সম্পাদকীয়

নেতৃত্বের সংকট

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

মোদি সরকারের ১০ বছর অতিক্রান্ত৷ কোন প্রতিশ্রুতিই রক্ষা করা যায়নি৷ শুধু মোদি সরকার নয়, সেই স্বাধীনতার পর থেকেই আজ পর্যন্ত প্রতিটি সরকার পুঁজিপতিদের নিয়ন্ত্রণে চলে৷ ফলে স্বাধীনতার কি সুখ জনগণ জানে না৷ দেশের সিংহ ভাগ সম্পদ শীর্ষস্থানীয় পুঁজিপতিদের করায়ত্ব৷ অপরদিকে দেশের বিশাল এক অংশ আজ চরম দারিদ্রের শিকার৷ দেশের অধিকাংশ ছাত্র-যুবা বেকারত্বের জ্বালায় জ্বলে পুড়ে মরছে৷ জীবনকে সুন্দর করে বিকাশের কথা ভাববার অবসর নেই তাদের৷ --- অন্ন চিন্তা চমৎকারা! অথচ স্বাধীনতার আগে এদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামী থেকে শুরু করে প্রতিটি সাধারণ মানুষের স্বপ্ণ ছিল---‘ভারত আবার জগৎ সভায় শ্রেষ্ঠ আসন লবে৷....

আনন্দপূর্ণিমার শপথ

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

আগামী ২৩শে মে,২০২৪ বৈশাখী পূর্ণিমা, প্রাউট–প্রবক্তা শ্রীপ্রভাতরঞ্জন সরকারের, যিনি ধর্মগুরু মহাসম্ভূতি শ্রীশ্রীআনন্দমূর্ত্তিজী নামে বিশ্ববাসীর কাছে সমধিক পরিচিত–তাঁর শুভ ১০৩ তম আবির্ভাব তিথি৷ সারা বিশ্বের আনন্দমার্গীদের কাছে এই বৈশাখী পূর্ণিমা আনন্দপূর্ণিমা রূপে পরিচিত৷ এই পুণ্য তিথিতে মহাসমারোহে সর্বত্র মার্গগুরুদেবের ১০৩ তম জন্ম জয়ন্তী পালন করা হচ্ছে৷

অপ্রতিরুদ্ধ আনন্দমার্গ

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

১৯৮২ সালের ৩০শে এপ্রিল৷ গত কয়েক শতাব্দীর ইতিহাসে বোধকরি সবচেয়ে পৈশাচিকতম ঘটনা ঘটে গেল আজকের সভ্যতার পীঠভূমি কলকাতার বিজন সেতু ও বণ্ডেল গেটের মত জনাকীর্ণ এলাকায় প্রকাশ্য দিবালোকে৷ আনন্দমার্গের ১৬জন সন্ন্যাসী ও ১জন সন্ন্যাসিনীকে বর্ণনার অতীত নৃশংসতম ভাবে খুন করল তৎকালীন শাসকদল সিপিএম’এর গুণ্ডাবাহিনী৷ পুলিশ নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করল৷ স্পষ্টই বোঝা যায় এই হত্যার ষড়যন্ত্র প্রশাসনের ওপর মহল থেকেই করা হয়েছিল৷

গণতন্ত্রের পাঠ

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থার প্রাথমিক পাঠ হলো জনগণের জন্যে, জনগণের দ্বারা, জনগণের শাসন৷ কিন্তু স্বাধীনতার ৭৭বছর পরেও দেশের জনগণ ও দেশের নেতা মন্ত্রীরা গণতন্ত্রের এই প্রথম পাঠ বিষয়ে কতটা সচেতন! প্রথম কথা সার্থক গণতন্ত্রের প্রথম শর্তই হচ্ছে জনগণের সামাজিক অর্থনৈতিক রাজনৈতিক বিষয়ে সচেতনতা৷ কিন্তু আজও ভারতের ৮০ শতাংশ মানুষের এই চেতনা নাই৷ জনগণের অশিক্ষার সুযোগ নিয়ে জনগণকে নানা প্রলোভনে প্রভাবিত করে একবার ক্ষমতায় বসতে পারলেই প্রাগৈতিহাসিক সমাজ ব্যবস্থার---‘‘জোর যার মুল্লুক তার’’ পাশবিক নীতিকে আঁকড়ে ধরে৷

স্বাগত ১৪৩১

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

 আর একটা বছর বছর অতিক্রম করে এসে গেল বাঙ্লার শুভ নববর্ষ৷ বাংলা ১৪৩০ সাল পেরিয়ে আমরা ১৪৩১–এ পড়লুম৷ নোতুন বছরে পা দিলাম৷ এমনি এক বাংলা নববর্ষের প্রবচনে প্রাউট–প্রবক্তা পরম শ্রদ্ধেয় শ্রীপ্রভাতরঞ্জন সরকার যিনি একাধারে মহান দার্শনিক, ইতিহাসবিদ্, ভাষাতত্ত্ববিদ্, শিক্ষাবিদ্, সঙ্গীতকার, যিনি মহাসম্ভূতি শ্রীশ্রীআনন্দমূর্ত্তিজী রূপে সমধিক পরিচিত, তিনি আত্মবিস্মৃত বাঙালী জাতি সম্পর্কে বলেছেন, ‘‘বাঙালী নামধেয় জনগোষ্ঠী অতীতে জীবিত ছিল, আজও জীবিত ও আমি আশা করব, ভবিষ্যতে আরও দুর্দান্তভাবে জীবিত থাকবে৷ সেই জনগোষ্ঠীকে নোতুন করে শপথ নিতে হবে–এই নোতুন বছরটা তারা কীভাবে আরও সফল করে তুলবে৷ নিজেদের অস্তিত্বকে কী

