জীবন দিয়ে বাঁচালেন হাজার মানুষের প্রাণ সিকিমের জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের কর্মী

সংবাদদাতা
পি.এন.এ.
সময়

গত মঙ্গলবার রাতে লোনাক লেকের জল বাঁধ ভেঙে উন্মত্ত গতিতে আশপাশের  সব ধবংস করে নীচে নামছিল৷ তিস্তার জলের প্রবল দাপটে নিমেষে ধবংস হয়ে যায় লাচেন, লাচুং, চুংথান, সিংথামের মতো এলাকা৷ গত কয়েক দিনের ভয়াবহতার পর থিতু হয়েছে সিকিম৷ তিস্তা আবার শান্ত৷ জোরকদমে উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে সেনা৷ তার মাঝে লোকমুখে ছড়িয়েছে এক বীরগাথা৷ যার নায়ক ৩৫ বছরের দাওয়া ত্রিশেং তোংডেন লেপচা৷ সিকিমের লোয়াং সামডংয়ের যে বাসিন্দার জন্য বেঁচে গেছে হাজার হাজার মানুষের জীবন৷

সিকিমের সিংতামের বালুটারে তিস্তা-৫ জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের চুক্তিভিত্তিক কর্মী ছিলেন দাওয়া৷ তাঁর উপস্থিত বুদ্ধিতে শুধু সিকিম বা কালিম্পং নয়, উত্তরবঙ্গের একটি বড় অংশও ক্ষতির হাত থেকে  পার পেয়েছে৷ নিজের প্রাণ দিয়ে শতাধিক গ্রামকে রক্ষা করে গিয়েছেন যে দাওয়া, তাঁর ভূয়সী প্রশংসায় সিকিমের মুখ্যমন্ত্রীও৷ গত মঙ্গলবার রাতে লোনাক লেকের জল বাঁধ ভেঙে উন্মত্ত গতিতে আশপাশের সব ধবংস করে নীচে নেমেছিল৷ তিস্তার জলের দাপটে নিমেষে ধবংস হয়ে যায় লাচেন, লাচুং, চুংথান, সিংথামের মতো এলাকা৷ প্রবল জলচ্ছাসের শব্দে কেঁপে ওঠে দাওয়া-র বুক ৷ বাঁধের উপর থেকে জলের স্রোত দেখেই বুঝে যান যে প্রলয় আসছে৷ পরিস্থিতি বুঝেও ভয় না পেয়ে  অসম সাহসিকতার সঙ্গে এক এক করে লক গেট খুলতে শুরু করেন তিনি৷ কিন্তু, ৪ নম্বর গেট খুলতে গিয়েই হাইভোল্টেজ তার ওই বিদ্যুৎ কর্মীর ওপর ছিঁড়ে পড়ে৷ সেখানেই মৃত্যু হয়ে যায় তার৷ আর এদিকে বৃহস্পতিবার সকালে কোন বাধা না পেয়ে তিস্তার জল নীচে নামতে শুরু করে৷ এরজন্যে রক্ষা পায় আশপাশের শতাধিক গ্রাম৷ এরপর সকলে জানতে পারে যে কীভাবে ‘দাওয়া’ নিজের জীবনের বলিদান দিয়ে হাজার হাজার মানুষের জীবন রক্ষা করেগেছেন৷ মৃতের ভাই রঞ্জন লেপচা বলেন--- ‘‘দাদার মৃত্যুতে পরিবারটা ভেসে গেল৷ কিন্তু, দাদা যেভাবে নিজের প্রাণ দিয়ে হাজার হাজার মানুষের প্রাণরক্ষা করেছে তাতে আমরা সত্যিই গর্বিত৷’’