৫ই মার্চ দধীচি দিবসে নিপীড়িত মানবতার মুক্তির শপথ গ্রহণের আহ্বান

সংবাদদাতা
নিজস্ব সংবাদদাতা
সময়

৫ই মার্চ দিনটিকে প্রতি বছর সারাবিশ্বে আনন্দমার্গীরা ‘দধীচি দিবস’ হিসেবে পালন করে থাকেন৷ আনন্দমার্গ প্রচারক সংঘ (১৯৫৫ সালের ৯ই জানুয়ারী বিহারের মুঙ্গের জেলার জামালপুর রেলওয়ে কোয়ার্টারে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিষ্ঠিত) তখন সবেমাত্র বার বছর অতিক্রম করে তের বছরে পদার্পন করেছে৷ মিশনের সন্ন্যাসী প্রথার তখন শৈশবাবস্থায় অর্থাৎ পাঁচ বছর৷ সংস্থার জন্মলগ্ণ থেকে স্বার্থান্বেষী, বিপথগামী, সুবিধাবাদী ও মানুষের রক্ত শোষকেরা আনন্দমার্গকে ধ্বংস ও উৎখাত করতে লেগে পড়ে৷ ১৯৬৭ সালের ৫ই মার্চ আনন্দ নগরে কমিউনিষ্ট গুণ্ডারা পরিকল্পিতভাবে আক্রমণ করে ও নির্মমভাবে পাঁচজন সর্বত্যাগী সন্ন্যাসীকে হত্যা করে৷ দীর্ঘ বিচার প্রক্রিয়ায় বিচারক তদানীন্তন স্থানীয় জয়পুর ব্লকের বিডিও অশোক চক্রবর্তী সহ মোট আঠারো জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডসহ বিভিন্ন মেয়াদে দোষী সাব্যস্ত করেন ও শাস্তি প্রদান করেন৷

আনন্দনগরের প্রতিষ্ঠাকল্পে সেই সময় গুণ্ডাদের আক্রমণে আত্মবলিদান করে যাঁরা  দধীচি হয়েছেন, তাঁরা হলেন ১) আচার্য অভেদানন্দ অবধূত খ) আচার্য সচ্চিদানন্দ অবধূত গ) আচার্য অবোধ কুমার ব্রহ্মচারী ঘ) আচার্য প্রবোধ কুমার ব্রহ্মচারী ঙ) আচার্য ভরত কুমার ব্রহ্মচারী৷ আনন্দমার্গে সব দধীচিদের স্মরণে ৫ই মার্চ ১২ ঘন্টা (সূর্যোদয় থেকে সুর্যাস্ত পর্যন্ত) নির্জলা উপবাস পালন করা হয়ে থাকে৷

আনন্দনগরে ও এই দিনকে সব আশ্রমবাসীরা তথা ছাত্র–ছাত্রারা অনুরূপ ভাবে পালন করে থাকে ও নিম্নোক্ত অনুষ্ঠান সূচীর মাধ্যমে দধীচি দিবস পালিত হয়৷ আনন্দনগর ‘পাওয়ার হাউস সভা ঘরে’ বেলা ১১টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত অখণ্ড ‘ৰাৰা নাম কেবলম্’ নাম সংকীর্ত্তন হয়৷ কীর্ত্তন শেষে মিলিত ঈশ্বর প্রণিধান করা হয়৷ ঈশ্বর প্রণিধান শেষে মিলিতভাবে কীর্ত্তন করে দধীচি পাহাড়ে যাওয়া হয়৷ দধীচি পাহাড়ে দধীচি বেদীতে পূষ্পার্ঘ্য করা হয়৷ পুষ্পার্ঘ্য পর্বের পর প্রভাতসঙ্গীত, কীর্ত্তন ও মিলিত ঈশ্বর প্রণিধান করা হয় দধীচি পাহাড়ে৷ ৫ই মাচ দধীচি দিবস উপলক্ষ্যে সেই সময় গুরুদেবের দেওয়া নিম্নোক্ত শপথ বাক্য পাঠ করান আচার্য মোহনানন্দ অবধূত দাদা৷

শপথ বাক্য ঃ ‘‘যে পাপশক্তির ফলে এই পাঁচ ভাইয়ের হত্যা হয়েছে যতক্ষণ পর্যন্ত সেই পাপশক্তির বিনাশ না করছি ততক্ষণ আমরা আরাম করবো না, আরাম করবো না, আরাম করবো না৷’’

শপথ গ্রহণের পর স্মৃতিচারণ  ও দধীচি দিবসের  তাৎপর্য ব্যাখ্যা করেন ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও সেই ঘটনায় আহত আচার্য সুতীর্থানন্দ অবধূত ও প্রবীন সন্ন্যাসী আচার্য কল্যাণেশ্বরানন্দ অবধূত, আচার্য মোহনানন্দ অবধূত৷

তাৎপর্য ব্যাখ্যা শেষে লোয়ার হোষ্টেলে উপবাসকারীদের উপবাস ভঙ্গের জন্যে নেবু শরবত ও খিচুড়ি বিতরণ করা হয়৷