ভোগ সর্বস্ব জীবনচর্যাই মানুষের নৈতিক স্খলনের মূল কারন

সংবাদদাতা
নিজস্ব সংবাদদাতা
সময়

গত ৬ই আগষ্ট-বীরভূম জেলার ইমাদপুরে  আনন্দমার্গ প্রচারক সংঘের  ডিট লেবেল সেমিনার উপলক্ষ্যে পুরন্দরপুর শহরে আয়োজিত এক পথ সভায় প্রধান বক্তা আচার্য প্রসূনানন্দ অবধূত বলেন, জীবনের দৃষ্টিভঙ্গি জড়াভিমুখী হয়ে যাওয়ার কারণেই বর্তমান সমাজে  এত সমস্যা,সভ্যতার এত সংকট৷ ভোগ সর্বস্ব জীবনচর্যাই মানুষের নৈতিকস্খলনের  মূল কারণ, তিনি সমাজে প্রতিনিয়ত ঘটে চলা হিংসা, পাশবিক অত্যাচার, ধর্ষন, খুন, শোষন, আর্থিক দুর্নীতি, প্রতারণা, পাপাচার ও পরকীয়া ইত্যাদি ঘটনাবলীর উল্লেখ করে বলেন বর্তমান সমাজ  ভোগসর্বস্ব জীবনচর্যার করালগ্রাসে এতটাই  গ্রস্ত হয়ে পড়েছে যে লোভ-লালসা কামনা-বাসনা ইত্যাদি ঐহিক সুখভোগের তাড়নায় মানুষ ন্যায়,নীতি সততা, মূল্যবোধ সব ভুলে বিবেকহীন হয়ে দুর্নীতি ও পাপাচারে লিপ্ত হচ্ছে৷ সমাজ পুঁজিপতিদের সৃষ্ট ভোগবাদ রূপ কালব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে গেছে৷ তিনি বলেন, সমাজ দেহের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঘুন ধরে গেছে৷ শিক্ষাক্ষেত্র, রাজনৈতিক জগৎ, প্রশাসনিক ক্ষেত্র, সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডল, প্রভৃতি সর্বক্ষেত্রেই নীতিহীন একদল ধান্দাবাজদের দুর্নীতির স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে৷

এই সর্বব্যাপী স্খলনের কারণ হিসেবে তিনি বলেন--- সমাজের উত্তরণের  দুটি জিনিসের  অভাব৷ প্রথমটি হচ্ছে---এক পূর্ণাঙ্গ জীবনাদর্শের অভাব৷ দুই --- সৎ, আদর্শ নীতিবাদী মানুষের অভাব৷ মহান দার্শনিক ও ধর্মগুরু শ্রীশ্রী আনন্দমূর্ত্তিজী ব্যষ্টি ও সমষ্টির এই অবক্ষয় থেকে উত্তরণের  জন্য দিয়েছেন এক সর্বাত্মক জীবনাদর্শ যার ভিত্তিভূমি, আধ্যাত্মিকতা৷ মানুষকে আদর্শ তথা পূর্ণাঙ্গ মানুষ হিসাবে প্রতিষ্টিত করতে তিনি দিয়েছেন আধ্যাত্মিক অনুশীলন৷

বর্ষীয়ান সন্ন্যাসী আচার্য কাশীশ্বরানন্দ অবধূত আনন্দমার্গের ধর্মতত্ত্ব ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেন যে মানুষ আজ ধর্মের প্রকৃত স্বরূপ ভুলে গিয়ে ধর্মমতের উপাচার নিয়েই ব্যস্ত আছে৷ ধর্ম হল মানুষের অবিনাভাবী স্বভাব৷  যার অনুপস্থিতিতে  মানুষ হল জড়ের মোহে পশুত্বের স্তরে নেবে যায়৷ তিনি বলেন অধ্যাত্মমুখী জীবনচর্যাই পারে জড়ভোগ কেন্দ্রিক জীবনচর্যায়ের পরিবর্ত্তে  এক আদর্শ মানব সমাজ গড়তে৷ পথ সভার শুরুতে উদ্বোধনী প্রভাত সঙ্গীত পরিবেশন করেন আনন্দমার্গ প্রচারক সংঘের সাংস্কৃতিক প্রকোষ্ঠ রেণেসাঁ আর্টিষ্ট্‌স এণ্ড রাইটার্স এ্যাসোসিয়েশন (রাওয়া)-এর শিল্পীবৃন্দ৷ সমস্ত অনুষ্ঠানটি ইমাদপুর মাষ্টার ইয়ূনিট-এর সেক্রেটারী আচার্য কর্মেশানন্দ ও শিউড়ী ডিট সেক্রেটারী আচার্য বিজয়েশানন্দ অবধূতের উদ্যোগে পরিচালিত হয়৷