অস্ট্রেলিয়ায় ভারতীয় ক্রিকেট দলের দিশাহীন অবস্থা

সংবাদদাতা
ক্রীড়াপ্রতিনিধি
সময়

রোহিত শর্মার দলের খেলায় পরিচিত আগ্রাসী মেজাজ উধাও৷ কেন এমন পরিবর্তন? তিন-চার বছর আগেও বিদেশের মাটিতে শেষ বল পর্যন্ত লড়াই করে জয় ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করত ভারতীয় দল৷ এখন ৫০-৫০ পরিস্থিতিতে সেই দলই ড্র করার জন্য খেলে৷ মানসিকতার পরিবর্তন বেশ স্পষ্ট৷ উদাহরণ হিসাবে বলা যায় ২০২১ সালের লর্ডস টেস্টের কথা৷ সে বার চতুর্থ ইনিংসে জয়ের জন্য ইংল্যান্ডের দরকার ছিল ২৬২ রান৷ ৬০ ওভারে সেই রান তুলতে হত জো রুটের দলকে৷ কোহলির ভারত ৫১.৫ ওভারে ইংল্যান্ডকে অলআউট করে ১৫১ রানে ম্যাচ জিতেছিল৷ ঘরের মাঠে জসপ্রীত বুমরাহ, মহম্মদ শামি, মহম্মদ সিরাজ, ইশান্ত শর্মা, রবীন্দ্র জাডেজার বল সামলাতে পারেননি ইংরেজ ব্যাটারেরা৷ চার জন ব্যাটার আউট হয়েছিলেন শূন্য রানে৷ সেই দলেরই মেলবোর্নের ২২ গজে অস্ট্রেলিয়ার শেষ উইকেট ফেলতে সময় লেগেছে ১৯.৩ ওভার৷ ২০২১ সালের দলের পাঁচ বোলারের তিন জন ছিলেন মেলবোর্নেও৷ চোটের জন্য শামি ছিলেন না৷ আর ইশান্ত এখন ভারতীয় দল থেকে অনেক দূরে৷ ঘরের মাঠে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজ জয় পর্যন্ত সব ঠিক ছিল৷ ঠিক যে ছিল না, ভারতে এসে বুঝিয়ে দেয় নিউ জিল্যান্ড৷ আবার অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে পাথর্ে জয় টম লাথামের দলের কাছে লজ্জার হারে প্রলেপ দেয়৷ বর্ডার-গাওস্কর ট্রফির প্রথম টেস্টে বিরাট কোহলি, যশস্বী জয়সওয়াল, মহম্মদ সিরাজদের পারফরম্যান্স আশা দেখালেও দ্বিতীয় টেস্ট থেকে চেনা ফর্মে দেখা যাচ্ছে না ভারতীয় দলকে৷ ইশান্তের মতোই ভারতীয় দল থেকে দূরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে চেতেশ্বর পুজারা, অজিঙ্ক রাহানেদের৷ ক্রিকেটার পরিবর্তন যে কোনও দলের জন্যই স্বাভাবিক৷ দলে এসেছেন যশস্বী জয়সওয়াল, শুভমন গিল, আকাশ দীপ, ওয়াশিংটন সুন্দরের মতো তরুণেরা৷ পালা বদল স্বাভাবিক৷ পরিবর্তদের যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ণ নেই৷ তবু কোহলির সেই ভারতের সঙ্গে রোহিতের এই ভারতের মিল পাওয়া যাচ্ছে না৷ কোচ হিসাবে দ্রাবিড়ের শেষ টেস্ট সিরিজ ছিল দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে৷ কেপটাউন টেস্টে বুমরাহ, সিরাজ, মুকেশ কুমার এবং প্রসিদ্ধ কৃষ্ণ টেম্বা বাভুমার দলকে দু’ইনিংসে অলআউট করেছিল যথাক্রমে ৫৫ এবং ১৭৬ রানে৷ গম্ভীরের কাজ কঠিন করেছে রোহিত, কোহলি, শুভমন গিল, ঋষভ পন্থদের ফর্মে না থাকা৷ প্রথম টেস্টে শতরান ছাড়া কোহলি অস্ট্রেলিয়ায় রান পাননি৷ রোহিত মিডল অর্ডার হোক বা ওপেনিং, সব জায়গাতেই এক রকম৷ শুভমন খেলতে পারছেন না৷ পন্থ প্রতি ইনিংসেই অবিবেচকের মতো আউট হচ্ছেন৷ তবু তাঁদের প্রথম একাদশের বাইরে রাখতে পারছেন না গম্ভীর৷ মেলবোর্নে শুধু শুভমন খেলেননি৷ ভারতীয় দলের ব্যর্থতার দায় শুধু গম্ভীরের নয়৷ তাঁর পরিকল্পনা নিয়ে প্রশ্ণ তুলেও আড়াল করা যাবে না সিনিয়র ক্রিকেটারদের ব্যর্থতা৷ ভারতীয় দলকে লড়াই করতে হচ্ছে প্রায় অর্ধেক ব্যাটিং এবং অর্ধেক বোলিং নিয়ে৷