হরপা বাণে তছনছ কশ্মীর

সংবাদদাতা
পি.এন.এ.
সময়

ভারী বৃষ্টির জেরে হড়পা বান নেমেছে জম্মু-কাশ্মীরের রামবানে৷ রামবান জেলার ধর্মকুণ্ড গ্রামে হড়পা বানে মৃত্যু হয়েছে তিন জনের৷ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বহু ঘরবাড়ি৷ সারা গ্রামে এখনও শুধুই ভিটেমাটি ছাড়াদের হাহাকার৷ রামবানের বাসিন্দা ওম সিংহ সংবাদ সংস্থাকে বলেন, ‘‘আমি ওপারে থাকি, কিন্তু সেখানেও জলের স্রোত খুব তীব্র ছিল৷ আমরা সময়মতো এখানে পৌঁছোতে পারিনি৷ যখন এপারে এসে পৌঁছোলাম, তখন দেখলাম আমার দোকান-সহ গোটা বাজার ভেসে গিয়েছে৷’’ রামবানের আর এক দোকানদার রবি কুমার দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলছেন, তাঁর দু’টি দোকান ছিল৷ দু’টিই হড়পা বানে রাতারাতি ভেসে গিয়েছে৷ রবির কথায়, ‘‘বাজারে আমার দু’টি দোকান ছিল৷ আমরা ভোর ৪টে নাগাদ জানতে পারলাম যে গোটা বাজার ভেসে গিয়েছে৷ সঙ্গে সঙ্গে আমরা এখানে ছুটে আসি৷ এসে দেখি, কিছুই আর অবশিষ্ট নেই৷ এই দোকানগুলিই ছিল আমাদের জীবিকা নির্বাহের একমাত্র উৎস৷ এখন আমাদের কিচ্ছু রইল না৷’’ ভূমিধসে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ধর্মকুণ্ডেরই আর এক বাসিন্দা সুনীল কুমারের সদ্য কেনা গাড়িটি৷ সুনীল বলেন, ‘‘আমি জম্মু থেকে শ্রীনগরে যাচ্ছিলাম৷ পথে বৃষ্টি হচ্ছিল বলে রামবানে একটি হোটেল বুক করি৷ এর পর রাত প্রায় ৩টে নাগাদ ঘটনাটি ঘটে৷ বেরিয়ে এসে দেখি হোটেলের দু’টি তলা ধবংসস্তূপে পরিণত হয়েছে৷’’ হোটেলের উপরের তলায় প্রায় ১৫ জন ছিলেন৷ বাকিরাই তাঁদের সকলকে উদ্ধার করেন৷ তবে সুনীলের গাড়িটি সহ প্রায় ৮-১০টি গাড়ি ধবংসস্তূপের নীচে চাপা পড়ে যায়৷

গত দু’দিন ধরেই জম্মু-কাশ্মীরের বেশ কিছু অঞ্চলে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টি হচ্ছে৷ প্রাকৃতিক দুর‌্যোগের জেরে বহু এলাকায় স্বাভাবিক জনজীবন বিপর্যস্ত৷ বৃষ্টির পাশাপাশি কোথাও কোথাও ধসও নেমেছে৷ ভয়ঙ্কর ভাবে বেড়ে গিয়েছে চন্দ্রভাগা নদীর জলস্তর৷ ফলে নিচু এলাকাগুলি বানভাসি হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে৷ বিপজ্জনক এলাকাগুলি থেকে ইতিমধ্যেই বাসিন্দাদের অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করেছে স্থানীয় প্রশাসন৷ এর মাঝে রবিবার ভোরে রামবানে আচমকা হড়পা বানের সৃষ্টি হয়৷ জলের তোড়ে ভেসে যায় অনেক বাড়ি৷ বহু গ্রামবাসী আটকে পড়েন৷ প্রশাসন সূত্রে খবর, শতাধিক মানুষকে উদ্ধার করা হয়েছে৷ বাকিদের উদ্ধারের কাজ চলছে৷ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জিতেন্দ্র সিংহ জানিয়েছেন, এই দুর্যোগের জেরে জম্মু-কাশ্মীরে পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে উঠেছে৷ তবে তৎপরতার সঙ্গে কাজ করছে স্থানীয় প্রশাসন৷