শুধু কর্ষক আন্দোলন নয়-চাই সার্বিক শোষণ বিরোধী আন্দোলন

সংবাদদাতা
নিজস্ব সংবাদদাতা
সময়

কর্ষক হত্যার নিন্দা করে প্রাউটিষ্ট নেতা শ্রী প্রভাত খাঁ বলেন যেভাবে  উত্তর প্রদেশের লখিমপুরে কর্ষক হত্যা হয়েছে তা বিশ্বের বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশকে বিশ্বের চোখে হেয় করে দিয়েছে৷ কর্ষক আইন পুঁজিপতির স্বার্থরক্ষার্থে তাই এই আইন বাতিল হওয়া প্রয়োজন৷ তবে শুধু আইন বাতিল করলেই সার্বিক কল্যাণ হবে না৷

তাই শুধু বিক্ষিপ্তভাবে কর্ষক আন্দোলন নয়,  সারা ভারতে আজ প্রয়োজন অর্থনৈতিক গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলন৷ তাতে শুধু কর্ষক নয়, সমস্ত শোষিত নিপীড়িত মানুষ বাঁচার পথ পাবে৷

সংবিধানের নির্দ্দেশ মতাবেক ভারতে যুক্তরাষ্ট্রীয় গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা কায়েম আছে৷ কিন্তু এখানকার কেন্দ্রীয় শাসকগণ দেখা গেছে যে সেটাকে দলীয় স্বার্থে ব্যবহার করে ছলবল কৌশলে৷ কেন্দ্রের শাসক রাজ্যের সরকারকে ভেঙ্গে দিয়ে নিজেদের অধীনে এনে শাসন ক্ষমতা কায়েম করে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে পদদলিত করে৷ পূর্বতন কংগ্রেস সরকার এর নজির রেখে গেছে৷ কংগ্রেসের দেখানো পথেই বর্তমান সরকার হাঁটছে৷ তাই এই শাসন ব্যবস্থায়ও দেশবাসী সন্তুষ্ট নয়৷ এদের আর্থিক সংস্কার নীতিও জনগণকে পথে বসিয়েছে৷ তাছাড়া বিদেশী তাড়ানোর নামে যা কান্ড করছে সেটা মানবতাকে ও গণতন্ত্রকে অবজ্ঞা করে সাম্প্রদায়িকতাকে সামনে রেখে৷ ধর্ম নিরপেক্ষতাকে ও বিশ্বৈকতাবোধ এদের হাতে ধবংস হচ্ছে৷ ধনীদেরই তোষণ করে গরীব কোটি কোটি সাধারণ নাগরিকদের জীবন অতিষ্ট করে তুলছে৷ মানুষের মনে আতঙ্ক ছড়িয়ে তারা গণতন্ত্রকে এক নক্কারজনক অবস্থায় নিয়ে যাচ্ছে৷ শ্রী খাঁ বলেন--- এরা নিজেদের ব্যর্থতাকে চাপা দিতে গিয়ে পরিহাসের পাত্রই হচ্ছে অর্থনীতিবিদদের চোখে৷ এতে ক্ষুদ্ধ হয়ে শাসক দলের মন্ত্রী এমন কি কিছু তাঁবেদার দলের নেতা, নেত্রী ও এই বাংলার বড়োমাপের নেতা নোবেল বিজয়ী অভিজিৎ ব্যানার্জীকে শুধু হেয় করেননি, এমন কি তাঁর ব্যষ্টি জীবনকে নিয়ে অতি নিম্নমানের বক্তব্য রেখে বাঙালী জনগোষ্ঠীর মুখ পুড়িয়ে বসেছেন৷ এই রাজ্যের কিছু মানুষ অতীতেও নেতাজীর মতো মহান ব্যাষ্টিকে কুৎসিতভাবে হেয় প্রতিপন্ন করে নিজেদেরই সংকীর্ণতা ও নীচতাকে প্রকাশ করে গেছেন৷ তাতে দেশের ও দশের ক্ষতিই হয়েছে আর ভারতের তথা বাংলার সর্বনাশ হয়েছে৷

আজ সমস্যা সংকূল পশ্চিম বাংলায় শত শত মীরজাফরের জন্ম হয়েছে যারা নিজেদের কুৎসিৎ ও সঙ্কীর্ণ স্বার্থকে চরিতার্থ করতে সাম্প্রদায়িকতার ধবজাধারীদের হয়ে ২ কোটি বাঙালীকে বিতাড়ণের হুমকী দিয়ে চলেছে এন.আর.সির মতো কালাকানুনের অস্ত্রের আঘাতে৷ অসমের হাজেলাতো ১৯লক্ষ হতভাগ্যকে নাগরিকত্ত্বহীন করে তাদের মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছে৷

ইতিহাস পর্যালোচনা করে দেখা গেছে ‘বাঙলা চিরকালই একটু ভিন্নপথেই চলে৷ ‘বাঙলাকে বশে আনতে হলে বাঙলার কৃষ্টি সংস্কৃতিকে মান্যতা দিতে হবে, বাংলাভাষাকে মর্য্যাদা দিতে হবে আর বাঙলার হিন্দুও মুসলমান জনগোষ্ঠী এক কথায় বাঙালী জনগোষ্ঠীকে মর্য্যাদা ও সম্মান দিতে হবে তবে এই বাঙলাকে বশে আনা যাবে৷

তাছাড়া জঘন্য সাম্প্রদায়িকতাকে এই পশ্চিম বাঙলার জনগণ কোনদিন গ্রহণ করেনিও করবে না৷

অত্যন্ত বেদনার ও লজ্জার কথা দেশ নেতারা তো স্বার্থের লোভে সাম্প্রদায়িকতা ভিত্তি ভারত ভাগ করেছেন--- হিন্দুস্তান ও পাকিস্তান৷ আজ লড়াই করে ধবংস হচ্ছে দুটো দেশই৷

আর এদেশে দলছুট দলগুলিতো নির্বাচনে লড়ছে সেই সাম্প্রদায়িকতার সুড়সুড়ি দিয়েই অল্পবিস্তর৷

তাই সমগ্র ভারতবাসী যেন এইসব নিয়ে মাথা না ঘামিয়ে হিন্দু মুসলমান সকলেই যেন ভারতীয়হয়ে চলতে পারে৷ মানবতাকে মর্য্যাদা দিয়ে ঐক্যবদ্ধ হয়ে চলতে শেখে৷ ভারতবর্ষ ৪৪টি জনগোষ্ঠীর দেশ৷ রাজনৈতিক দলাদলিতে ভারতের এই ৪৪ টি সমাজ ধবংস হতে বসেছে৷ তাকে রক্ষা করতে শুধু কর্ষক আন্দোলন নয় দরকার ঐক্যবদ্ধভাবে সার্বিক শোষণ বিরোধী আন্দোলন করা আর ব্লকভিত্তিক কৃষি সহায়ক ও কৃষিজাত দ্রব্যের উপর নির্ভরশীল শিল্প সমবায়ের মাধ্যমে শিল্প গড়ে বিকেন্দ্রীকৃত অর্থনৈতিক ব্যবস্থার পথে হাঁটা৷ তবে ভারত বাঁচবে কর্ষক বাঁচবে সমস্ত শোষিত মানুষ বাঁচবে ও গণতন্ত্র যথার্থ স্বীকৃতি পাবে!