দু’মাসেরও বেশি সময় ধরে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে আটকে রয়েছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত মহাকাশচারী সুনীতা উইলিয়ামস৷ সঙ্গে রয়েছেন সহকর্মী বুচ উইলমোর৷ এ বার নাসা জানাল, তাঁদের ফেরাতে ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্তও সময় লেগে যেতে পারে৷ সব ঠিক থাকলে আগামী বছরের শুরুতেই স্পেস এক্সের ক্রু ড্রাগনে পৃথিবীতে ফিরবেন তাঁরা৷
নাসার কর্মকর্তারা আগেই জানিয়েছিলেন, ইঞ্জিনিয়ারেরা সুনীতাদের বোয়িং স্টারলাইনার মহাকাশযানের যান্ত্রিক ত্রুটি সমাধানের জন্য দিনরাত কাজ করছেন৷ প্রয়োজনে বোয়িং-এর পরিবর্তে সাহায্য নিতে হতে পারে স্পেস-এক্স মহাকাশযানেরও৷ মহাকাশচারীদের বোয়িংয়ে ফেরানোর ঝুঁকি নেওয়া হবে, না কি স্পেস এক্সের সাহায্য নেওয়া হবে সে নিয়েও নাসার বিজ্ঞানীদের মধ্যে চলছিল মতবিরোধ৷ শেষমেশ নাসা জানিয়েছে, আগামী বছরের গোড়ার দিকে স্পেস এক্সেই ফিরতে পারেন তাঁরা৷
মহাকাশযান বোয়িং সিএসটি-১০০ স্টারলাইনার ক্যাপসুলে চড়ে গত ৫ জুন মার্কিন মহাকাশ সংস্থা নাসার ওই দুই নভশ্চর পাড়ি দিয়েছিলেন আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনের উদ্দেশে৷ অভিযান নিয়ে উত্তেজনাও ছিল তুঙ্গে৷ কারণ, প্রথমত দীর্ঘ অপেক্ষা এবং প্রস্তুতির পর এটিই ছিল বোয়িং-এর প্রথম মহাকাশচারী নিয়ে যাত্রা৷ দ্বিতীয়ত, এই ‘ক্রু ফ্লাইট টেস্ট’ অভিযানের উদ্দেশ্য বেসরকারি উদ্যোগে সাধারণের জন্য বাণিজ্যিক ভাবে মহাকাশ সফরের রাস্তা সুগম করা৷ শুরুতে কথা ছিল, ২১ দিন পরেই ফিরছেন সুনীতারা৷ কিন্তু হঠাৎই মহাকাশযানটিতে যান্ত্রিক ত্রুটি ধরা পড়ে৷ স্টারলাইনার ওড়ার আগেও রকেটে হিলিয়াম লিকেজের সমস্যা ধরা পড়েছিল৷ যাত্রাপথে আরও নানা যান্ত্রিক গোলযোগ দেখা দেয়৷ রকেটের পাঁচটি ‘ম্যানুভরিং থ্রাস্টার’ খারাপ হয়ে যায়, সমস্যা দেখা দেয় একটি ধীর গতির ‘প্রপেল্যান্ট ভালভ-এও৷ সব মিলিয়ে অনিশ্চিত হয়ে পড়ে সুনীতাদের ফেরা৷
ইতিমধ্যেই ইলন মাস্কের সংস্থা স্পেস এক্সের সঙ্গে যৌথ ভাবে নতুন একটি মহাকাশযান মহাকাশ স্টেশনে পাঠানোর প্রস্তুতি শুরু হয়েছে৷ মিশনটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘ক্রু-৯’৷ আগামী সেপ্ঢেম্বর মাসে ওই মহাকাশযান দু’জন বিজ্ঞানীকে নিয়ে রওনা দেবে মহাকাশ স্টেশনের উদ্দেশে৷ এই যানে মাত্র দু’জনেরই স্থান সঙ্কুলানের মতো ব্যবস্থা রয়েছে৷ মহাকাশ স্টেশন থেকে সুনীতাদের নিয়ে ফের পৃথিবীর দিকে পাড়ি দেবে যানটি৷ আপাতত তাঁদের সুস্থভাবে ফেরানোই বিজ্ঞানীদের উদ্দেশ্য৷ নাসা জানাচ্ছে, সব ঠিকঠাক চললে ফেব্রুয়ারি মাসে ফিরতে পারেন সুনীতারা৷