গণতন্ত্রের মন্দিরে ব্যষ্টিতন্ত্রের আস্ফালন - অসার রাজনৈতিক গণতন্ত্রের বিষময় ফল

সংবাদদাতা
নিজস্ব সংবাদদাতা
সময়

সংসদ আক্রান্ত নিরাপত্তার ব্রজ্রআঁটুনিকে ফস্‌কা গেরোয় পরিণত করে৷ সংসদের ভিতরেই যদি সরকারের নিরাপত্তা না থাকে তবে দেশের সাধারণ মানুষের কি অবস্থা! বিরোধীপক্ষ সংসদে প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিবৃতি দাবী করেন৷ কিন্তু মন কি বাতের নেতা নীরব থাকেন সংসদে৷ যখনই সরকারের গাফিলতি সামনে আসে তখনই প্রধানমন্ত্রী মৌনি হয়ে যান৷ কিন্তু বিরোধীরা এবারে সংসদে সরব হন এর বিরুদ্ধে৷ শুধু এইটুকুতেই স্বৈরাচারীর স্বরূপ প্রকাশ হয়ে যায়৷ সংসদ অবমাননার অভিযোগ এনে ১৪১ জন সাংসদকে সাসপেন্ড৷

প্রধানমন্ত্রী সংসদকে গণতন্ত্রের মন্দির বলে থাকেন৷ কিন্তু গণতন্ত্রের মর্যাদা রক্ষার দায় শাসক ও বিরোধী উভয় পক্ষেরই আছে৷ বিরোধীদের দাবীতে যদি রাজনীতিই থাকে বা বিরোধীদের কন্ঠে সৌজন্যতার অভাব থাকে তবুও সংসদে প্রধানমন্ত্রীর বিবৃতি দেওয়াটাই গণতান্ত্রিক রীতি৷ তিনি তার বিবৃতির মধ্যেই বিরোধীদের প্রসঙ্গ তুলতে পারতেন৷ কিন্তু তিনি তা না করে ক্ষমতার আস্ফালন দেখিয়ে সংসদের দুই কক্ষ থেকে ১৪১ জন বিরোধী সাংসদকে বহিস্কার করেছেন৷ লোকসভার উভয় কক্ষের অধ্যক্ষই সিদ্ধান্ত নেন, কিন্তু অধ্যক্ষ প্রধানমন্ত্রীর দলের লোক৷ আর বিজেপি সরকারের প্রধানমন্ত্রীই যে শেষ কথা --- প্রধানমন্ত্রীর ইঙ্গিত পেয়েই অধ্যক্ষ এমন কাজ করেছে এটা রাজনৈতিক সচেতন প্রতিটি মানুষই বোঝেন৷

প্রবীন প্রাউটিষ্ট নেতা শ্রীপ্রভাত খাঁ বলেন--- ভারতীয় গণতন্ত্র কখনই দলতন্ত্রের উর্দ্বে উঠতে পারেনি৷ যে দলের প্রতিকেই জয়ী হোক, সংসদে তিনি দলমতের উর্দ্ধে উঠে জনগণের প্রতিনিধি হয়ে উঠতে পারেন না৷

আমাদের দেশের নেতারা কখনই দলের উর্দ্ধে উঠে গণতন্ত্রকে মর্যাদা দেননি৷ বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর আচরণে তো দলকে ছাপিয়ে ব্যষ্টিতন্ত্রের আস্ফালন৷ শ্রী খাঁ বলেন প্রাউট প্রবক্তার মতে গণতন্ত্রকে সার্থক করতে হলে মানুষের মধ্যে  নৈতিকতা, শিক্ষার প্রসার ও সামাজিক অর্থনৈতিক রাজনৈতিক সচেতনতা আনতে হবে৷ কিন্তু স্বাধীনতার ৭৭ বছর পরেও দেশের অধিকাংশ মানুষের মধ্যেই তিনের কোনটাই নেই৷ এই কারণেই গণতন্ত্রের বেদীতে ব্যষ্টিতন্ত্রের আস্ফালন৷ এটা রাজনৈতিক গণতন্ত্রের বিষময় ফল৷ নেতামন্ত্রীরা পুতুল মাত্র৷ পর্দার আড়াল থেকে নাচাচ্ছে পুঁজিপতিরা৷ এই গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় সমাজের সৎ যোগ্য মানুষ রাজনীতি থেকে দূরে থাকেন৷ রাজনৈতিক গণতন্ত্র আজ চরম ধোঁকাবাজিতে পরিণত হয়েছে, ব্যষ্টিতন্ত্রের স্বৈরাচারী রূপ পরিগ্রহ করেছে৷ অবিলম্বে এর বিনাশ চাই৷ অর্থনৈতিক গণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠা করে প্রতিটি মানুষের হাতে নূ্যনতম প্রয়োজন পূর্ত্তির ক্রয় ক্ষমতা তুলে দিতে হবে---তাই প্রাউটিষ্টদের স্লোগান---‘‘রাজনৈতিক গণতন্ত্রের ধাপ্পাবাজি নয় আমরা চাই অর্থনৈতিক গণতন্ত্র, শোষণমুক্ত  সমাজ৷’’