করোনাকালে আর্থিক বৈষম্য বৃদ্ধির এক করুণ প্রতিবেদন প্রকাশ করলো আন্তর্জাতিক আর্থিক সংস্থা ‘অক্সফ্যাম ইন্টারন্যাশনাল’৷ সম্প্রতি সুইজারল্যাণ্ডের দাভোসে সমবেত হয়েছিল বিশ্বের ধনকুবের দল৷ অক্সফ্যাম ইন্টারন্যাশনালের এগজিকিউটিভ ডিরেক্টর গ্যাব্রিয়েলা বুচার ধনকুবেরদের সমাবেশকে বলেন---নজিরবিহীন মুনাফা লোটার আনন্দ উদ্যাপনে মিলিত হয়েছিলেন ধনকুবেরের দল৷
ধনতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থায় অর্থনৈতিক বৈষম্য সবসময়ই বেদনাদায়ক৷ কিন্তু তা কতটা নির্দয় ও অমানবিক হতে পারে তারই ভয়াবহ চিত্র ধনকুবেরদের আন্তর্জাতিক মঞ্চে তুলে ধরে অক্সফ্যাম ইন্টারন্যাশনাল৷ করোনাকালে একটি বাইরাস কিভাবে বিশ্বের আর্থিক চিত্র বদলে দেয় তা নিয়ে সমীক্ষা চালায় অক্সফ্যাম৷ তারই প্রতিবেদন প্রকাশ করে অক্সফ্যাম৷ প্রতিবেদনটির নাম দেয় ‘প্রফিটিং ফ্রম পেইন’৷ করোনা ও লক্ডাউনের প্রভাবে যখন চরম সঙ্কটে বিশ্বের কোটি কোটি মানুষ,অনাহারে অর্ধাহারে দিন কাটিয়েছে, সেই সময় খাদ্য ও শক্তি ক্ষেত্রে মূল্যবৃদ্ধি থেকে অমানবিকভাবে মুনাফা লুটেছে খাদ্য ও শক্তিক্ষেত্রে যুক্ত ধনকুবেররা৷ অক্সফ্যামের প্রতিবেদনে প্রকাশ করোনাকালে প্রতি দুদিনে ধনকুবেরদের সম্পদ বৃদ্ধি পেয়েছে ১০০ কোটি ডলার৷ অর্থাৎ খাদ্য ও শক্তিক্ষেত্রে মূল্যবৃদ্ধির হারও বেড়েছে ধনকুবেরদের মুনাফা লোটার সৌজন্যে৷ এ যেন কারো সর্বনাশ তো কারো পৌষমাস৷
অক্সফ্যামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে করোনাকালে প্রতি ত্রিশঘন্টায় একজন ধনকুবের হয়েছে৷ মোট ৫৭৩ জন ধনকুবের হয়েছে করোনা সঙ্কটকে মুনাফা করে৷ সেই সময় দুর্বিষহ হয়ে উঠেছিল সাধারণ মানুষের জীবন৷ দারিদ্র দূরীকরণ প্রহসনে পরিণত হয়৷ চরম দারিদ্র্যের কবলে পড়ে ২৬ কোটি ৩০ লক্ষ মানুষ৷ অক্সফ্যামের প্রতিবেদনে প্রকাশ গত ২৩ বছরে ধনুবেরদের যে পরিমাণ সম্পদ বৃদ্ধি হয়েছিল তা ছাড়িয়ে যায় করোনার প্রথম দুবছরে৷
বিশ্বের পাঁচ বৃহত্তম শক্তি সংস্থা করোনাকালে প্রতিসেকেণ্ডে ২ হাজার ৬০০ ডলার মুনাফা লুটেছে৷ ধনকুবেরদের সম্পত্তি বিশ্বে জি.ডি.পির প্রায় ১৪ শতাংশ৷ খাদ্যক্ষেত্রে ধনকুবেরদের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ৬২ জন৷