এই সাফল্যের রসায়নটা কী? প্রশ্ণ শুণে হাসলেন ভারতীয় মেয়েদলের কোচ মায়মল রকি৷ শুক্রবার নেপালের বীরনগর থেকে ফোনে তার জবার, ‘‘কঠোর পরিশ্রম, অদম্য ইচ্ছাশক্তি ও দলের ২০জনের একটা পরিবার হয়ে ওঠাই সাফল্যের আসল কারণ৷’’ সংগঠক নেপালকে হারিয়ে এদিনিই ফের ‘সাফ কাপ চ্যাম্পিয়ন’ ভারতের মেয়েরা৷ রাংশালা স্টেডিয়ামে কয়েকহাজার প্রতিপক্ষ সমর্থকদের তীব্র চিৎকারের মধ্যে শেষ পর্যন্ত ৩-১ গোলে দালিমা সিববাররা জিতলেন বটে,তবে তাদের হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করতে হলো৷ একটা সময় ম্যাচ ১-১ হয়ে গিয়েছিল৷ ভারতের হয়ে তিনটি গোল করেন দালিমা, সঞ্জু ও অঞ্জু৷ দালিমার গোল ৩০ গজ দূর থেকে দূরন্ত ফ্রি কিকে৷ ‘‘প্রতিযোগিতায় চারটি ম্যাচ খেললাম৷ জানতাম, এটাই সবচেয়ে কঠিন হবে৷ কারণ নেপালের মাঠে খেলা হয়৷ ওরা ১২জন মানে,সমর্থকদের নিয়ে আমাদের প্রতিপক্ষ হবে৷ তাই একটা নির্দিষ্ট পরিকল্পনা নিয়ে নেবে ছিলাম৷ সেটাই সাফল্য দিয়েছে৷’’ কাঠমাণ্ডু যাওয়ার বিমান ধরতে যাচ্ছিলেন সরাসরি মাঠ থেকে৷ দেশে ফেরার তাড়াও ছিল৷ তাড়াহুড়োর মধ্যেও সঙ্গীতা বাঁশফোরদের কোচের মুখ থেকে বেরোলো দলগত সংহতির জয়গান৷ বলছিলেন, ‘‘ইন্দুমতি এবার ৫ গোল করেছে৷ কিন্তু তবুও আমি ওকে সেরা ফুটবলারের কৃতিত্ব দেব না৷ ২০জনকে কৃতিত্ব দেব৷ এবার লক্ষ্য মায়ানমারে অলিম্পিক্সের যোগ্যতা অর্জন৷ ম্যাচের জন্য প্রস্তুত হওয়া৷’’
ভারতের টানা জয়ের ইতিহাসের সঙ্গে এদিন নিজেও একটা ইতিহাসে ঢুকে পড়লেন ‘সাফ’ জয়ী কোচ৷ দেশের মেয়ে ফুটবল দলে ইতিহাসে প্রথম মে কোচ হিসাবে খেতাব জিতলেন গোয়ার মায়মল৷ নিজে একসময় এ্যাথলিট ছিলেন৷ সেখান থেকে আসে ফুটবলে৷ রাইট ব্যাক হিসাবে দেশের হয়ে খেলেছেন৷ পরে ‘এ’ লাইসেন্স পাস করেন বছর পঁয়ত্রিশের ময়মাল৷ বলছিলেন ‘‘দেশের প্রথম মেয়ে কোচ হিসাবে সফল হলাম৷ এই সাফল্যটা জীবনের সেরা প্রাপ্তি৷’’
গতবার শিলিগুড়িতে যে মেয়েরা চ্যাম্পিয়ন করেছিলেন ভারতকে, তাদের পাঁচজন ছিলেন এই দলে গোল কিপার অদিতি চৌহান দুর্দান্ত খেলেন৷ বাঁচান অন্তত তিনটি নিশ্চিত গোল৷ দলে ছিলেন বাংলার মেয়ে সঙ্গীতা বাঁশফোরও৷ বলছিলেন, ‘আমরা চ্যাম্পিয়ন হব শপথ নিয়েই নেমেছিলাম৷ এবারের জয়টা অনেক বেশী কঠিন ছিল৷’