আজ একদিকে যখন কোভিড–১৯এর কারণে সারা বিশ্বে লক্ষ লক্ষ মানুষের প্রাণ অকালে ঝরে যাচ্ছে, অপরদিকে দলাদলি, হানাহানি চলছে সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্পে৷ বিশ্লেষণাত্মক দৃষ্টিভঙ্গী–তে এক স্থান থেকে আর এক স্থানকে বিচ্ছিন্ন করার জন্যে এক শ্রেণীর মানুষ চক্রান্ত করে চলেছে, আনন্দনগরে তখন আনন্দমার্গ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ, যাদের ভাষা আলাদা, সংস্কৃতি আলাদা, একসূত্রে তাদের বেঁধেছে৷ প্রশ্ণ জাগা স্বাভাবিক, কী সেই সূত্র যা বিভিন্ন ভাষাভাষী, বিভিন্ন সংস্কৃতি–সম্পন্ন মানুষকে একসূত্রে বাঁধতে পেরেছে৷ উত্তর একটাই–সেই সূত্র হ’ল আধ্যাত্মিকতা৷
এই আধ্যাত্মিকতা কোন সংকীর্ণ মতবাদ নয়৷ আধ্যাত্মিকতা বলতে বৃহৎকে তথা অসীমকে পাওয়ার এষণা৷ অসীম অনন্ত এই বৃহৎ সত্তাই হ’ল ব্রহ্ম৷ আর এই ব্রহ্মকে পাবার এষণাই হচ্ছে ধর্ম৷ এটা অবাস্তব কল্পনা সঞ্জাত কোন কুসংস্কার নয়৷ ব্রহ্মকে পাবার এষণা মানবের সহজাত প্রবৃত্তি৷ বিশ্বের সব প্রান্তের মানুষের জন্যেই তা এক৷ তাই একে মানবধর্মও বলা হয়৷ আনন্দমার্গের এই আধ্যাত্মিকতা তথা মানবধর্মই বিভিন্ন দেশের, বিভিন্ন ভাষাভাষী মানুষদের একসূত্রে বাঁধতে পেরেছে৷ এই ধর্ম তথা আধ্যাত্মিকতার আকর্ষণেই সকলে এখানে ছুটে আসে বার বার৷ তাই ধর্মের বিরোধিতা যারা করবে তারা তাদের নিজেদের ধ্বংস ডেকে আনবে৷
নব্য–মানবতাবাদ, বিশ্বভ্রাতৃত্ব ও এক মানবধর্মের প্রতিষ্ঠা করাই আনন্দমার্গের লক্ষ্য৷ আনন্দমার্গের মতে, সব মানুষ একই পরমপুরুষের সন্তান৷ তাই মানুষ সবাই আপন, সব মানুষের ধর্ম এক৷ মানুষে–মানুষে তাই কোন ভেদাভেদ থাকতে পারে না৷ আনন্দমার্গের প্রবক্তা শ্রীপ্রভাতরঞ্জন সরকার তাই স্পষ্ট ভাষায় বলেছেন, ‘মানুষের সমাজ এক ও অবিভাজ্য’৷
উল্লেখ্য, মহাসম্মেলনে কীর্ত্তন, ভজন ও ধর্মীয় আলোচনার পাশাপাশি প্রভাত সঙ্গীত ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করা হয়েছে৷
আনন্দমার্গ প্রচারক সংঘের কেন্দ্রীয় ধর্মপ্রচার সচিব আচার্য বীতমোহানন্দ অবধূত জানান–এবারের মহা সম্মেলন শ্রীশ্রী আনন্দমূর্ত্তিজীর জন্মশতবর্ষ পূর্ত্তিতে বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে৷ আনন্দমার্গ প্রচারক সংঘের শিক্ষা ত্রাণ ও জনকল্যাণ বিভাগের পক্ষ থেকে ১লা জানুয়ারী একটি বর্ণাঢ়্য সাংস্কৃতিক শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়েছে৷ ১লা জানুয়ারী সকাল ৯টায় পুন্দাগ স্টেশন থেকে শোভাযাত্রা শুরু হয়ে ডি.এম.এস প্যাণ্ডেলে এসে শেষ হবে৷ এই শোভাযাত্রায় শোভা পাবে স্থানীয় বিভিন্ন লোকসংস্কৃতি৷