টর্নেডোর আক্রমণে বিধবস্ত জলপাইগুড়ি

সংবাদদাতা
পি.এন.এ.
সময়

হঠাৎ টর্নেডোর প্রকোপে বিধবস্ত অবস্থা হয়েছে জলপাইগুড়ির কিছু গ্রামের৷ প্রায় ৩০ ফুট লম্বা শিমুল গাছের সবচেয়ে উঁচু ডালে ঝুলে রয়েছে তোষক৷ কোনও গাছের মগডালে আটকে রয়েছে প্লাস্টিকের চেয়ার৷ যে দিকে তাকানো যায়, কোনও বাড়ির মাথা চোখে পড়ে না৷ সে সব দুমড়ে মুচড়ে পড়ে রয়েছে মাটিতে৷ এ কোন গ্রাম! গত রবিবারের মিনিট কয়েকের ঝড় জলপাইগুড়ির ময়নাগুড়ির বার্নিশকে বদলে দিয়েছে৷ গ্রামের বাসিন্দারা বলছেন, ‘‘গ্রামকে গুঁড়িয়ে দিয়েছে৷’’

জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, মৃতের সংখ্যা চারই, নতুন করে মৃত্যুর খবর নেই৷ জেলায় আহতের সংখ্যা অন্তত একশো৷ নতুন করে মৃত্যুর খবর না এলেও গত রবিবার বিকেলের ঝড়ের আতঙ্ক গত সোমবারেও কাটিয়ে উঠতে পারেননি ময়নাগুড়ির বার্নিশ, পুঁটিমারি, রাজারহাট এলাকার বাসিন্দারা৷ সব থেকে বেশি ক্ষতি হয়েছে বার্নিশ এলাকায়৷ ময়নাগুড়ি এলাকায় এক হাজারের উপরে বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে৷ বড় বাঁশঝাড় উপড়ে গিয়েছে৷ এলাকায় কাঁচা টিনের বাড়ি অবশিষ্ট নেই৷ বিস্তীর্ণ এলাকায় বিদ্যুতের খুঁটিও ধরাশায়ী৷ যুদ্ধকালীন তৎপরতায় চলছে ধবংসস্তূপ থেকে তুলে বাড়ি-ঘর মেরামতের কাজ৷

বছর পঞ্চান্নর পিন্টু রায় বলছিলেন, ‘‘আকাশে কালো মেঘ দেখে ভাবলাম, হয়তো মুষলধারে বৃষ্টি হবে৷ তাই আর ঘরের বাইরে বেরোইনি৷ কিন্তু উঠল ঝড়, মাথা ঘুরে পড়ে গেলাম৷ মনে হল, ঝড় যেন আমাকে টানতে টানতে নিয়ে যাচ্ছে৷ মাটি ঁকড়ে ধরেছি, তবু ঝড় টেনে নিয়ে যাচ্ছে৷ তার পরে আর কিছু মনে নেই৷ যখন জ্ঞান ফিরল, তখন চার দিকের কিছু আর চিনতে পারছি না৷ আমাদের গ্রাম এমন ছিল না!’’

রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ওইদিন রাতেই কলিকাতা থেকে উত্তরবঙ্গে পৌঁছান৷ বাগডোগরা বিমান বন্দর থেকে সড়কপথে জলপাইগুড়ি পৌঁছে মৃতদের বাড়ীতে ও আহতদের দেখতে হাসপাতালে যান৷ পরদিন ত্রাণশিবিরগুলি পরিদর্শন করেন ও ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামগুলিতে ঘোরেন৷