আচার্য অসীমানন্দ অবধূত স্মৃতি দিবস

সংবাদদাতা
নিজস্ব সংবাদদাতা
সময়

আচার্য অসীমানন্দ অবধূত, আনন্দমার্গের ইতিহাসে এক উজ্জ্বল জ্যোতিষ্ক৷ ইনি ছিলেন একজন প্রখ্যাত কৃষিবিজ্ঞানী৷ শ্রীশ্রীআনন্দমূর্ত্তিজী ভাবনা ও আদর্শে নিয়োজিত একজন অসামান্য সর্বত্যাগী কর্মী৷ যে সবুজায়ন আজ আনন্দনগরের মুখ্য প্রাকৃতিক ভূমিকা, তার মূলে এই নিষ্ঠাবান ত্যাগী কর্মী ছিলেন অগ্রণী৷ কানপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কৃষিবিজ্ঞানে পড়াশোনা করার পর সব লৌকিক সুখ স্বাচ্ছন্দ্য ত্যাগ করে সংঘের সর্বক্ষণের কর্মী হিসেবে আত্মনিয়োগ করেন৷ গুরুদেবের চরণে জীবনকে সমর্পন করে তাঁর আদর্শেকে বাস্তবায়িত করতে একনিষ্ঠ হয়ে কাজ করার ব্রত গ্রহণের পর গুরুদেব তাঁকে আনন্দনগরের কৃষিসংক্রান্ত প্রকল্প রূপায়ণের দায়িত্ব অর্পণ করেন৷ বিবিধ প্রতিকূলতার মধ্যেও তিনি কাজ চালিয়ে যাচ্ছিলেন৷ তৎকালীন পশ্চিমবঙ্গের শাসক সিপিএমের কাছে তাঁর অপরাধ ছিল পুরুলিয়ার শুষ্ক মাটিতে সোণা ফলাচ্ছিলেন৷ গ্রামের মানুষদের অনুর্বর জমিতে বিভিন্ন অর্থকরী ফসলের চাষকরে আর্থিকভাবে স্বনির্ভর করে তুলছিলেন৷ ওদিকে নাগিনীরা বিষাক্ত নিঃশ্বাসে জর্জরিত করছিল শুধু বায়ু নয়, চক্রান্ত করেছিল তাঁকে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেওয়ার৷ সাধারণ কুসংস্কারাচ্ছন্ন মানুষদের নেশার দ্রব্যে ও অর্থের লোভ দেখিয়ে তাদের মনকে বিষাক্ত করে ঘৃণ্য পাপকাজে লিপ্ত করাত৷ ১৯৯০ সালের ২রা এপ্রিল স্থানীয় কয়েকজন মার্গী ভাইয়ের সাথে পরিদর্শনে গেছিলেন ডিমডিহা জলবন্ধ (ড্যাম) প্রকল্প ও ডিমডিহা কৃষি ফার্মের কাজের অগ্রগতি দেখতে৷ ফিরে আসার পথে ছটকা গ্রামে পথ আটকে গাড়ি থেকে নামিয়ে ক্লাব ঘরে ঢুকিয়ে অসীমানন্দ অবধূত সহ স্থানীয় কোষাঙ্গি গ্রামের অর্জুন সিং ও দারা সিং, চিৎমু গ্রামের রাধু গরাঞ ও উত্তর প্রদেশের দীনবন্ধু সিং চারজনমার্গীকে তদানীন্তন শাসকদল মদতপুষ্ট কমিউনিষ্ট গুণ্ডারা নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করে৷ কিন্তু তারপরও আনন্দমার্গকে দমিয়ে রাখা যায়নে৷ আনন্দনগরে তাঁর কাজের পরিকল্পনা ও প্রগতি আরও দ্রুতবেগে বাস্তবায়িত হতে থাকে৷ তাঁর স্মৃতি রক্ষায় ১৯৯১সাল থেকে প্রতিবৎসর নভেম্বর মাসে আচার্য অসীমানন্দ অবধূত স্মৃতি নকউট ফুটবল প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়ে চলেছে৷ ২রা এপ্রিল’২৪ ডিমডিহা আনন্দমার্গ জাগৃতি ভবনে ৬ ঘণ্টা অখণ্ড ‘বাবা নাম কেবলম’ নাম-সংকীর্ত্তন, মিলিত ঈশ্বর প্রণিধান, বর্ণাঘ্যদান, স্বাধ্যায়, স্মৃতিচারণ ও নারায়ণসেবার আয়োজনের মাধ্যমে তাঁর আত্মত্যাগের কথা স্মরণ করা হয়৷