ওষুধ নয়, রোগীদের হাতে আসছে ‘মিউজিয়াম প্রেসক্রিপশন’, যা দিয়ে শহরের যে কোনও চারটি জাদুঘর বিনামূল্যে ঘুরে দেখতে পারবেন তাঁরা৷ ২০১৯---এ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) এক রিপোর্টে জানিয়েছিল, শিল্প মানুষের মানসিক স্বাস্থ্য উন্নত করতে পারে৷ মানুষের ভেঙে পড়ার হার কমিয়ে আনতে পারে৷ সর্র্বেপরি ‘অকালমৃত্যু’র হারও কমাতে৷ সেই রিপোর্ট অনুযায়ী, শিল্প চাক্ষুষ করায় ‘মন কি শক্তি’ আর হেঁটে জাদুঘরে ঘোরা, ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়ানোয় ‘তন কি শক্তি’৷ এই রিপোর্ট ভিত্তি করেই নুশাটেলে শুরু হয়েছে দু’বছরের পাইলট প্রজেক্ট উদ্যোক্তা শহরের কালচারাল মেডিয়েশন ম্যানেজার মারিয়ান দে রেনিয়ের নেভস্কি৷ তাঁর মতে, কেবল মানসিক অবসাদগ্রস্ত মানুষরাই নন, উপকৃত হবেন দূরারোগ্য রোগে আক্রান্তরাও৷ জানিয়েছেন,২০১৯---এ ক্যানাডার মন্িন্টয়লেও এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল৷ কর্মক্ষেত্রে কাজের চাপে মাথা তোলা দায়? বাড়ির সমস্যায় জেরবার? থেরাপির বদলে এক অভিনব চিকিৎসা পদ্ধতি বেছে নিয়েছেন সুইৎজারল্যান্ডের নুশাটেল শহরের চিকিৎসকেরা৷
আশ্চর্যের ব্যাপার, এমন এক প্রজেক্টের জন্য খরচ খুবই সামান্য৷ মাত্র দশ হাজার সুইস ফ্রাঁ, অর্থাৎ ভারতীয় মুদ্রায় ৯ লক্ষ ৭০ হাজার টাকার কাছাকাছি বাজেট ধরা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জুলি৷ এই উদ্যোগ সফল হলে থিয়েটার বা নাচের অনুষ্ঠানে যাওয়ার পরামর্শের কথাও ভেবে দেখা হবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ৷
জাদুঘর ভ্রমণের সব খরচ বহন করছে প্রজেক্ট কর্তৃপক্ষ৷ নুশাটেলের কাউন্সি ল সদস্য জুলি কোর্সিয়ার ডেলাফন্টেন বলেন, ‘লকডাউনের সময়ে সব রকমের কালচারাল সাইট বন্ধ থাকায় মানুষ এখন বুঝছে, ভালো থাকার জন্য সেগুলো কতটা প্রয়োজনীয়৷’ আরও জানিয়েছেন, এখনও অবধি ৫০০ প্রেসক্রিপশন ডাক্তারদের মধ্যে বিলি করা হয়েছে৷ সেগুলি কাজে লাগাতেও শুরু করেছেন ডাক্তাররা৷ নুশাটেল হসপিটাল নেটওয়ার্কের সার্জারি বিভাগের প্রধান মার্ক---ওলিভিয়ের সোভাঁ জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই দুই রোগীর অস্ত্রোপচারের আগে এই প্রেসক্রিপশন ব্যবহার করেছেন তিনি৷ তাঁর দাবি, ‘সার্জারির আগে রোগীর ফিটনেস বাড়াতে একটু বেড়িয়ে আসতে বলা বেশ ভালো প্রস্তাব৷ রোগীরা ওষুধ বা পরীক্ষা---নিরীক্ষা বিশেষ পছন্দ করেন না৷ চিকিৎসার অঙ্গ হিসেবে তাঁদের জাদুঘরে ঘুরে আসার কথা বলতে ডাক্তার হিসেবেও বেশ লাগে৷’ মার্কের আশা, এই প্রজেক্ট সফল হলে তা আরও নানা শহরে ছড়িয়ে পড়বে৷