৮ নভেম্বর, ২০২৪ তারিখে আনন্দমার্গ প্রচারক সংঘ, আনন্দনগরের ব্যবস্থাপনায় ও ভোকেশন অন হুইলস (ভোকেশনাল এডুকেশন অ্যান্ড ট্রেনিং এর এক ফোরাম) ও ইন্ডিয়ান জুট ইন্ডাস্ট্রিজ রিসার্চ অ্যাসোসিয়েশন, কলকাতার সহায়তায় আনন্দনগর রোটাণ্ডায় (অডিটরিয়ামে) গ্রামীণ যুবসমাজের দক্ষতা বিকাশ তথা স্কিল ট্রেনিং কর্মশালার শুভসূচনা হয়৷
বর্তমানে প্রায় প্রতিটি পরিবারেই বাবা-মা ও যুবক-যুবতীরা ভবিষ্যৎ কর্মসুযোগ নিয়ে উদ্বিগ্ণ৷ প্রচুর সময় ও অর্থ ব্যয় করেও আর্থিক স্বনির্ভরতার ক্ষেত্রে যে নিশ্চিত ভবিষ্যতের প্রতিশ্রুতি পাওয়া যাচ্ছে না, ক্রমশঃ তা হতাশার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ গুরুদেব শ্রীশ্রীআনন্দমূর্ত্তিজী ১৯৬৩ সালে আনন্দমার্গের শিক্ষা নীতিমালা প্রণয়নের সময়ে ভোকেশনাল শিক্ষার ওপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেছিলেন, যা আজকের দিনেও অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক৷ তিনি প্রথাগত শিক্ষার পাশাপাশি কারিগরি শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছিলেন, বর্তমান বিশ্বে প্রতিটি দেশেই এই কারিগরি শিক্ষার প্রাসঙ্গিকতা ক্রমশঃ স্পষ্ট হচ্ছে৷
এই ওয়ার্কশপে নিম্নলিখিত বিষয়গুলোতে আলোচনা হয়:
১) আচার্য নারায়ণানন্দ অবধূত, রেক্টর মাস্টার, আনন্দনগর, স্বাগত ভাষণে অনুষ্ঠানের উদ্দেশ্য ও তাৎপর্য ব্যাখ্যা করেন৷
২) দক্ষতা বিকাশে ভোকেশন অন হুইলস-এর ভূমিকা নিয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনায় অংশ নেন শ্রী সোমক চন্দ্র ঘোষ, প্রাক্তন ডেপুটি ম্যানেজার, ইউবিআই ও সদস্য.
৩) শ্রী পার্থ দাস, ইঞ্জিনিয়ার ও সিনিয়র ফ্যাকাল্টি, পশ্চিমবঙ্গ সরকার এর টি.ই.টি.এস.ডি. বিভাগের প্রাক্তন ওএসডি, ‘‘গ্রামীণ ভারতে দক্ষতা বিকাশ’’ বিষয়ে আলোচনা করেন৷ তিনি বর্তমান দক্ষতা বিকাশের চাহিদা ও প্রবণতার বিষয়ে অন্তর্দৃষ্টি প্রদান করেন৷
৪) ড. দেবী প্রসাদ গন, বিজ্ঞানী, ইন্ডিয়ান জুট ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশন (আই.জে.আই.আর.এ), ‘‘জুট প্রোডাক্টস স্টিচিং অপারেটর- একটি বিশেষ প্রকল্প’’ বিষয়ক পর্যালোচনা তুলে ধরেন৷
৫) শ্রী তরুণ কাঞ্জিলাল, ম্যানেজিং পার্টনার, অনলাইন সার্ভিসেস ও সদস্যvow, ‘‘অটোমোবাইল শিল্পের উদীয়মান প্রবণতা’’ বিষয়ে আলোকপাত করেন ও দক্ষতা বিকাশের জন্য প্রাসঙ্গিক শিল্পের অগ্রগতি তুলে ধরেন৷
৬) শ্রী রঞ্জন লাহা, উপ-ব্যবস্থাপক (আঞ্চলিক প্রধান), সেন্টাম ওয়ার্ক স্কিলস ইন্ডিয়া লিমিটেড ওvow আহ্বায়ক, দক্ষতা বিকাশ কর্মসূচির সফলতার গল্পগুলি নিয়ে আলোচনা করেন৷
৭) অল্টারনেটিভ এনার্জি তথা সৌরশক্তির সম্ভাবনা নিয়ে শ্রী শংকর সাউ, প্রশিক্ষক, সুইচ অন ফাউন্ডেশন, গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রদান করেন৷
৮) মিস অদিতি দাস, প্রজেক্ট ম্যানেজার (এডুকেশন), মানব ফাউন্ডেশন, ভুবনেশ্বর, ওড়িশা, ও সদস্যvow., অংশগ্রহণকারীদের ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন এবং পুরো কর্মসূচির তাৎপর্য তুলে ধরেন৷
আমরা আনন্দনগরে দক্ষতা বিকাশ কর্মসূচির অংশ হিসেবে (১) এপারেলস কোর্স (সেলাই সংক্রান্ত) (২) অফিস অ্যাসিস্ট্যান্ট কম্পিউটার কোর্স দুটি চালু করছি৷
কর্মশালার অংশ হিসেবে উপস্থিতদের প্রশ্ণোত্তরে ‘নীড এনালাইসিস’ করা হয়৷ সবার চাহিদা অনুসারে পরবর্তীকালে আরও কোর্স যুক্ত করা হবে৷ এই প্রশিক্ষণ ভারত সরকারের ‘‘স্কিল ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড এন্টারপ্রেনারশিপ MSDE)’’ মন্ত্রণালয়ের অন্তর্গত প্রধানমন্ত্রী কৌশল বিকাশ যোজনা-৪.০ PMKUY40) অধীনে পরিচালিত হবে৷
আনন্দনগর থেকে অনেকেই কর্মসংস্থানের আশায় অন্য রাজ্যে পাড়ি জমাচ্ছেন৷ অধিকাংশই অদক্ষ শ্রমিক হিসেবে কাজ পাচ্ছেন৷ আমরা চাই, এখানকার তরুণ প্রজন্ম যেন প্রথাগত শিক্ষার পাশাপাশি কারিগরি দক্ষতা অর্জন করে নিজেকে আত্মনির্ভর করে তুলতে পারে৷ শিক্ষার শেষে ঘরে বসে না থেকে যেন নিজের যোগ্যতা অনুযায়ী কাজ শুরু করে আত্মনির্ভরশীল হতে পারে৷ এতে প্রতিটি কাজের মানোন্নয়ন হবে ও এলাকার সামগ্রিক আর্থিক সমৃদ্ধি বৃদ্ধি পাবে৷ আমাদের লক্ষ্য, আনন্দনগরকে ‘‘স্কিল হাব’’ হিসেবে গড়ে তোলা৷