দেশের মাটিতে এই প্রথম ফলো-অন করল অষ্ট্রেলিয়া, সেটাও ছিল সিডনিতে৷ ক্রিকেট ইতিহাসে প্রথমবার অষ্ট্রেলিয়ার মাটি থেকে টেস্ট সিরিজ জিতে ফিরেছে ভারত৷ আজ পর্যন্ত যা করে দেখাতে পারেন নি কোনও ভারতীয় দল, তাই করে দেখালেন কোহালি৷ ইতিহাসের পাতায় পাকাপাকিভাবে জায়গা করে নেওয়া তো বটেই,দেখে নেওয়া যাক এই সিরিজ থেকে ঠিক কী কী পেল ভারতীয় ক্রিকেট৷ সিডনিতে বৃষ্টিতে ম্যাচ ড্র হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ২-১ ফলাফলে সিরিজ জিতল তারা৷ এই সিরিজের পরে ব্যাটসম্যান বিরাট কোহালির উপর থেক খানিকটা হলেও দায়িত্ব কমল৷ বিরাট মাঠে নেমে ব্যাট হাতে ব্যর্থ হলেই হুড়মুড় করে মিডল অর্ডারের ভেঙে পড়ার যে প্রবণতা সেটা এই টেষ্ট সিরিজে দেখা যায়নি৷
এই সিরিজের অন্যতম প্রাপ্তি সৌরাষ্ট্রের ডান হাতি ব্যাটসম্যান চেতেশ্বর পূজারা৷ ম্যান অব দ্য সিরিজ পূজারা এই টেষ্ট সিরিজের প্রতিটি ম্যাচে ভাল খেলেছেন বলা যায়৷ শুধুমাত্র রাহুল দ্রাবিড়ের বিকল্প হিসাবে নয়, বরং পৃথক স্টাইলের জন্যেও পূজারাকে মনেম রাখবে ক্রিকেট বিশ্ব৷ চারটি ম্যাচ, সাত ইনিংসে মোট ৫২১ রান করেছেন পূজারা, এরমধ্যে তিনটি শতরানও রয়েছে৷ সিরিজে পূজারার রানের গড় ৭৪.৪২৷
এই সিরিজের আর এক প্রাপ্তি নাম অবশ্যই কুলদীপ যাদব৷ সিডনি টেস্টে পাঁচ উইকেট নিয়ে কুলদীপ মনের জোর দিলেন ভারতীয় বোলিংকে৷ একটি ম্যাচ খেলে এতগুলি উইকেট নিয়ে টেষ্টে অশ্বিনের ফেরাটা কঠিন করে দিলেন বলা যায়৷
লোকেশ রাহুল-মুরলী বিজয়ের ধারাবাহিক ব্যর্থতায় জন্য দেশ থেকে উড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হয় ময়াঙ্ককে৷ ওপেনার হিসেবে নিজেকে প্রমাণ করেছেন ময়াঙ্ক৷ দু’টি ম্যাচ মিলে মোট ১৯৫ রান করেছেন তিনি৷
চোট সারিয়ে পৃথ্বীশ ফিরে এলে মুরলী বিজয়-লোকেশ রাহুল নন, বরং ময়াঙ্ক-পৃথ্বী জুটিই টেস্ট দলে ভারতের ওপেনার হিসাবে পাকা জায়গা করে নিতে পারবে৷
উইকেট কিপার-ব্যাটসম্যান ঋসভ পন্থ বড় ফরম্যাটে জায়গাটা পাকা করে নিলেন বলা যায়৷ রিকি পন্টিং কী আর সাধে ‘অ্যাডাম গিলক্রিস্ট’ বলেছেন পন্থকে৷ ৪ ম্যাচ ৭ ইনিংসে ৩৫০ রান করেছেন তিনি৷ গড় ৫৮.৩৩৷
ধারাবাহিকভাবে ভাল খেলেছেন পন্থ৷ শেষ ম্যাচে ১৮৯ বলে ১৫৯ রানে অপরাজিত ছিলেন পন্থ দখলে৷
ভারতীয় পেস বোলিং একটা বড় সম্পদ এই টেস্টের৷ এই টেস্টে ঝলসে উঠেছেন যশপ্রীত বুমরা,মহম্মদ শামি, ইশান্ত শর্র্ম প্রত্যেকেই৷ সব মিলিয়ে ভারতীয় বোলারদের সামনে রীতিমতো অসহায় দেখিয়েছে শন মার্শ উসমান খোয়াজা, অ্যারন ফিঞ্চদের৷
যাই হোক, এটা বলতেই হয় পারেন নি কপিল দেব, রাহুল দ্রাবিড বা মহেন্দ্র সিংহ ধোনি, কাছাকাছি গিয়েও ফিরে আসতে হয়েছে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কে, বিরাট কোহালির হাত ধরে এ বার সেই অধরা ইতিহাস ছঁুয়ে ফেলেছে ভারতীয় ক্রিকেট৷ সিডনিতে ম্যাচ ড্র হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ২-১ ফলাফলে সিরিজ জিতে ভারতীয় দল ও ভারতবাসীর গর্ব নিয়ে ফিরেছেন বিরাট৷