বাঙালী মল্লবীর গোবর গোহের  বিশ্বজয়ের শতবর্ষ পূর্তি

সংবাদদাতা
ক্রীড়াপ্রতিনিধি
সময়

ধর্মের বাণী প্রচারে স্বামী বিবেকানন্দ, সাহিত্য সংস্কৃতির অঙ্গনে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সত্যজিৎ রায়, রাজনীতির মঞ্চে নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু, বিজ্ঞান সাধনায়  সত্যেন্দ্রনাথ বসু, জগদীশচন্দ্র বসু, প্রফুল্লচন্দ্র রায় ভারতকে গৌরবের আসনে বসিয়েছেন, তেমনি বিশ্বকুস্তির আখড়ায় ভারতকে গৌরবের আসনে প্রতিষ্ঠিত করেছেন বাঙালী মল্লবীর গোবর গোহ৷ প্রকৃত নাম যতীন্দ্রচরণ গোহ৷ তবে কালো ওজনদার চেহারার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে পিতা রামচরণ গোহ পুত্রের নাম রাখেন গোবর৷ তবে কেউ কেউ বলেন আখড়ার মাটির সঙ্গে মিশিয়ে নাম রাখা হয় গোবর৷ কারণ আখড়ার মাটি তৈরীতে গোবর অতি প্রয়োজনীয় বস্তু৷

শৈশবে মাত্র ন’বছর বয়সে পিতৃহারা হয়ে যান গোবর গোহ৷ কুস্তিগির পরিবারের ছেলে৷ কুস্তিতে বিশ্বজয়ের স্বপ্ণ পিতা রামচন্দ্রের ছিল৷ পিতা চলে গেলেও পরিবার আশা ছাড়েনি গোবরকে নিয়ে৷ গোবরের দায়িত্ব নিলেন স্বামী বিবেকানন্দের কুস্তির শিক্ষক গোবরের কাকা ক্ষেত্রচরণ গোহ৷ কিন্তু ১৯০৯ সালে অকস্মাৎ মারা যান গোবরের কাকা ক্ষেত্রচরণ৷ শৈশবে পিতা কৈশরে কাকাকে হারিয়েও হাল ছাড়েনি গোবর৷ কাকার মৃত্যুর এক বছর পরেই পেশাদার কুস্তির আঙ্গিনায় পা রাখেন গোবর৷ দেশ-বিদেশের বহু মল্লবীরকে পরাস্ত করেন গোবর৷ ভারতীয় কুস্তিকে নূতন পথের সন্ধান দিলেন গোবর৷

অবশেষে বিশ্বকুস্তি প্রতিযোগিতায় আমন্ত্রণ আসে গোবর গোহের কাছে৷ এই সময় তিনি বহু আন্তর্জাতিক মল্লবীরকে পরাস্ত করেন৷ আন্তর্জাতিক আঙ্গিনায় বাঙালী মল্লবীর গোবরের খ্যাতি ছড়িয়ে পড়েছে৷ তারপর এলো সেই শুভক্ষণ, ১৯২১ সালের ৩০শে আগষ্ট, সানফ্রানসিক্সোয় বিশ্বচ্যাম্পিয়ান স্যান্টেলকে হারিয়ে বিশ্বশ্রেষ্ঠ কুস্তিগিরের খেতাব নিজের দখলে নিলেন গোবর গোহ৷ ৩০ আগষ্ট ১৯২১ গোবর গোহের বিশ্বজয়ের শতবর্ষপূর্তি হলো৷ এই সময়ের মধ্যে বেশ কয়েকজন ভারতীয় কুস্তিগির বা অলিম্পিকের আসর থেকে বেশ কয়েকটি পদক এনেছেন৷ তবু গোবর গোহের ধারে কাছে আজও কেউ যেতে পারেনি৷