টেবল টেনিসে দাপট দেখাল বাংলা৷ জাতীয় গেমসে দলগত ইভেন্টে সোনা জিতল বাংলার পুরুষ ও মহিলাদের দল৷ দু’টি ফাইনালেই তারা হারাল মহারাষ্ট্রকে৷ জাতীয় গেমসে বাংলার মুখ উজ্জ্বল করলেন ঐহিকা মুখোপাধ্যায়, সুতীর্থা মুখোপাধ্যায়, অনির্বাণ ঘোষ, সৌরভ সাহারা৷ জাতীয় গেমসে বাংলার ১১টি সোনা হয়ে গেল৷ পাশাপাশি আটটি রুপো এবং ১১টি ব্রোঞ্জ রয়েছে৷ সব মিলিয়ে ৩০টি পদক নিয়ে বাংলা রয়েছে ১৩ নম্বরে৷
প্রথম ফাইনালে মুখোমুখি হয়েছিল দুই রাজ্যের মহিলা দল৷ ‘বেস্ট অফ থ্রি’ ফরম্যাটে হয়েছে খেলা৷ অর্থাৎ, যে দল আগে তিনটি ম্যাচ জিতবে সেই দল সোনা জিতবে৷ প্রতিটি ম্যাচও ছিল ‘বেস্ট অফ থ্রি গেমস’ ফরম্যাটে৷ অর্থাৎ, যে প্রতিযোগী তিনটি গেম জিতবেন তিনি ম্যাচ জিতবেন৷ মহিলাদের প্রথম ম্যাচ ছিল সুতীর্থা মুখোপাধ্যায় ও স্বস্তিকা ঘোষের মধ্যে৷ প্রথম গেম জেতেন সুতীর্থা৷ দ্বিতীয় গেমে ফিরে আসেন স্বস্তিকা৷ সমতা ফেরান তিনি৷ তৃতীয় গেম আবার সুতীর্থা জিতে নেন৷ তবে স্বস্তিকাও ছাড়ার পাত্রী ছিলেন না৷ চতুর্থ গেম জেতেন তিনি৷ নির্ণায়ক গেমে নিজের অভিজ্ঞতা কাজে লাগান বাংলার মেয়ে৷ পঞ্চম গেম জিতে ম্যাচ জিতে যান সুতীর্থা (১১-৮, ৮-১১, ১৪-১২, ২-১১, ১১-৫)৷ দ্বিতীয় ম্যাচে ঐহিকা মুখোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে নামেন দিয়া চিতালে৷ মহারাষ্ট্রকে খেলায় ফেরান দিয়া৷ ঐহিকাকে দাঁড়াতে দেননি তিনি৷ পর পর তিনটি গেম জিতে ম্যাচ জিতে নেন দিয়া (১২-১০, ১১-৬, ১১-৫)৷ তৃতীয় ম্যাচ ছিল বাংলার পয়মন্তী বৈশ্য বনাম মহারাষ্ট্রের তানিশা কোটেজার৷ প্রথম দু’টি গেম জেতেন পয়মন্তী৷ তৃতীয় গেম জিতে আশা বাঁচিয়ে রেখেছিলেন তানিশা৷ কিন্তু চতুর্থ গেমে হারতে হয় তাঁকে৷ পয়মন্তী (১১-৮, ১১-৭, ৬-১১, ১১-৬) আবার বাংলাকে এগিয়ে দেন৷ নিজের প্রথম ম্যাচ হারলেও হাল ছাড়েননি ঐহিকা৷ চতুর্থ ম্যাচ খেলতে নামেন তিনি৷ প্রতিপক্ষ স্বস্তিকা৷ দিয়ার কাছে হারের জবাব তিনি দেন স্বস্তিকাকে হারিয়ে৷ পর পর তিনটি গেম জিতে নেন বাংলার এক নম্বর টেবল টেনিস তারকা (১১-৮, ১১-৬, ১৩-১১)৷ ঐহিকার জয়ের সঙ্গেই ৩-১ ব্যবধানে ফাইনাল জিতে নেয় বাংলার মহিলা দল৷ ঘরে আসে সোনা৷ মহিলাদের ফাইনালের সময় গ্যালারিতে বসে নিজেদের ফাইনালের অপেক্ষা করছিল পুরুষদের দল৷ ঐহিকা যেখানে শেষ করলেন সেখান থেকে শুরু করলেন অনির্বাণরা৷ প্রথম ম্যাচে মহারাষ্ট্রের যশ মোদীকে হারান অনির্বাণ৷ খেলা গড়ায় পাঁচ গেমে৷ অনির্বাণ প্রথম গেম জিতলেও তার পরের দু’টি গেম জেতেন যশ৷ দেখে মনে হচ্ছিল এগিয়ে যাবে মহারাষ্ট্র৷ কিন্তু শেষ দু’টি গেম জিতে ম্যাচ নিজের দখলে আনেন অনির্বাণ (১১-৭, ১০-১২, ৬-১১, ১১-৮, ১১-৪)৷
অনির্বাণকে একটু লড়তে হলেও দ্বিতীয় ম্যাচ হাসতে হাসতে জেতেন আকাশ পাল৷ মহারাষ্ট্রের রেগান আলবাকার্ককে পর পর তিনটি গেমে হারিয়ে দেন তিনি (১১-৫, ১১-৮, ১২-১০)৷ আকাশের ম্যাচের পর সোনা জয় ছিল সময়ের অপেক্ষা৷ বাকি কাজটি করেন সৌরভ সাহা৷ তিনি হারান চিন্ময় সৌম্যকে৷ প্রথম দুটি গেম জেতেন সৌরভ৷ তৃতীয় গেম জিতে শেষ আশা বাঁচিয়ে রেখেছিলেন চিন্ময়৷ কিন্তু চতুর্থ গেমে দাপট দেখান বাংলার খেলোয়াড় (১১-৭, ১১-৮, ৮-১১, ১১-৬)৷ সৌরভের জয়ের সঙ্গেই আরও একটি সোনা আসে বাংলার ঝুলিতে৷ এ বারের জাতীয় গেমস প্রমাণ করে দিল যে টেবল টেনিসে এই মুহূর্তে বাংলাই সেরা৷ বাকিরা ধারেকাছেও নেই৷