গণতন্ত্রের ছিদ্রপথে ধনিকতন্ত্রের প্রবেশ

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

৭৫ বছর পার করেও ভারতীয় গণতন্ত্র সাবালোক হয়ে উঠলো না৷ গণতন্ত্রের প্রচলিত সংজ্ঞা অনুযায়ী শাসককে নির্বাচিত হতে হয় জনগণের দ্বারা৷ গণতন্ত্রের অর্থই জনগণের জন্যে, জনগণের দ্বারা, জনগণের শাসন৷ কিন্তু স্বাধীনতার ৭৭ বছর পূর্ণ করার প্রাক মূহুর্ত্তে আর্থিক বৈষম্যের যে চিত্র সামনে এসেছে তাতে স্পষ্ট শাসক নির্বাচনে জনগণের কিছুটা গৌণ ভূমিকা থাকলেও জনগণের জন্যেও নয়, জনগণের শাসনও নয়৷

চাই নতুন মানুষ নতুন আদর্শ

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

সব রাজনৈতিক নেতারাই তারস্বরে গণতন্ত্রের সুনাম করেন৷ রাজতন্ত্র, অভিজাত–তন্ত্র, একনায়কতন্ত্রের বিরুদ্ধে সরব নয়– এমন বোধ করি একজনও নেতা বা নেত্রী পাওয়া যাবে না৷ তবুও এ প্রশ্ণটা অত্যন্ত সঙ্গত যে– গণতন্ত্রকে কেউ কি মানে নির্বাচনের দামামা বাজতেই নেতাদের মুখের ভাষা, অঙ্গ ভঙ্গীমায় গণতন্ত্রের লেশমাত্র নেই৷ নির্বাচনী প্রচার মরণের উন্মাদরাগিনী৷ নির্বাচনে জিততে নেতারা জনসমর্থনের ওপর আর ভরসা রাখে না৷ পেশিবল, অর্থবল, প্রশাসনিক ক্ষমতাকে শাসকদলের অনুকুলে ব্যবহার করা ভারতীয় গণতন্ত্রের অঙ্গ হয়ে গেছে৷ জনগণতন্ত্রের শাসনে জনগণই গৌণ হয়ে গেছে৷

ধর্মের যথার্ত স্বরূপ

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

স্বাধীন ভারতের জন্মই ধর্মান্ধদের শাণিত কৃপানে দেশ ভাগের মধ্য দিয়ে৷ স্বাধীনতার ৭৭ বছর পরেও দেশ সেই ধর্মান্ধদের হাত থেকে মুক্ত হলো না৷ বরং আজ মুর্খ কালিদাসের মত ধর্মান্ধদের শাণিত কৃপান হাতে খণ্ডিত ভারতের অখণ্ডতা রক্ষার আবাজ উঠছে শাসকের কন্ঠে৷ স্বাধীন দেশের বৃহত্তম জনগণ শিক্ষিত অশিক্ষিত সবাই ধর্মের প্রকৃত স্বরূপ না জেনে ধর্মমত নিয়ে হানাহনি করছে৷ সারা বিশ্বজুড়ে আজ যে সাম্প্রদায়িক জঙ্গিপনা–সাম্প্রদায়িক হানাহানি চলছে–এসবেরই পেছনে আছে এই ডগ্মা৷ ধর্মমতের নামে এই ধরনের অজস্র ডগ্মা মানবসমাজকে অজস্র অন্ধবিশ্বাস, কুসংস্কার ও অমানবিক কাজকর্মের দিকে ঠেলে দিচ্ছে৷ ধর্মমতের নামে বিভিন্ন জাত–পাত সম্প্রদায়গত

নিখাদ প্রতারনা

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

নাগরিকত্ব আইন পাশ হওয়ার পর যে সব হিন্দু বাঙালী আশায় উৎফুল্ল হয়েছিল তাদের আশার গুড়ে যে বালি মেশান আছে সেটা টের পায়নি৷ এই সব গড়পড়তা বাঙালী আইনের খুঁটি-নাটি নিয়ে বিচারও করে না, খুঁটিয়ে দেখার মত দৃষ্টিও তাদের নেই৷ তারা শুধু নেতাদের ভাষন শুণেই আবেগে উদ্বেলিত হয়ে উঠে৷ বাস্তব নিয়ে ভাবার মত সময় ও সামর্থ্য তাদের নেই৷

নারী জাতি হোক নূতন বিপ্লবের অগ্রদূত

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

সমাজে নারী ও পুরুষ পাখীর দুটি ডানার মতো৷ একটা ডানা যদি পঙ্গু হয়, তা হলে একটিমাত্র ডানা দিয়ে পাখী উড়তে পারে না৷ ঠিক তেমনি সমাজে নারী যদি অবহেলিত হয়, শোষিত হয়, নির্যাতিত হয়, যা আজকে হচ্ছেও, এ অবস্থায় সমাজের প্রকৃত প্রগতি হতে পারে না৷ নারী পুরুষের জননী৷ এই সত্য মদগর্বী কিছু পুরুষ ভুলে যায় ও নারীর ওপর নির্যাতন চালায়৷

বর্তমানে বিভিন্ন স্থানে, কিছু পশুস্বভাবযুক্ত পুরুষ যেভাবে মেয়েদের ওপর পাশবিক নির্যাতন চালাচ্ছে তা মানব সভ্যতার মুখে চরমভাবে কালি লেপন করছে৷