বাংলা সাইনবোর্ডে কালি ক্ষুব্ধ সি আর পি সি সি

সংবাদদাতা
নিজস্ব সংবাদদাতা
সময়

সম্প্রতি তিনসুকিয়ার একটি বেসরকারি সংঘটনের বাংলা ভাষায় নিজেদের অনুষ্ঠান আয়োজনের  জন্য টাঙ্গিয়ে রাখা  ব্যানারে লাচিত সেনার সদস্যরা কালো কালি লেপে দেওয়ার  ঘটনায় গভীর ক্ষোভ প্রকাশ করে নাগরিক অধিকার রক্ষা সমন্বয় সমিতি, অসম এর পক্ষ থেকে এক প্রেস বার্তায় বলা হয় যে আসামের মতো একটি বহুভাষিক রাজ্য এধরণের ঘটনা খুবই নিন্দনীয়৷ সমিতির পক্ষ থেকে এও বলা হয় যে ভাষা প্রয়োগের আইন রয়েছে৷ কিন্তু বেসরকারি সংস্থা বা কোনো ব্যক্তি তাঁর নিজস্ব মাতৃভাষায় ব্যানার,সাইনবোর্ড ইত্যাদি টাঙ্গিয়ে রাখতে পারবে না বলে কোনো নিয়ম ভাষা আইনে নেই৷ ১৯৬১ সালের ঐতিহাসিক  ভাষা আন্দোলনের  চাপে তৎকালীন কেন্দ্র সরকার ভাষা আইনে যে সংশোধন করেছিল তাতে সরকারি কাজে বরাক উপত্যকার তিন জেলায় বাংলা ভাষার প্রয়োগের আইন রয়েছে কিন্তু বরাক উপত্যকায় ‘নাম ঘর’ বঙ্গালী বিহুর উদযাপনের  সাইনবোর্ড বা ব্যানার  সহ হিন্দি ও অন্যান্য ভাষিক-গোষ্ঠীর মানুষ নিজ নিজ ভাষায় তাদের  সংঘটনের সাইন বোর্ডের ও ব্যানার টাঙ্গিয়ে রাখেন৷ ব্রহ্মপুত্র উপত্যকায়ও বাংলাভাষী সহ বিভিন্ন ভাষিক-গোষ্ঠীর জনগণ বহু জায়গাতেই নিজের মাতৃভাষায় তাদের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের সাইনবোর্ড সহ পূজা কমিটির ব্যানার ইত্যাদি টাঙ্গিয়ে রাখেন৷ বহু ভাষা-সংস্কৃতি, জাতি জনগোষ্ঠী ও ধর্মের মানুষের  ঐক্য সংহতিতে সমৃদ্ধ এই রাজ্যে দীর্ঘদিন ধরে উগ্র প্রাদেশিকতাবাদী শক্তি জনগণের  ঐক্য-সম্প্রীতি ধবংস করতে নানা চেষ্টা চালিয়ে গেলেও সাধারণ মানুষ বর্তমানে তাতে সাড়া দিচ্ছেন না৷ সরকারিভাবে অসমীয়া ভাষার প্রয়োগ ব্রহ্মপুত্রউপত্যকায়্ ও বাংলা ভাষায় বরাক উপত্যকায় হওয়ার ফলে বিভিন্ন ভাষিক-গোষ্ঠীর সাধারণ জনগণ নিজস্ব প্রয়োজনে ব্রহ্মপুত্র উপত্যকায় অসমীয়া ভাষা ও বরাক উপত্যকায় বাংলা ভাষা চর্র্চ করেন ও কথা বলেন৷ লাচিত সেনার বাংলা ভাষার ব্যানারে কালো কালি লেপে দেওয়ার পেছনে  অসমীয়া ভাষী সাধারণ মানুষের স্বার্থ জড়িত নয়৷ রাজ্যের প্রলয়ঙ্কারী বন্যায় যখন জাতি-ধর্ম-ভাষা নির্বিশেষে ৫৫ লক্ষের  বেশি  মানুষ মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন তখন বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংঘটন মানবিক সাহায্যে এগিয়ে এলেও উগ্র-প্রাদেশিকতাবাদী শক্তির মদতে পরিচালিত লাচিত সেনাকে জনগণ এসবে দেখতে পাননি৷ সি আর পি সি সি, অসম লাচিত সেনার মতো উগ্র প্রাদেশিকতাবাদী সংঘটনের বেআইনি কার্যকলাপ কড়া হাতে দমন করতে সরকারের নিকট নাগরিক অধিকার রক্ষা সমবায় সমিতি জোরালো দাবি উত্থাপন করে৷