ধর্মগুরুশ্রীশ্রীআনন্দ্ জন্মশতবার্ষিকীতে আন্তর্জাতিক নববর্ষ উপলক্ষ্যে আনন্দনগরে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান

সংবাদদাতা
নিজস্ব সংবাদদাতা
সময়

সভ্যতার আদিবিন্দু রাঢ়৷ তার ঢেউ খেলানো রাঙা মাটির নীচে রয়েছে লোহা, কয়লা, অভ্র, তামা অজস্র খনিজ সম্পদ, কাঁকুরে মাটির বুকে দাঁড়িয়ে আছে শাল, পিয়াল মহুল পলাশের বনজ সম্পদ৷ যার বুক দিয়ে বহে চলেছে অজয়, ময়ুরাক্ষী, দামোদর, কোয়েল কুমারী, কংসাবতী, শীলাবতী, রূপনারায়ণ--- জলজ সম্পদে ভরপুর রাঢ়, যার পলিবাহিত বিশ্বের উর্বরতম পূর্ব রাঢ়ের কৃষি জমি৷

এত যার খনিজ সম্পদ, বনজ সম্পদ, কৃষিজ সম্পদ, জলজ সম্পদ, আজ সেই রাঢ়ে শোষণের তীব্রভারে মানুষের পাঁজরা ভেঙে যাচ্ছে৷ প্রকৃতির অফুরন্ত সম্পদের ভাণ্ডার হয়েও রাঢ়ের মানুষ দু’বেলা পেট ভরে খেতে পায় না৷ রাঢ়কে এই শোচনীয় অবস্থা থেকে বাঁচাতেই ধর্মগুরু শ্রীশ্রী আনন্দমূর্ত্তিজী তাঁর কর্মস্থল হিসেবে বেছে নিলেন পশ্চিম রাঢ়ের এই রুক্ষ সুক্ষ্ম কাঁকরে মাটিকে৷ গড়ে তুললেন আনন্দনগর৷ শিক্ষার প্রসার, কৃষির বিস্তার, সর্বত্যাগী সন্ন্যাসী সন্ন্যাসিনী ও স্থানীয় মানুষদের নিরলস কর্ম প্রচেষ্টায় আনন্দনগরে আজ সবুজের সমাহার৷ শ্রীশ্রীআনন্দমূর্ত্তিজী স্বপ্ণ হচ্ছে স্থানীয় মানুষের অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা ও শিক্ষার নিশ্চিততা দেওয়া৷ তাঁর এই স্বপ্ণকে বাস্তবায়িত করতে আনন্দমার্গ বদ্ধ পরিকর৷

এ বছর  শ্রীশ্রী আনন্দমূর্ত্তিজীর জন্মশতবর্ষ উপলক্ষ্যে আনন্দমার্গ প্রচারক সঙ্ঘের শিক্ষা ত্রাণ ও জনকল্যাণ বিভাগ নববর্ষ ২০২২-এর ধর্ম মহাসম্মেলন উপলক্ষ্যে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে৷ আনন্দনগরের ৩৫টি গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়, জুনিয়র হাইস্কুল, কলেজ সহ সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রা শিক্ষক অভিভাবকগণ নববর্ষের এই শোভাযাত্রায় যোগ দেবেন৷ শোভাযাত্রাকে আকর্ষণীয় করতে, নান্দনিক রূপ দিতে থাকছে---ঝুমুর, টুসু, ভাদু, করম, ছৌ, ডং, ঘোড়া নাচ, সাঁওতালি ইত্যাদি রাঢ়ের লোকনৃত্য, ৪০টি গাড়ী, ১০০টি মটরবাইক, সুসজ্জিত ট্যাবলো ইত্যাদি৷ ১লা জানুয়ারী,২০২২ সকাল দশটায় পুন্দাগ বাজার থেকে শোভাযাত্রা শুরু হয়ে ডি.এম.সি ময়দানে এসে শেষ হবে,এরপর শুরু সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান৷

সভ্যতার আদিবিন্দু রাঢ় গ্রন্থে শ্রীপ্রভাতরঞ্জন সরকার লিখেছেন---

‘‘রাঢ় আজ অনাহারে জীর্ণ, দুর্দৈবে দীর্ণ, যুগোপযোগী চেতনার অভাবে প্রসুপ্ত৷ পৃথিবীর বিচারশীল মানুষেরা সবাই মিলে রাঢ়ের দুর্দশার কথা ভাবুন ও তাকে গড়ে তুলতে সাহায্য করুন৷’’

রাঢ়ের এই বার্র্ত বিশ্বের দরবারে পৌঁছে দিতে নববর্ষের ধর্মমহাসম্মেলনে এই মহতি প্রচেষ্টা৷ সমস্ত রাঢ় বাসী  ও শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষের কাছে আমাদের আবেদন সকলের সাহায্য সহযোগিতা ও অংশগ্রহণে এই মহতি প্রচেষ্টা সার্থক হোক.