দুর্নীতর অভিযোগে অভিযুক্ত এক ডজন নেতা-মন্ত্রী

সংবাদদাতা
নিজস্ব সংবাদদাতা
সময়

দুর্নীতির অভিযোগে একসঙ্গে কোন এক রাজ্যের শাসক দলের মন্ত্রী, বিধায়ক, মেয়র সহ ১২ জন শীর্ষস্থানীয় নেতা-নেত্রীর বিরুদ্ধে সিবিআই-এর পক্ষ থেকে এফ আই আর ভারতের রাজনীতিতে নজিরবিহীন৷ আর সেটাই হয়েছে এ রাজ্যে৷ গত ৬ই এপ্রিল রাত ৭-টার সময় সিবিআই এ রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের ৪ জন মন্ত্রী---যার মধ্যে একজন আবার মেয়রও, একজন ডেপুটি মেয়র তথা বিধায়ক, একজন প্রাক্তন মন্ত্রী ও ৬ জন সাংসদের বিরুদ্ধে এফ আই আর করল৷ তাঁদের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলাও করা হ’ল৷ 
নারদ সংবাদ সংস্থার কর্ণধার ম্যাথু স্যামুয়েল এ রাজ্যে ব্যবসা করার অছিলায় বিভিন্ন মন্ত্রী ও শাসক দলের প্রভাবশালী নেতা-নেত্রীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে৷ ম্যাথুর অভিযোগ, ওই নেতা-নেত্রীরা অর্থের বিনিময়ে তাঁকে সরকারী সুযোগ-সুবিধা পাইয়ে দিতে রাজী হন৷ সেই চুক্তি মত ম্যাথু ওইসব প্রভাবশালী নেতা-নেত্রীদের হাতে লক্ষ লক্ষ টাকা তুলে দেন৷ ম্যাথুর গোপন ক্যামেরায় এই অর্থ লেনদেনের ব্যাপারটাকে ভিডিও করে রাখা হয়৷ ২০১৪ সালে এই ঘটনাটি ঘটে৷ নানান কারণে ম্যাথু সেই ভিডিও তখন প্রকাশ করেনি৷ ২০১৬ সালের ১৪ই মার্চ ম্যাথু স্যামুয়েল ওই ভিডিও প্রকাশ করে সারা দেশে তোলপাড় সৃষ্টি করে৷ এ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের ঠিক আগে এই ভিডিও প্রকাশ পেলেও অবশ্য নির্বাচনের ওপর এর কোনও প্রভাব পড়েনি৷ শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসই পুনরায় বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে নির্বাচনে জিতে আসে৷ 
তা সত্ত্বেও বর্তমানে সিবিআই শাসক দলের ১২ জন প্রভাবশালী নেতা-নেত্রীর বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা দায়ের ও এফ আই  আর করায় এঁদের সিবিআই গ্রেপ্তার করবে কি না এখন অবশ্য বোঝা যাচ্ছে না৷ 
হাইকোর্টের নির্দেশেই সিবিআই তদন্ত করে এক মাসের মধ্যেই তাদের রিপোর্ট উচ্চ আদালতে তুলে দিল৷ শাসকদলের যে ১২ জনের বিরুদ্ধে এফ আই আর করা হ’ল তাঁরা হলেন---মুকুল রায়, সুব্রত মুখোপাধ্যায়, শুভেন্দু অধিকারী, মদন মিত্র, সৌগত রায়, শোভন চট্টোপাধ্যায়, কাকলি ঘোষ দস্তিদার, ফিরহাদ হাকিম, ইকবাল আহমেদ, প্রসুন বন্দ্যোপাধ্যায়, সুলতান আহমেদ ও অপরূপা পোদ্দার৷ আর একজন আই পি এস অফিসারের বিরুদ্ধেও এফ আই আর করা হয়েছে৷ তাঁর নাম হ’ল সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মির্জা৷ 
এখন সিবিআই এদের গ্রেপ্তার করে শেষ পর্যন্ত জেলে পাঠাবে কি না এই প্রশ্ণই এ রাজ্যের মন্ত্রী থেকে সাধারণ মানুষ সবার মনে৷ সবাই অধীর আগ্রহে তাকিয়ে আছে পরিস্থিতি কোন দিকে গড়ায়৷