বাঙালীর নিজভূমিতেই বাঙালীর জন্যে তৈরী হচ্ছে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম ডিটেনশন ক্যাম্প

সংবাদদাতা
নিজস্ব সংবাদদাতা
সময়

বেআইনি অনুপ্রবেশকারীদের বন্দী করে রাখার  জন্যে অসমে গোয়াল পাড়ার মাটিয়ায় তৈরী হচ্ছে বিশ্বের বৃহত্তম ডিটেনশন ক্যাম্প, নির্র্মণ কাজ প্রায় শেষের দিকে৷ এই ক্যাম্পে মূলত বাঙালীরাই বন্দি থাকবে বাংলাদেশ থেকে আগত বাঙলাদেশী অনুপ্রবেশকারী পরিচয়ে৷

কিন্তু মজার কথা হলো অসমের অবিভক্ত গোয়ালপাড়া জেলা যা আজ পাঁচটি জেলায় বিভক্ত তার পুরোটাই দেশভাগের আগে বাঙলারই অংশ ছিল৷ ক্ষুদ্র অসমের আর্থিক  দুরাবস্থা দূর করতে পরাধীন ভারতে সেই সময়ের অবিভক্ত বাঙলার গোয়ালপাড়া জেলা, রংপুর জেলা অসমের সঙ্গে যুক্ত করা হয়৷ ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের পর বহু বাঙালী পরিবার তৎকালিন পূর্ব পাকিস্তান  (বাংলাদেশ) থেকে চলে এসে অসমের  বাঙলার  মাটি গোয়ালপাড়ায় আশ্রয় নেয়৷ তাদের অনেকের কাছেই বৈধ নথি নেই৷ এমনকি দেশভাগের আগে থেকেই যেসব বাঙালী গোয়ালপাড়ার স্থায়ী বাসিন্দা তাদেরও অনেকের পক্ষে বৈধ নথি দেখান সম্ভব নয়৷

বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম এই ডিটেনশন ক্যাম্পে তিন হাজার মানুষকে  রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে৷ ২৫ একর জমির উপর এই ডিটেনশন ক্যাম্প তৈরী করতে ৬৪ কোটি টাকা খরচ হবে৷ বাঙালীর নিজভূমিতে তৈরী এই ডিটেনশন ক্যাম্পে বাঙালীরাই বন্দি থাকতে  বাধ্য হবে৷ ২০১৪ সালে লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে এসে নরেন্দ্রনাথ মোদি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন বিজেপি ক্ষমতায় এলে অসমের ডিটেনশন ক্যাম্পগুলি ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হবে৷ তবে আর পাঁচটা প্রতিশ্রুতির মত এই প্রতিশ্রুতিও ছিল ভোটের কথা৷ ভোটও শেষ, কথাও শেষ৷ বরং  ভোটে জিতে প্রতিশ্রুতির বিপরীত  পথে হাঁটলেন৷ মোদি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর ২০১৮ সালে এই ডিটেনশন ক্যাম্প তৈরীর পরিকল্পনা নেওয়া হয়

নাগরিক অধিকার সুরক্ষা সমন্বয় সমিতির কো-চেয়ারম্যান সাধনপুরকায়স্থর মতে ফরেনার্স ট্রাইব্র্যুনালের বিচারে বিদেশী চিহ্ণিত অনেকেই ভারতীয় বাঙালী৷ সাধনবাবু বলেন--- গরীব মানুষ ভারতীয় হলেও নাগরিকত্ব প্রমাণে অনেক সময় ব্যর্থ হন৷ তাছাড়া অনেক সময় নানা কারণে আদালতের চিঠিও তারা ঠিকমত পান না৷ তখন ট্রাইব্যুনালের একতরফা রায় তাদের বিরুদ্ধে যায়৷ তাই বাঙলার মাটিতে বাঙালীকেই বিদেশী বানিয়ে বন্দি রাখার কারাগার তৈরী হচ্ছে৷