মাস তিনেক আগে ফ্লোরিডা থেকে তাঁদের নিয়ে মহাকাশযান রওনা দিয়েছিল মহাশূন্যের উদ্দেশে৷ সেই বাহন ফিরে এসেছে পৃথিবীতে৷ কিন্তু এখনও মহাকাশেই আটকে আছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত আমেরিকান মহাকাশচারী সুনীতা উইলিয়ামস৷ মহাকাশে তাঁর সঙ্গী আর এক আমেরিকান বুচ উইলমোর৷ পৃথিবীপৃষ্ঠ থেকে ৪২০ কিলোমিটার উচ্চতায় আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনে রয়েছেন তাঁরা৷ সেখান থেকেই সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন দুই নভশ্চর৷ প্রতিটি প্রশ্ণের উত্তরও দিয়েছেন৷ গত শুক্রবার রাতে তার সরাসরি সম্প্রচার করেছে আমেরিকান মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা৷ মহাকাশে কেমন দিন কাটছে? যে যানে চড়ে গিয়েছিলেন, তা ফেরত পাঠানোর সময় কেমন অনুভূতি হল? এমনই নানা প্রশ্ণের মুখোমুখি হয়েছেন সুনীতারা৷ উইলমোর বলেন, ‘‘আমরা কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে এসেছি৷ আমরা মহাকাশযানের পাইলট৷ তাই সেই যানকে খালি অবস্থায় ফেরত চলে যেতে দেখা আমাদের জন্য বেশ কঠিন৷ কিন্তু জীবন এমনই৷’’
সুনীতা বলেন, ‘‘আমরা যে পেশার সঙ্গে যুক্ত, তা এমনই অনিশ্চিত৷ আমরা আগেই আন্দাজ করেছিলাম, আমাদের পৃথিবীতে ফেরা কিছুটা পিছিয়ে যেতে পারে৷ কিন্তু আমরা ভাল আছি৷ এটাই আমাদের সবচেয়ে আনন্দের জায়গা৷ আমি মহাকাশে থাকতেই ভালবাসি৷’’
গত ৫ জুন ফ্লোরিডা থেকে সুনীতাদের নিয়ে মহাকাশে পাড়ি দিয়েছিল বোয়িং স্টারলাইনার৷ গন্তব্য ছিল মহাকাশে আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশন৷ আট দিন পরেই সেখান থেকে একই যানে চড়ে তাঁদের পৃথিবীতে ফিরে আসার কথা ছিল৷ কিন্তু মহাকাশযানটিতে ত্রুটি ধরা পড়ে৷ তার ভিতরে হিলিয়াম গ্যাস লিক করছিল৷ নাসা জানায়, এই অবস্থায় ওই যানে চড়ে পৃথিবীতে ফেরা সুনীতাদের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে৷ তার পর আমেরিকান সংস্থাটি সিদ্ধান্ত নেয়, আগামী ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মহাকাশেই থাকবেন দুই নভশ্চর৷ তাঁদের আরও কিছু কাজ দেওয়া হয়৷ ফেব্রুয়ারিতে মহাকাশে সুনীতাদের আনতে যাবে ইলন মাস্কের সংস্থা স্পেস এক্সের বিশেষ মহাকাশযান৷ আট দিনের সফরের মেয়াদ আট মাস হয়ে যাওয়ায় বাকি সময়ে মহাকাশে নানা গবেষণার কাজ চালাবেন সুনীতারা৷ কিছু দিন আগে ত্রুটিপূর্ণ বোয়িং স্টারলাইনারটিকে তারা পৃথিবীতে ফেরত পাঠিয়ে দিয়েছেন৷ এই মুহূর্তে আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনে সুনীতারা একা নন, আছেন মোট ১২ জন মহাকাশচারী৷ কিছু দিন আগেই একটি মহাকাশযানে পৌঁছেছেন দু’জন রাশিয়ান এবং এক জন আমেরিকান৷ চলতি মাসে আরও দু’জনের স্পেস স্টেশনে যাওয়ার কথা৷