অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্র্ম দেশভাগের বলি বাঙালীদের নাগরিকত্বের ব্যাপারে যে ধরণের বক্তব্য রাখছেন ও তার দলের একশ্রেণীর নেতৃবৃন্দ যেভাবে উদ্বাস্তু আনন্দ প্রকাস করছেন, তাতে আমরা বিস্মিত৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন ২০১৪ সালের আগে যারা অসমে এসেছেন, তাদের বিরুদ্ধে মামলা ট্রাইবুন্যালে প্রেরণ না করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন৷ সাথে সাথে নাগবিকত্ত্বের জন্য নির্দিষ্ট পোর্টালে আবেদন করতে বলেছেন, কিন্তু আবেদন করতে গেলে যে বিধির কথা বলা আছে, অর্থাৎ বাংলাদেশে যে ছিলেন তার প্রমাণ দেওয়া৷ এই ব্যাপারে ছিন্নমূল লোকদের বিপন্নতা থেকে রক্ষা করার কোন প্রচেষ্টা নেই৷
এদিকে সরকারী ঘোষনা অনুযায়ী এক কোটি ৫৯ লক্ষ ঘোষিত বিদেশী৷ যাদের আধার কার্ড নেই৷ সন্তান সন্ততিরা পড়াশুনা করতে পারছে না৷ সরকারী সমস্ত রকম সুযোগ থেকে বঞ্চিত৷ নাগরিকপঞ্জীতে যে ৩ কোটি ১১ লক্ষ লোকেরা নাম অন্তর্ভুক্ত হয়েছে৷ তাদের ক্ষেত্রে নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করা অর্থহীন৷ নাগরিকত্ত্বের প্রমাণ কতবার দিতে হবে৷ যে ১৯ লক্ষের নাম এখনও নাগরিকপঞ্জীতে আসেনি ও এই সূত্রে ২৭ লক্ষ লোকের আধার কার্ড নেই৷ তাদের মধ্যে বেশীর ভাগই ভারতীয় নাগরিক৷ এই ব্যাপারে সরকারের কোন পদক্ষেপ আমরা দেখতে পাচ্ছি না৷ শুধু শুধু বয়ান বাজী করে এই সমস্যার সমাধান হবে না বলে, সি আর পিসি আসাম মনে করে৷ সরকারের যদি সদিচ্ছা থাকে তাহলে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের ৬(ক) ধারা মতে যে ১৯৭১ ও ১৯৬৬ ইংরেজীর আসে তাদের লোকদের নাগরিকত্ব দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে৷ সেইভাবে ২০১৯-এর সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন অনুযায়ী ২০১৪ সালের আগের ভোটার তালিকা বা অন্য যে কোন নথিভুক্ত নথিকে ভিত্তি ধরে নাগরিকত্ব হিসাবে ঘোষনা করা হউক৷ নতুবা আবেদন নিবেদনের ঘেরাটোপে রাজনীতি করা যাবে, কিন্তু ছিন্নমূল দেশভাগের বলি লোকদের হেনস্থা বাড়বে কোন লাভ হবে না৷
এদিকে আবার অসমের মুখ্যমন্ত্রী ঝাড়খণ্ড রাজ্যে গিয়ে অসমে অনুপ্রবেশ প্রশ্ণে যে মনগড়া পরিসংখ্যান দিয়েছেন৷ তাতে আমরা লজ্জিত৷ উনার এই বক্তব্য সারা দেশে বাংলা ভাষাভাষি মানুষের বিরুদ্ধে এক ষড়যন্ত্র বলে আমরা মনে করি৷ তাতে রাজ্যে রাজ্যে বাঙালী বিদ্বেষ ছড়িয়ে পড়বে৷ অসমে বাঙালী আগেও ছিল তাই আমরা সকল শুভুবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষকে এই সব ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সরব হতে আহ্বান জানাই