গত ২রা ডিসেম্বর কলকাতার মোহিত মৈত্র মঞ্চে শ্রীশ্রী আনন্দমূর্ত্তিজী প্রবর্তিত আনন্দমার্গ দর্শনের বিভিন্ন দিক নিয়ে এক মনোজ্ঞ আলোচনাসভার আয়োজন করা হয়৷ তার সঙ্গে এক মনোজ্ঞ প্রভাত সঙ্গীতানুষ্ঠানও হয়৷
আলোচনা সভার শুরুতে স্বাগত ভাষণ দেন শ্রী মনোজ কুমার সরকার ৷ তিনি তাঁর ভাষণে মানবকল্যাণে মার্গগুরুদেবের বহুমুখী অবদানের ওপর আলোকপাাত করেন৷
বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের বাঙলা বিভাগের অধ্যাপক ডঃ অরুণ কুমার ঘোষ তাঁর ভাষণে বলেন, মানুষের সার্বিক আচরণের নির্র্যসই হল মানব ধর্ম৷ শ্রীশ্রীআনন্দমূর্ত্তিজী এই মানব ধর্মের প্রচার করেছেন৷ তিনি মানব সমাজের সার্বিক কল্যাণের জন্যে যা কিছু প্রয়োজন সমস্ত বিষয়েই ভাবনা-চিন্তা করেছেন ৷ কোন বিশেষ ধর্মমতের প্রচার তিনি করেননি, সমস্ত ধর্মমতের সমস্ত প্রকার ডগমার ঊধের্ব উঠে পৃথিবীর সমস্ত মানুষেরই সার্বিক বিকাশ চেয়েছেন৷ তাই তিনি লোকাতীতের সঙ্গে সঙ্গে লোকায়ত সমস্ত বিষয় নিয়ে ভাবনা-চিন্তা করেছেন, সর্বক্ষেত্রের সমস্ত সমাধানের পথ দেখিয়েছেন৷
রেণেশাঁ ইয়ূনিবার্র্সলের কেন্দ্রীয় সচিব আচার্য রবীশানন্দ অবধূত তাঁর ভাষণে বলেন, শ্রীশ্রী আনন্দমূর্তিজী ছিলেন একাধারে ধর্মগুরু, মহান শিক্ষাবিদ, ভাষাবিজ্ঞানী, সঙ্গীতকার, শিশুসাহিত্যিক, তার সঙ্গে সঙ্গে যুগান্তকারী সামাজিক অর্থনীতি দর্শন---প্রাউটেরও প্রবক্তা ৷
সভার সভাপতি আচার্য সর্বেশ্বরানন্দ অবধূত বলেন, শ্রীশ্রী আনন্দমূর্ত্তিজীর প্রতিভা ছিল প্রকৃতপক্ষে সর্বতোমুখী৷ মানব সমাজের এমন কোন দিক নেই যে দিকের ওপর শ্রীশ্রী আনন্দমূর্ত্তিজী গভীরভাবে আলোচনা করে ওই সমস্ত ক্ষেত্রেই সমস্ত সমস্যার সমাধানের পথ দেখান নি৷ এক কথায় আদর্শ মানুষ ও আদর্শ সমাজ তৈরী করাই ছিল তাঁর সর্র্বনুসূ্যত দর্শনের মূল কথা৷
অনুষ্ঠানের শুরুতে স্থানীয় ‘রাওয়া’ শিল্পী শ্রী জয়ন্ত সরকার উদ্বোধনী সঙ্গীত হিসেবে ‘সবারে করি আহ্বান’ --- এই প্রভাত সঙ্গীতটি পরিবেশন করেন৷ বিশিষ্ট শিল্পী তানিয়া দাম বেশ কিছু প্রভাত সঙ্গীত পরিবেশন করে সবাইকে আনন্দ দেন৷
নৃত্যাঞ্জলী পর্বে প্রভাত সঙ্গীত অবলম্বনে ‘মালশ্রী’ শিল্পীগোষ্ঠী পরিবেশিত ‘কৃষ্ণোস্তি পুরুষোত্তম’--- এই নৃত্যানুষ্ঠানটি দর্শকমহলে উচ্চ প্রশংসিত হয়৷ এই নৃত্যানুষ্ঠানে নির্দেশনায় ছিলেন শ্রীমতী অর্পিতা ভেঙ্কটেশ৷ অনুষ্ঠান শেষে সবাইকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন শ্রী মাধব বসাক৷ অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন শ্রী গৌরাঙ্গ ভট্টাচার্য৷