শিক্ষা একটি জাতির মেরুদণ্ডস্বরূপ, যা সমাজকে স্থিতিশীলতার ভিত্তি প্রদান করে ও উন্নতির শিখরে পৌঁছাতে সহায়তা করে৷ তবে অত্যন্ত দুঃখজনক যে, আজকের ভারতবর্ষে শিক্ষাব্যবস্থা চরম অবহেলা ও সংকীর্ণতার শিকার৷ বর্তমানে শিক্ষার উদ্দেশ্য যেন শুধুমাত্র একটি ডিগ্রি বা সার্টিফিকেট লাভে সীমাবদ্ধ৷ নৈতিকতা ও আত্মিক মূল্যবোধ, যা প্রকৃত শিক্ষার মৌলিক উপাদান, তা আজ প্রায় হারিয়ে যেতে বসেছে৷
এই ঘোর অন্ধকার পরিস্থিতিতে আনন্দমার্গের শিক্ষাব্যবস্থা এক নতুন আলো জ্বালিয়েছে৷ এর মূল লক্ষ্য হলো মানুষের ত্রিমুখী মুক্তি শারীরিক, মানসিক ও আধ্যাত্মিক উন্নতির পথ নির্দেশনা করা৷ প্রকৃত মানুষ চিহ্ণিত হয় তার উদার হৃদয়, গভীর মানবিকতা ও সৃজনশীলতায়৷ আনন্দমার্গের শিক্ষা সেই বিস্তৃত মানবিকতাকে বিকশিত করার জন্য একাগ্রভাবে কাজ করে চলেছে৷ আনন্দমার্গ ছয় প্রকারের বিদ্যালয় পরিচালনার মাধ্যমে সমাজে শিক্ষার আলো পৌঁছে দেয় ঃ ১) শহরাঞ্চলের জন্য আনন্দমার্গ স্কুল৷ ২) গ্রামাঞ্চলের জন্য আনন্দমার্গ জাগৃতি স্কুল৷ ৩) নিরক্ষর শিশুদের সাক্ষর করে তোলার জন্য পিপলস ডে স্কুল৷ ৪) নিরক্ষর প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য পিপলস নাইট স্কুল৷ ৫) মহিলাদের জন্য সিষ্টার্স ডে স্কুল৷ ৬) মেয়েদের জন্য সিষ্টার্স নাইট স্কুল৷ আনন্দনগরের গ্রামাঞ্চলে অবস্থিত ৩২টি জাগৃতি স্কুল শিশুদের মধ্যে শিক্ষার আলো প্রজ্বলিত করতে নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে৷ একই সঙ্গে, দরিদ্র ও অবহেলিত ছাত্রছাত্রাদের শিক্ষা উপকরণ প্রদান করে তাদের অগ্রগতির পথ সুগম করা হচ্ছে৷ বাঁশগড়ের ভেঙ্কটেশ্বরানন্দ ডিহিতে আনন্দমার্গ জাগৃতি স্কুলে শীতের সময় ছাত্রছাত্রাদের মধ্যে সোয়েটার বিতরণ করা হয়, যা তাদের প্রতি সহানুভূতি ও যত্নশীলতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত৷ আনন্দমার্গের এইসব উদ্যোগ শিক্ষাকে কেবল একটি প্রাতিষ্ঠানিক কর্মকাণ্ডের মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে মানবিক মূল্যবোধ, নৈতিকতা ও সামগ্রিক উন্নয়নের পথ প্রদর্শক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে৷