অনুর্ধ - ১৬ ভারতীয় ফুটবল দলের স্তম্ভ, বাংলার অনীশ মজুমদার৷ প্রবল আর্থিক সঙ্কটও অনীশের মা অণিমা মজুমদারকে দমাতে পারেন নি৷ এছাড়া সবথেকে বড় তাঁদের জীবনে দুর্র্ভেগের কারণ অনীশের বাবার কিডনির সমস্যার কারনে তিনি অর্থনৈতিকভাবে কোনপ্রকারেই সংসারে অর্থের যোগান দিতে পারেন না৷ একমাত্র ভরসা অনীশের মা অণিমা দেবী৷ তিনি বহুকষ্টের সম্মুখীন হয়ে তার দুই ছেলে অনীশ ও মনীষকে পালন করার দিক থেকে পিছনে ফিরে তাকান নি৷ প্রথম তিনি তার ছোট ছেলে অনীশকে ব্যাণ্ডেল বাণীচক্র ক্লাবে অশ্বিনী বরাটের কাছে৷ যাঁর কোচিংয়ে উত্থান ---সুরজিৎ সেনগুপ্ত, স্বরূপ দাস, তনুময় বসু প্রভৃতি একাধিক ফুটবল তারকার৷ বাবার অসুস্থতার কারণে অনীশ মাত্র দু-তিন মাস অনীশ মাঠে যেতে পেরেছিল ও প্রশিক্ষণও নিয়েছিল৷ একটু বড় হতেই হুগলী জেলার ক্রীড়া সংস্থার ফুটবল একাডেমিতে ভর্তি করেছিলাম৷
অনীশের জীবনটা এরপর সম্পূর্ণ বদলে যায়৷ অ্যাকাডেমির কোচ জাতীয় প্রাক্তন গোলরক্ষক তনুময় বসু বলেছিলেন , ‘‘মাত্র দশ বছর বয়সে মায়ের হাত ধরে আমাদের একাডেমিতে এসেছিল অনীশ৷ সকলের থেকে লম্বা হওয়ার কারণে ওকে স্টপারে খেলাতে শুরু করেছিলাম৷ আমাদের হয়ে জুনিয়র আই লিগে দুর্দান্ত খেলল৷ ’’ তনুময়কে বেঙ্গালুরু এফসি-র জুনিয়র দলের এক কোচ অনুরোধ করাতে অনীশকে বেঙ্গালুরু এফসিতে খেলার অনুমতি দেওয়া হয় এরপর জাতীয় দলের জন্য অনীশকে নির্বাচিত করেন সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের স্কাউট প্রাক্তন ফুটবলার সুভাষ চক্রবর্তী ও গৌতম দেবনাথ৷
অনুধর্ব-১৬ ভারতীয় দলের রক্ষণের প্রধান ভরসা অনীশ৷ অনূধর্ব-১৫ সাফ চ্যাম্পিয়ানশিপে ভারত জিতেছিল তার অধিনায়কত্ত্বেই৷ কিন্তু তার মা অণিমাদেবী তাতেই খুশি হননি, আগের ম্যাচে বাহরিনকে পাঁচ গোলে চূর্ণ করার পরেই বাড়িতে ফোন করেছিল অনীশ৷ কী বলেছিল ছেলে? অণিমা দেবী বললেন --- অনীশ ফোন করে বলল, মা আমরা পাঁচ গোলে জিতেছি৷ আমি বললাম জিতেছিস ঠিকই, কিন্তু তুই তো আর গোল করতে পারিস না৷ রক্ষণে খেলিস৷ তোর খেলা তো আমি কিছু বুঝতে পারি না৷ আমি তো জানি, সামনের দিকে যারা খেলে, তারাই শুধু খেলোয়াড়৷’’ এছাড়া আরও বলেন, দুই ভাই মিলে বাড়িতে খেলা প্র্যাকটিস করতে গিয়ে অনেক কিছুই ভেঙেছে বাড়ির জানলার কাঁচটা এখনো ভাঙা যদি আগামী ম্যাচে অনীশরা যেতে তাহলে সেই ভাঙা জিনিসপত্রের জন্য ক্ষমা করে দেবেন তিনি৷