বাঙলায় বিপন্ন বাংলা

সংবাদদাতা
পত্রিকা প্রতিনিদধি
সময়

বাঙালীর প্রাণের ভাষা, তার আশা ভরসা ---আজ অবহেলায় অনাদরে ধূলায় লুটায়---

                   মধুর চেয়েও আরো মধুর আমার বাংলা ভাষা,

                   আমার প্রাণের ভাষা৷

                   শিরার স্রোতে ধমনীতে রক্তে মর্মে মেশা৷৷

                   ওষ্ঠে যখন এল হাসি, নাবল চোখে আলোর রাশি৷

                   ৰলেছিলুম কোলে বসি’ মা তুমি ক্লেশনাশা৷৷

                   অনাদরে অবহেলায় তোমারে মা কে আজ কাঁদায়৷

                   জীর্ণবাসে ধূলায় লুটায় যে মোর সকল আশা৷       ---প্রভাত সঙ্গীত

বাঙালীর মাতৃভূমিতেই বাংলায় কথা বলা অপরাধ৷ এমনটাই ঘটলো কলিকাতা মেট্রোরেলে৷ বাংলাভাষী এক তরুণীকে হিন্দি ভাষী এক তরুণী হুমকি দিচ্ছে আপনি বাংলা বলতে পারেন হিন্দি বলতে পারেন না--- আপনি বাংলাদেশী৷

প্রথমেই বলি--- ওই হিন্দিভাষী মেয়েটি নিজেই জানে না ওর মাতৃভাষা কি৷ কারণ ভারতবর্ষের কোন জনগোষ্ঠীর মাতৃভাষা হিন্দি নয়৷ কিন্তু বিশেষ করে উত্তর পশ্চিম ভারতের জনগোষ্ঠীগুলিকে তাদের মাতৃভাষা ভুলিয়ে দেওয়া হয়েছে হিন্দির পাঁচন গিলিয়ে! স্বাধীনতার পর থেকেই বাংলাভাষী ভারতীয়দেরও বাংলা ভুলিয়ে দেবার অনেক চক্রান্ত হয়েছে৷ সেই কাজে সকল না হলেও বাংলা ভাষা কৃষ্টি সংস্কৃতি অনেকটাই হিন্দি আগ্রাসনের শিকার৷ ওই অবাঙালী তরুণীটি হয়তো বিদ্বেষ বশবর্তী না হয়ে নিজের অজ্ঞতা বশতঃ বাংলা বিরোধী অপকর্মটি করেছে৷ কারণ যে মেয়ে তার নিজের মাতৃভাষাই জানে না, দেশের ভৌগোলিক অবস্থান ও বিভিন্ন ভারতীয় ভাষা-সংস্কৃতি বিষয়ে তার জ্ঞান না থাকাই স্বাভাবিক৷

কিন্তু ট্রেনের ওই কামরায় আরও অনেক বাংলাভাষী যাত্রী ছিল৷ তাদের নির্জীব, নীরব ভূমিকা সত্যিই লজ্জার বিষয়৷ স্বাধীনতার পর থেকেই বাংলা ও বাঙালীর প্রতি বঞ্চনা, অবহেলা অত্যাচার দিন দিন বাড়ছে৷ এখনতো এমন অবস্থা-কলিকাতা তো বটেই গোটা পশ্চিমবঙ্গেই বাঙালীর পায়ের মাটি সরে যাচ্ছে৷ বাঙালী আর কতদিন পড়ে পড়ে মার খাবে৷ লুঠ হয়ে যাচ্ছে তার ধন-সম্পদ ব্যবসা বাণিজ্য, হিন্দির নগ্ণ আগ্রাসনে বিপন্ন বাংলা ভাষা সাহিত্য সংস্কৃতি৷