অনবদ্য স্বর্গীয় পরিবেশে শেষ হল মহাপ্রয়াণ দিবস অখণ্ড কীর্ত্তন

সংবাদদাতা
নিজস্ব সংবাদদাতা
সময়

শ্রীশ্রীআনন্দমূর্ত্তিজী স্থূল পাঞ্চভৌতিক দেহের মহাপ্রয়াণ স্মরণে গত ২১শে অক্টোবর থেকে ২৬শে অক্টোবর পর্যন্ত ছ’দিন ব্যাপী অখণ্ড কীর্ত্তন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হ’ল৷ শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয়, ত্রিপুরা, অসম, ঝাড়খণ্ড, বিহার প্রভৃতি রাজ্য সহ ভারতের সমস্ত রাজ্য থেকে ও পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে দলে দলে আনন্দমার্গীরা এসেছেন ও অখণ্ড কীর্ত্তনে যোগ দিয়েছেন৷ ‘বাবা নাম কেবলম্‌’ মহামন্ত্রের মধুর ধবনিতে এই ছয়দিন দিবারাত্র আকাশ-বাতাস অনুরণিত হয়েছে, এক অভিনব ভক্তিভাবমণ্ডিত স্বর্গীয় পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে৷ নানান এলাকার, নানান দেশের মানুষ একসঙ্গে এক আনন্দ পরিবারের সদস্য হিসেবে এই ছয়দিন মিলেমিশে থেকেছে, খেয়েছে, ভজন-কীর্ত্তন করেছে৷ এক অপূর্ব আনন্দময় পরিবেশ!

২১ তারিখে দুপুর ১টা ৩০ মিনিটে মার্গগুরুদেবের স্মৃতিসৌধে প্রারম্ভিক অনুষ্ঠান শুরু হয়৷ প্রারম্ভিক অনুষ্ঠানে প্রভাত সঙ্গীত, কীর্ত্তন, সাধনা ও গুরুপূজার পর ৩টে ৩০ মিনিটে ছ’ দিন ব্যাপী অখণ্ড কীর্ত্তন শুরু হয়৷ এরপর প্রতিদিন সময়সূচী অনুসারে কখনও সংঘের সন্ন্যাসী ‘দাদা’রা, কখনও সন্ন্যাসিনী ‘দিদি’রা, কখনও পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলার আনন্দমার্গীরা, কখনও বিভিন্ন রাজ্য থেকে আগত আনন্দমার্গীরা, কখনও বা বহির্ভারতের মার্গীরা পর্যায়ক্রমে অখণ্ড কীর্ত্তনে অংশগ্রহণ করেছেন৷ পাশাপাশি সংঘের বিভিন্ন সেবামূলক কর্মসূচী নিয়েও আলোচনা হয়েছে৷ এছাড়া প্রতিদিন ভোরে পাঞ্চজন্য (প্রাতঃকালীন বিশেষ কীর্ত্তন), মিলিত সাধনা ও ধর্মচক্র হয়েছে৷ আনন্দমার্গ পাবলিকেশন, প্রাউট পাবলিকেশন সহ সংঘের বিভিন্ন বিভাগের স্টলও খোলা হয়েছে৷ এইগুলিতে আনন্দমার্গের আধ্যাত্মিক বিষয়ক, প্রাউট বিষয়ক ও অন্যান্য বিভিন্ন বিষয়ক ‘বাবা’র পুস্তক, আনন্দমার্গের সন্ন্যাসী, সন্ন্যাসিনী ও অন্যান্য আনন্দমার্গীদের লেখা পুস্তকও বিক্রয় করা হয়েছে৷ প্রগতিশিখা ও নোতুন পৃথিবী সহ বিভিন্ন ম্যাগাজিন ও পত্র-পত্রিকাও বিক্রয় হয়েছে৷ এছাড়াও মার্গগুরুদেবের প্রতিকৃতি, মার্গের প্রতীক, মাইক্রোবাইটাম ওষুধ, মার্গের বিভিন্ন শাখার দ্বারা পরিচালিত বিভিন্ন কুটির শিল্পজাত দ্রব্য বিক্রয় হয়েছে৷ আনন্দমার্গীরা ও আনন্দমার্গের বাইরের বহু মানুষ এই সমস্ত বই, ম্যাগাজিন, পত্র-পত্রিকা, মাইক্রোবাইটাম ওষুধ প্রভৃতিও ক্রয় করেছেন৷ আনন্দমার্গের আদর্শ জেনে অনেকে আনন্দমার্গের সাধনাও শিখেছেন৷ ২৬শে অক্টোবর ৩টে ৩০ মিনিটে ছয় দিন ব্যাপী অখণ্ড কীর্ত্তন সুষ্ঠু ভাবে সম্পন্ন হওয়ার পর সবাই মিলিত সাধনা ও গুরুপূজা করেন৷ তারপর ভিডিও-র মাধ্যমে ‘বাবা’র প্রবচন ও আশীর্বাণী শোণানো হয়৷ এরপর মার্গগুরু শ্রীশ্রীআনন্দমূর্ত্তিজী মহান আদর্শকে বাস্তবায়িত করার জন্যে সকলে মিলিত ভাবে শপথ গ্রহণ করেন৷ এইভাবে মার্গগুরু শ্রীশ্রীআনন্দমূর্ত্তিজী স্থূল পাঞ্চভৌতিক দেহের ৩৩তম মহাপ্রয়াণ বার্ষিকী উপলক্ষ্যে অখণ্ড কীর্ত্তনের অনুষ্ঠান সুচারুভাবে সম্পন্ন হ’ল৷