দুর্নীতির অভিযোগে পশ্চিমবঙ্গের শিল্পমন্ত্রীর গ্রেপ্তার প্রসঙ্গে প্রবীন প্রাউটিষ্ট নেতা শ্রী প্রভাত খাঁ বলেন---ভারতবর্ষের দুর্নীতির পাহাড়ে এতো বালু কণা মাত্র৷ ক্ষমতার আবরণে পাহাড় প্রমাণ দুর্নীতি ঢাকা পড়ে আছে৷ সম্প্রতি মহারাষ্ট্রে সরকার গড়তে জনপ্রতিনিধিদের জনগণের চোখের আড়ালে বহুদূরে বিলাস বহুল হোটেলে রাখার খরচের পিছনে কি দুর্নীতি নেই! সিবিআই-এর বিশ্বকবির নোবেল খুঁজে না পাওয়াটাও কম বড় দুর্নীতি নয় কি! শ্রী খাঁ বলেন আসলে গোটা দেশটাই দুর্নীতি রাজের কবলে৷ অর্থ দিয়ে এখানে সরকার করায়ত্ব করা যাবে না বলে ইডি, সিবিআই এই রাজ্যে বেশী সক্রিয়৷ তাই এখানে দুর্নীতি সামনে আসছে৷ মনে রাখতে হবে এই সিবিআই কিন্তু রাফাল কেসের নথি হারিয়ে ফেলেছে৷ পি.এম কেয়ারের স্বচ্ছতা নিয়েও সন্দেহ আছে৷ করোনা কালে দেশের কোটি কোটি মানুষ যখন কর্মহীন হয়ে ধুঁকছে সেই সময় পুঁজিপতিরা শত শত কোটি টাকা মুনাফা লুটেছে৷ সেখানে কি দুর্নীতি নেই!
শ্রী খাঁ বলেন--- আসলে দুর্নীতি পুঁজিবাদী রাষ্ট্র ব্যবস্থার অঙ্গ৷ পুঁজিবাদী শোষন বজায় রাখতে হলে রাজনৈতিক নেতাদের দুর্নীতির জালে জড়িয়ে রাখতেই হবে৷ এটা পুঁজিপতিদের একটি কৌশল৷ ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রথম রাত থেকেই এই কৌশল প্রয়োগ করে আসছে পুঁজিপতিরা৷ কারণ ধূর্ত ক্ষমতালোভী রাজনৈতিক নেতারা সহজেই অর্থের বশ হয়ে যায়৷
শ্রী খাঁ ইতিহাসের কথা স্মরণ করিয়ে বলেন ভারতবর্ষে আর্থিক দুর্নীতিতে রাজনৈতিক নেতারা জড়িত স্বাধীনতার আগে থেকেই৷ স্বাধীনতার আগে ভারতবর্ষের বেশ কয়েকটা প্রদেশে কংগ্রেসমন্ত্রী সভা ছিল৷ সেই সময় জহরলালের বন্ধু ও ভারতের শুভাকাঙ্ক্ষী এডওয়ার্ড টমসন জহরলালকে লিখেছিলেন---‘‘কংগ্রেসী মন্ত্রীসভা মাসে মাত্র পাঁচশো টাকা বেতন নিচ্ছেন শুণে আমি খুবই আনন্দিত হয়েছিলুম৷ শুণে খারাপ লাগলো এই আত্মোৎসর্গের বেশীর ভাগই ভুয়ো, কেননা তারা বাকিটা ভাতা হিসেবে নিচ্ছেন, সেই ভাতা ছিল গাড়ী বাড়ী ইত্যাদি৷ সেই দুর্নীতি আজ পাহাড় প্রমাণ রূপ নিয়েছে৷
শ্রী খাঁ বলেন আজ দুর্নীতি ও শোষণ পরস্পরের পরিপূরক৷ তাই মানুষকে দুয়ের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে৷ এর জন্যে চাই নূতন নেতৃত্ব নূতন আদর্শ৷ আধ্যাত্মিক ও নব্যমানবতাবাদে আধারিত সেই দর্শন প্রাউট---প্রগতিশীল উপযোগ তত্ত্ব৷ প্রাউটের পথেই ঘটিত হবে দুর্নীতিমুক্ত স্বচ্ছ প্রশাসন ও শোষণমুক্ত নূতন সমাজ, যার পুরভাগে থাকবে আধ্যাত্মিক বলে বলিয়ান কঠোরনীতিবাদে প্রতিষ্ঠিত সদবিপ্র নেতৃত্ব৷ তাই আজ মানুষকে সচেতন করে তুলতে হবে৷ সামাজিক অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক বিষয়ে৷ সদ্বিপ্রের নেতৃত্বে শোষণমুক্ত সমাজ ঘটনে ঝাঁপিয়ে পড়তে মানুষের মধ্যে নবজাগরণ আনতে হবে৷ সেটাই হবে প্রাউটিষ্টদের প্রধান কাজ৷