বিচ্ছিন্ন মানব সমাজকে একসূত্রে বাঁধতে চাই আধ্যাত্মিক নবজাগরণ---অর্থনীতির বিকেন্দ্রীকরণ

সংবাদদাতা
নিজস্ব সংবাদদাতা
সময়

প্রাউটিষ্ট ইয়ূনিবার্র্সলের কেন্দ্রীয় কমিটির সংঘটন সচিব আচার্য প্রসূনানন্দ অবধূত এক আলোচনায় বলেন--- বর্তমান পৃথিবীর সামাজিক অর্থনৈতিক পরিবেশে ক্ষুদ্র রাষ্ট্রগুলির অস্তিত্ব বিপন্ন৷ প্রাউটের চিন্তাধারায়---‘‘বর্তমান যুগ বৃহৎ প্রাণী ও ক্ষুদ্র রাষ্ট্রের যুগ নয়৷’’ এই পরিবেশে কুসংস্কারাচ্ছন্ন ধর্র্মন্ধ ও রাষ্ট্রের শাসককুলের সংকীর্ণ ভাবাবেগ মানব সমাজকে ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন করে বিভেদের জাল বিস্তার করে পুঁজিপতি শোষকদের শোষণের পথ করে দিচ্ছে৷ এই বিষাক্ত পরিবেশ থেকে সমাজকে রক্ষা করতে ও মানুষকে সামাজিক অর্থনৈতিক দাসত্ব থেকে মুক্তি দিয়ে প্রাউট সামাজিক-অর্থনৈতিক ও আধ্যাত্মিকক্ষেত্রে নূতন পথের সন্ধান দিয়েছে৷

আচার্য প্রসূনানন্দ বলেন বর্তমান পৃথিবীতে কেন্দ্রীত অর্থনৈতিক পরিকাঠাময় পুঁজিবাদী শোষণ সাধারণ মানুষকে অর্থনৈতিক দাসে পরিণত করেছে৷ দুমুঠো অন্নের যোগাড় করতেই মানুষের দিন চলে যায়৷ মানব জীবনের যে পরম লক্ষ্য পরমার্থের কথা ভাবার সময়ই তার হয় না৷ অপর দিকে তথাকথিত ধর্মের নামে অন্ধবিশ্বাস ও ভাবজড়তা সমাজের শ্বাসরুদ্ধ করে রেখেছে৷ ভাষা শিল্প সাহিত্য সংস্কৃতির দিক থেকেও জনগোষ্ঠীগুলোকে অবদমিত করে অসংস্কৃতির স্রোত বহিয়ে যুব সমাজকে বিপথগামী করা হচ্ছে৷

আচার্য প্রসূনানন্দ জানান সামাজিক অর্থনৈতিক দাসত্ব থেকে মানুষকে মুক্তি দিতে প্রাউটের পরিকল্পনায় পুঁজিবাদের স্বার্থরক্ষায় তৈরী কেন্দ্রীত অর্থনৈতিক পরিকাঠামোর আমূল পরিবর্তন করে বিকেন্দ্রিত পথে সামাজিক অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলতে হবে৷ এই সামাজিক অর্থনৈতিক অঞ্চলই স্থানীয় জনসাধারণের সার্বিক কল্যাণ করতে সক্ষম হবে৷ সামাজিক অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলির প্রাউটের  সাধারণ ভাবাদর্শের ভিত্তিতে গড়ে ওঠায় পৃথিবীর সকল মানুষকে এক আদর্শবোধে ঐক্যের বন্ধনে আবদ্ধ করবে৷ এইভাবে প্রাউটের বিকেন্দ্রীত সামাজিক অর্থনৈতিক পরিকল্পনায় পৃথিবীর সকল দেশের সকল মানুষের স্বার্থ রক্ষিত হবে৷  ধীরে ধীরে অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলি পরস্পরের সঙ্গে মিলে গিয়ে এক বিশ্বরাষ্ট্র গড়ে তুলবে৷

আচার্য প্রসূনানন্দ কথায় --- সামাজিক অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়াই প্রাউটিষ্টদের মূল লক্ষ্য নয়৷ মানুষের মূল লক্ষ্য হলো এই আপেক্ষিক জগতের সকল বন্ধন ছিন্ন করে  পরম আনন্দ প্রবাহে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করা৷ দেশ-কাল-পাত্রের বন্ধন থেকে মনকে মুক্ত করে পরমতত্ত্ব লাভের পথে মানুষকে  এগিয়ে চলতে হবে৷ তার জন্যে চাই আধ্যাত্মিক অনুশীলন তথা আধ্যাত্মিক সাধনা৷ প্রাউটের অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার লক্ষ্যই হচ্ছে পরমতত্ত্ব লাভের পথে চলা তথা আধ্যাত্মিক সাধনার উপযুক্ত বাতাবরণ--- উপযুক্ত সামাজিক অর্থনৈতিক পরিবেশ গড়ে তোলা৷ তাই প্রাউটিষ্টরা বিকেন্দ্রিত অর্থনৈতিক পরিকাঠামো গড়তে ও আধ্যাত্মিক নবজাগরণ ঘটাতে বিশ্বের সকল মানুষকে এক আদর্শের ভিত্তিতে ঐক্যবদ্ধ করতে সমাজে সর্বপ্রকার অবদমনের বিরুদ্ধে বিরামহীন সংগ্রাম করে যাবে৷