক্ষে যাঁরা আছেন উভয়েই বাস্তব অবস্থা থেকে বহু দূরে৷ উভয়ের কেউই কর্ষকের স্বার্থ-কে বড় করে দেখে না৷ জনসাধারণকে বশে রেখে রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করাই ওদের লক্ষ্য৷ দীর্ঘ ৭৪ বছর ধরে রাজনৈতিক নেতারা অজস্র প্রতিশ্রুতির বন্যা বইয়ে দিয়েছে, কিন্তু জনগণ যে তিমিরে ছিল সেই তিমিরেই আছে৷

তিনি প্রাউট (প্রগতিশীল উপযোগ তত্ত্ব)-এর ব্যাখ্যা করে বলেন--- আর্থিক শোষণ প্রতিহত করতে ও জনগণের দুর্দশা দূর করতে হলে একটাই উপায় আছে---তা হলো আর্থিক ব্যবস্থার সর্বক্ষেত্রে বিকেন্দ্রীকরণের নীতি রূপায়িত করতে হবে৷ তবেই কেন্দ্রিত অর্থনীতির অস্বাস্থ্যকর প্রভাব থেকে জনগণকে মুক্ত করা যাবে৷

তিনি দেশের অর্থনীতিবিদদের উদ্দেশ্যে বলেন---পুঁজিবাদ নির্ভর কেন্দ্রিত অর্থনীতির প্রভাব থেকে মুক্ত হয়ে একটু প্রাউটতত্ত্বের চর্র্চ করুন৷ মানুষের প্রকৃত কল্যাণের পথ খঁুজে পাবেন৷ শীততাপ নিয়ন্ত্রিত ঘরে বসে আর্থিক পরিকল্পনা নয়, মাঠে ময়দানে নেমে সাধারণ মানুষের চাওয়া-পাওয়া-মনের কথা বুঝে  নীচুস্তর থেকে আর্থিক ব্যবস্থা রূপায়িত করতে হবে৷ ব্লকভিত্তিক অর্থনৈতিক পরিকল্পনা দিয়েই শুরু হবে প্রাউটের বিকেন্দ্রিত আর্থিক ব্যবস্থা রূপায়ণ৷ প্রতিটি ব্লকে কৃষিভিত্তিক ও কৃষিসহায়ক শিল্প গড়ে তুলতে হবে সমবায়ের মাধ্যমে৷

পরিশেষে তিনি বলেন এখন প্রাউটিষ্টরা সারা দেশে প্রাউটের বিকল্প বিকেন্দ্রিত অর্থনীতির প্রচার করবে৷ প্রাউটিষ্টদের শ্লোগান হবে---‘‘শোষণের অবসানে কেন্দ্রিত অর্থনীতি নিপাত যাক বিকেন্দ্রিত অর্থব্যবস্থা চালু কর’’৷